বৈজ্ঞানিক তথ্যেই মামলা সাজাচ্ছে পুলিশ

বারাসতের অনুপম সিংহ খুনে অভিযুক্ত মনুয়া ও অজিতের সাজার জন্যও বিজ্ঞানসম্মত তথ্য প্রমাণের পথেই হাঁটছে উত্তর ২৪ পরগনা পুলিশ।

Advertisement

অরুণাক্ষ ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ১৩ জুন ২০১৭ ১৩:৪৭
Share:

ছিল না তেমন কোনও সূত্র কিংবা সাক্ষী। কেবলমাত্র নমুনা সংগ্রহ আর বিজ্ঞানসম্মত তথ্যের উপরে ভিত্তি করেই ফাঁসির সাজা হয়েছে বামনগাছির সৌরভ চৌধুরীর খুনিদের।

Advertisement

বারাসতের অনুপম সিংহ খুনে অভিযুক্ত মনুয়া ও অজিতের সাজার জন্যও বিজ্ঞানসম্মত তথ্য প্রমাণের পথেই হাঁটছে উত্তর ২৪ পরগনা পুলিশ। কারণ, অত্যন্ত পরিকল্পনামাফিক করা অনুপম খুনেও ছিল না তেমন কোনও সূত্র। নেই তেমন সাক্ষীও। তাই ফিঙ্গার প্রিন্ট থেকে শুরু করে বিভিন্ন ফরেন্সিক পরীক্ষার ফলের উপর ভিত্তি করেই পুলিশ ওই খুনের ঘটনায় চার্জশিট দিতে চলেছে। জেলা পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায়ের কথায়, ‘‘এই খুনের চার্জশিটের জন্য আমরা বিজ্ঞানসম্মত তথ্যের উপরেই নির্ভর করছি।’’

ওই খুনের তদন্তকারী অফিসারদের দাবি, অনুপমকে খুনের পরে তাঁর স্ত্রী মনুয়া মজুমদার ও মনুয়ার প্রেমিক অজিত দাস বিভিন্ন ভাবে বিভ্রান্ত করেছিল পুলিশকে। খুনের বেশ কয়েক দিন পরে ধরা পড়ে মনুয়া ও অজিত। অনুপমকে খুনের সময়ে যেহেতু ঘটনাস্থলে অজিত ছাড়া আর কেউই ছিল না, তাই খুনি ছাড়া কোনও প্রত্যক্ষদর্শী বা সাক্ষী নেই। প্রাথমিক ভাবে জেরায় খুনের কথা স্বীকার করলেও পরে আদালতে মত বদলানোর সুযোগও রয়েছে মনুয়া ও অজিতের। তাই বিজ্ঞানসম্মত তথ্যের ভিত্তিতে ঠিক করা হচ্ছে তদন্তের অভিমুখ।

Advertisement

যেমন হয়েছিল বামনগাছির কলেজ-ছাত্র সৌরভ চৌধুরী হত্যাকাণ্ডেও। ওই মামলাতেও প্রত্যক্ষ সাক্ষী ছিল না। ফলে একটি বা দু’টি নয়, মোট ৭৩টি নমুনা পাঠানো হয়েছিল ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য। ওই সব নমুনার মধ্যে সৌরভের রক্তের পাশাপাশি যে রেললাইনের পাশে তাকে ফেলে রাখা হয়েছিল, সেটির মাটি, পাথর, এমনকী গাছের ছালও ছিল। দোষীদের ফাঁসির রায় হওয়ার পরে আদালতে সরকারি কৌঁসুলিই জানিয়েছিলেন, মূলত ওই বিজ্ঞানসম্মত তথ্যের উপরে ভিত্তি করেই এই রায় হয়েছে।

এক পুলিশকর্তার কথায়, মামলা চলাকালীন সাক্ষীরা মাঝেমধ্যে বয়ান বদলে ফেলে। কিন্তু বিজ্ঞানসম্মত তথ্যের ক্ষেত্রে সেই সম্ভবনা থাকে না। ফলে মামলা অদলবদলেরও সম্ভবনাও থাকে না। সব দিক বিচার করেই তাই অনুপম খুনের তদন্তে এগোচ্ছে পুলিশ।

তদন্তকারী অফিসারেরা জানিয়েছেন, আজ, মঙ্গলবার বারাসত হাসপাতালে ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে রক্ত পরীক্ষা হবে অজিতের। এর পরে খুনির জামায় লেগে থাকা অনুপমের রক্ত মিলিয়ে দেখা হবে খুনে ব্যবহৃত অস্ত্রে লেগে থাকা রক্তের সঙ্গে। পাশাপাশি, রাজ্য ফরেন্সিক ল্যাবরেটরিতে অনুপমের রক্তের ডিএনএ পরীক্ষাও করা হচ্ছে। ডিএনএ পরীক্ষায় পাঠানো হবে অজিতের রক্তও।

ইতিমধ্যেই অনুপম, মনুয়া ও অজিতের মোবাইলের তথ্য অনেকটা তদন্তকে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছে। ঘটনাস্থলে যে গ্লাসে করে অজিত ও মনুয়া জল খেয়েছিল, সেখান থেকে এবং অস্ত্র থেকে মেলা আঙুলের ছাপও সংগ্রহ করেছেন ফিঙ্গার প্রিন্ট বিশেষজ্ঞেরা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement