রবিবার সকালে জয়নগরের মহিষমারি এলাকার ছবি। — নিজস্ব চিত্র।
ন’বছরের শিশুকে খুনের ঘটনায় শনিবার দিনভর উত্তপ্ত থেকেছে জয়নগর। রবিবার সকালেও থমথমে সেখানকার পরিস্থিতি। মহিষমারি এলাকায় সকাল থেকে ঘন ঘন পুলিশের গাড়ি টহল দিচ্ছে। এলাকায় রয়েছে পুলিশ পিকেট। পরিস্থিতি অনবরত নজরে রাখা হয়েছে। এই এলাকার পুলিশের ফাঁড়িতে উত্তেজিত জনতা আগুন ধরিয়ে দিয়েছিল। রবিবারই বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের জয়নগরে যাওয়ার কথা। তা নিয়ে নতুন করে গোলমালের আশঙ্কা করা হচ্ছে।
রবিবার সকাল থেকে মহিষমারা বাজার এলাকায় হাতেগোনা কিছু দোকানপাট খুলেছে। অধিকাংশ দোকান বন্ধ রাখা হয়েছে। দোকানি নতুন করে গোলমালের আশঙ্কা করছেন।
রবিবার সকালে মহিষমারি পুলিশ ফাঁড়ির অবস্থা। —নিজস্ব চিত্র।
ন’বছরের শিশুকে কোচিং সেন্টার থেকে ফেরার পথে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ পরিবারের। তারা জানিয়েছে, শুক্রবার বিকেলে ওই শিশু মহিষমারিতে পড়তে গিয়েছিল। ফেরার পথে বাজারের দোকানে বাবার সঙ্গে দেখাও করে সে। কিন্তু সেখান থেকে আর বাড়ি ফেরেনি। গভীর রাতে বাড়ি থেকে এক কিলোমিটার দূরে জলাশয় থেকে শিশুটির দেহ উদ্ধার করা হয়। রাতে গ্রেফতার করা হয় অভিযুক্তকেও। তার পরেই শনিবার সকাল থেকে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন এলাকার মানুষ। তাঁদের অভিযোগ, শিশুটি নিখোঁজ হওয়ার পরে পরিবার প্রথমে মহিষমারি পুলিশ ফাঁড়িতে গিয়েছিল। সেখান থেকে তাঁদের অন্য থানায় যেতে বলা হয়। অভিযোগকে প্রথম দিকে পুলিশ গুরুত্ব দেয়নি, দাবি পরিবারের। তাঁদের বক্তব্য ছিল, প্রথম থেকে তাঁদের অভিযোগে তৎপর হলে হয়তো শিশুটিকে বাঁচানো যেত।
শনিবার সকাল থেকে জয়নগর থানা এবং মহিষমারি পুলিশ ফাঁড়ির সামনে বিক্ষোভ দেখায় উত্তেজিত জনতা। ফাঁড়িতে ঢুকে ভাঙচুর করা হয়। জ্বালানো হয় আগুন। একাধিক গুরুত্বপূর্ণ নথি তাতে পুড়ে গিয়েছে বলে খবর। বারুইপুর পুলিশ জেলার পুলিশ সুপার পলাশচন্দ্র ঢালি জানান, অভিযুক্ত জেরার মুখে খুনের কথা স্বীকার করেছেন। কিন্তু ধর্ষণের কথা স্বীকার করেননি। তদন্তের মাধ্যমে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। পাশাপাশি শনিবার পুলিশ ফাঁড়িতে আগুন ধরানোর ঘটনাতে যাঁরা যুক্ত, চিহ্নিত করে তাঁদের বিরুদ্ধেও পদক্ষেপ করা হবে বলে জানিয়েছিলেন এসপি। রবিবার সকাল পর্যন্ত সেই ঘটনায় কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি।
পুলিশ সূত্রে খবর, রবিবারই নির্যাতিতা শিশুর দেহের ময়নাতদন্ত করা হবে। তা থেকে অনেক প্রশ্নের উত্তর মিলবে বলে আশা করছেন তদন্তকারীরা। অভিযুক্তকে আপাতত সাত দিনের পুলিশি হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে আদালত। শনিবার তাঁকে আদালতে হাজির করানো হলেও তাঁর পক্ষে কোনও আইনজীবী লড়তে চাননি।