ব্যারাকপুরের প্রাক্তন সাংসদ অর্জুন সিংহের বাড়িতে হামলার অভিযোগ। —ফাইল চিত্র।
ব্যারাকপুরের প্রাক্তন সাংসদ অর্জুন সিংহের বাড়িতে হামলার অভিযোগে চার জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। শুক্রবার সকালে অর্জুনের বাড়ি সামনে ইট ও বোমা ছোড়ার অভিযোগ উঠেছিল। এমনকি গুলিও ছোড়া হয়েছিল বলে অভিযোগ। অর্জুনের দাবি, বোমার স্প্লিন্টারে আঘাত লেগেছে তাঁরও। শুক্রবারের সেই ঘটনার পর থেকেই অভিযুক্তদের খোঁজে একাধিক জায়গায় তল্লাশি শুরু করেছিল জগদ্দল থানার পুলিশ। শনিবার সকালে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই ঘটনায় চার জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁদের প্রাথমিক জেরার পরে শনিবার ব্যারাকপুর আদালতে পেশ করবে জগদ্দল থানার পুলিশ। ধৃতদের বিরুদ্ধে বোমাবাজি এবং গুলি চালানোর অভিযোগ রয়েছে। তবে এই দুষ্কৃতীদের নাম-পরিচয় এখনও জানা যায়নি। তাঁদের কোনও রাজনৈতিক যোগ রয়েছে কি না, সেটিও এখনও স্পষ্ট নয়।
অর্জুনের বাড়ির সামনে হামলার অভিযোগ ঘিরে শুক্রবার সকাল থেকে উত্তেজনা ছড়িয়েছিল এলাকায়। প্রাক্তন সাংসদের অভিযোগ ছিল তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। পুলিশের একাংশের বিরুদ্ধেও কার্যত নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলেছিলেন তিনি। তাঁর বক্তব্য ছিল, পুলিশের সামনেই প্রায় ২৫টি বোমা ছোড়া হয়েছে। এর পর গুলি চালাতে চালাতে এলাকা থেকে পালিয়ে যায় দুষ্কৃতীরা। প্রায় ১৫-২০জন দুষ্কৃতী ছিল বলে অভিযোগ অর্জুনের।
যদিও এই ঘটনার সঙ্গে শাসকদলের যোগ থাকার তত্ত্ব পুরোপুরি উ়ড়িয়ে দিয়েছেন জগদ্দলের তৃণমূল বিধায়ক সোমনাথ শ্যাম। শুক্রবার তিনি পাল্টা অভিযোগ করেছিলেন, অর্জুন নিজেই গুলি ছুড়েছেন কিংবা প্রাক্তন সাংসদের অনুগামীরাই পিছন থেকে বোমা ছুড়েছেন। তাঁর দাবি, অর্জুনের পায়ের তলা থেকে মাটি সরে গিয়েছে। সেই কারণেই এক প্রকার মরিয়া হয়ে এ সব করছেন।
এর আগেও বিভিন্ন সময়ে জগদ্দল-ভাটপাড়া এলাকায় বোমাবাজির অভিযোগ উঠেছে। দুষ্কৃতীদের তাণ্ডবের অভিযোগ উঠেছে। ভোটের মরশুমে বার বার তপ্ত হয়েছে ভাটপাড়া-জগদ্দল-সহ ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চল। অর্জুনের বাড়িতে হামলার অভিযোগও এই প্রথম নয়। ২০২১ সালেও অর্জুনের বাড়ি মজদুর ভবনে হামলা এবং বোমাবাজির অভিযোগ উঠেছিল। সেই ঘটনার তদন্তের দায়িত্ব পেয়েছিল এনআইএ।
ব্যারাকপুরের রাজনীতিতে অর্জুন এক বহুল চর্চিত চরিত্র। একদা কংগ্রেস নেতা অর্জুন তৃণমূল প্রতিষ্ঠার পরেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলে যোগ দিয়েছিলেন। ২০০১ থেকে টানা চারটি বিধানসভা ভোটে ভাটপাড়া থেকে তৃণমূলের টিকিটে জয়ী হন তিনি। কিন্তু ২০১৯ সালে লোকসভা ভোটে তৃণমূলের টিকিট না পেয়ে বিজেপিতে যোগ দেন। ব্যারাকপুরে দাঁড়িয়ে জয়ীও হন তিনি। কিন্তু তিন বছর দু’মাস পরে ২০২২ সালে মে মাসে আবার তিনি তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন। এ বারের লোকসভা ভোটে টিকিট না পেয়ে আবার অর্জুন বিজেপিতে ফিরে গিয়েছিলেন। বিজেপি তাঁকে ব্যারাকপুরেই প্রার্থী করলেও তৃণমূলের পার্থ ভৌমিকের কাছে হেরে যান তিনি।