বারুইপুরের শিশু খুনে গ্রেফতার প্রতিবেশী

শনিবার মামাবাড়ির পিছনে পেয়ারা বাগানের একটি গাছে পিন্টু মুখোপাধ্যায় (৪) নামে এক শিশুর ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, ওই শিশুর পাকস্থলিতে বিষ পাওয়া গিয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৬ জুন ২০১৭ ০২:৩৫
Share:

পিন্টু মুখোপাধ্যায়

বারুইপুরে শিশু খুনের ঘটনায় তাদের এক প্রতিবেশীকে গ্রেফতার করল পুলিশ। ধৃতের নাম শিশির ঘোষ।

Advertisement

শনিবার মামাবাড়ির পিছনে পেয়ারা বাগানের একটি গাছে পিন্টু মুখোপাধ্যায় (৪) নামে এক শিশুর ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, ওই শিশুর পাকস্থলিতে বিষ পাওয়া গিয়েছে। তার বুকের পাঁজরার একটি অংশও ভাঙা। বিষক্রিয়ার জেরেই ওই শিশুর মৃত্যু হয়েছে বলে মত চিকিৎসকদের। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনার দিন সন্ধ্যায় মৃত অবস্থায় পিন্টুকে বারুইপুর সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।

মৃত শিশুর পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, পিন্টুর পরিবার আদতে দক্ষিণ ২৪ পরগনার ঢোলা থানা এলাকার বাসিন্দা। সম্প্রতি পিন্টুর মামার বাড়ির কাছে বিশ্বনাথবাবু বাড়ি ভাড়া নিয়েছেন। শনিবার সকালে বাবার সঙ্গে ঢোলা গিয়েছিল পিন্টু। বিকেল তিনটে নাগাদ পিন্টু মামাবাড়িতে ফিরে আসে। চারটে নাগাদ ভাত খেয়ে খেলতে চলে যায় সে। পিন্টুর বাবা বিশ্বনাথ মুখোপাধ্যায়ের বয়ান অনুযায়ী, বিকেল পাঁচটা নাগাদ মামাবাড়ির পিছনের পেয়ারা গাছ থেকে পিন্টুর ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার হয়।

Advertisement

বিশ্বনাথবাবুর পুলিশকে জানিয়েছেন, গত শুক্রবার ধৃত শিশির নালিশ করেছিলেন, তাঁর মেয়েকে ইট ছুড়ে মেরেছে পিন্টু। বিশ্বনাথবাবুর অভিযোগ, পিন্টুকে উচিত শিক্ষা দেওয়া হবে বলেও শাসানি দিয়েছিলেন শিশির। ফলে শিশিরই পিন্টুকে বিষ খাইয়ে খুন করে গাছে ঝুলিয়ে দিয়েছেন বলে ধারণা তাঁর। বিশ্বনাথবাবুর এই অভিযোগের ভিত্তিতেই শিশিরকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানায় পুলিশ।

তবে তদন্তকারীদের কথায়, পিন্টুর দেহ প্রতিবেশী এক যুবক গাছ থেকে নামিয়েছেন বলে পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন বিশ্বনাথবাবু। বারুইপুর জেলার পুলিশ সুপার অরিজিৎ সিংহ বলেন, ‘‘পুরো ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। খুনের অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু করা হয়েছে।’’

পুলিশ সূত্রে খবর, এই খুনের তদন্তে নেমে কিছুটা ধন্দে পড়েছেন তদন্তকারীরা। একে দেহটি গাছে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া গেলেও মৃত্যুর কারণ শ্বাসরোধ নয়। বরং পেটে পাওয়া বিষকেই মৃত্যুর কারণ মনে হচ্ছে তাঁদের। তার উপরে ওই শিশুর পাঁজরা একাংশও ভাঙা। বাড়ি থেকে বেরনোর এক ঘণ্টার মধ্যে এত কিছু ঘটে যাওয়ায় এই খুন নিয়ে খানিকটা ধন্দ তৈরি হয়েছে।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গ্রেফতারের পরে শিশিরকে কয়েক দফা জেরা করা হয়েছে। ওই খুনের ঘটনা তিনি জড়িত নন বলে তদন্তকারীদের কাছে দাবি করছেন শিশির। ওই শিশুর বাড়ি থেকে বেরিয়ে কোথায় খেলতে গিয়েছিল, কাদের সঙ্গে খেলছিল এবং বাড়ির পিছনের পেয়ারা বাগান থেকে কারা তার ঝুলন্ত দেহ নামালেন— প্রতিটি বিষয়ে তদন্তের প্রয়োজন রয়েছে। তদন্তে নেমে পুলিশ বলছে, এই ঘটনায় একাধিক জট রয়েছে। সোমবার রাত পর্যন্ত যা খোলা সম্ভব হয়নি। সেই কারণে শিশিরবাবুর পাশাপাশি বিশ্বনাথবাবু-সহ পিন্টুর মামাবাড়ির আত্মীয়দেরও জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন বলে মনে করছে পুলিশ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement