—প্রতীকী চিত্র।
উত্তর ব্যারাকপুর পুরসভার প্রাক্তন তৃণমূল কাউন্সিলরকে গুলির ঘটনায় তদন্তে নেমে বেশ কিছু নতুন তথ্য পেল পুলিশ। তদন্তকারীদের ধারণা, দুষ্কৃতীদের লক্ষ্য হয়তো ছিলেন না ২ নম্বর ওয়ার্ডের বিদায়ী কাউন্সিলর চম্পা দাস। হয়তো তাঁর কোনও নিকটাত্মীয়কে গুলি করতে চেয়েছিল দুই দুষ্কৃতী। তাদের তিনি চিনতে পেরেছেন বলে পুলিশের কাছে দাবি করেছেন চম্পা। ঘটনার পরে ২৪ ঘণ্টা পার হয়ে গেলেও অবশ্য পুলিশ তাদের নাগাল পায়নি। বর্তমানে বাইপাস সংলগ্ন একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন প্রাক্তন কাউন্সিলর।
শনিবার রাতে ইছাপুরের মায়াপল্লিতে দলীয় কার্যালয় থেকে বেরিয়ে পাশেই নিজের বাড়িতে ফিরছিলেন চম্পা। তাঁর ছেলে গেট খুলছিলেন। সেই সময়ে দুষ্কৃতীরা পর পর দু’টি গুলি করে। প্রথমটি ফস্কালেও দ্বিতীয় গুলিটি লাগে চম্পার পায়ে। চিৎকার করে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তিনি। সেই সময়ে বাইকে করে পালিয়ে যায় দুষ্কৃতীরা। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, দুষ্কৃতীরা আগে থেকেই চম্পার বাড়ির সামনে অপেক্ষা করছিল। তদন্তকারীরা মনে করছেন, পার্টি অফিস থেকে বাড়ির দরজা পর্যন্ত হেঁটে আসার সময়ে দুষ্কৃতীরা চম্পাকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়নি। লক্ষ্য তিনি হলে অনেক আগেই দুষ্কৃতীরা তাঁকে গুলি করত। তাঁর ছেলে গেট খোলার সময়ে গুলি চলে। পুলিশ তদন্ত করে দেখছে, ঘটনার সময়ে দুষ্কৃতীদের লক্ষ্য চম্পার কোনও নিকটাত্মীয় ছিলেন কি না।
তৃণমূল ঘটনাটিকে প্রথম থেকেই রাজনৈতিক বলে দাবি করেছে। বিজেপির নোয়াপাড়ার বিধায়ক সুনীল সিংহ বলছেন, “তৃণমূল নেতৃত্বের সঙ্গে চম্পাদির সম্পর্ক ভাল ছিল না। দিন কয়েক আগেই পুরসভার সভাকক্ষের মধ্যে কয়েক জন কাউন্সিলরের সঙ্গে বিস্তর গোলমাল হয়েছিল চম্পাদির।” এই তথ্য সম্পূর্ণ ভুল বলে দাবি, পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য অভিজিৎ মজুমদারের। তিনি বলেন, “বিজেপির কয়েক জন নেতা চম্পাদিকে তাঁদের দলে যোগ দেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছিলেন। ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলে উত্তর ব্যারাকপুর একমাত্র পুরসভা, যেখানে গত এক বছরে বিজেপি কোনও ভাঙন ধরাতে পারেনি। ফলে তাঁরা এই সব মিথ্যা প্রচার করছেন।”
ব্যারাকপুর কমিশনারেটের ডিসি (সাউথ) অজয় ঠাকুর বলেন, “গুলিবিদ্ধ মহিলার সঙ্গে বেশি কথা বলা যায়নি। প্রাথমিক ভাবে তিনি দুই দুষ্কৃতীর নাম বলেছেন। তাদের খোঁজ চলছে। শীঘ্রই তাদের গ্রেফতার করা হবে। তাদের জেরা করলেই বিযয়টি পরিষ্কার হবে।” ঘটনাটি
রাজনৈতিক না-ও হতে পারে বলে জানিয়েছেন অজয়বাবু। কমিশনারেটের এক কর্তা অবশ্য বলছেন, ‘‘এলাকায় জমি-বাড়ি বিক্রি নিয়ে সিন্ডিকেটের গোলমাল চলছে। সেই গোলমাল সম্প্রতি বেড়েছে।’’ চম্পার কোনও নিকটাত্মীয় ওই গোলমালে জড়িয়ে দুষ্কৃতীদের নিশানায় ছিলেন কি না, তা-ও খতিয়ে দেখছে পুলিশ।