জামালউদ্দিন সর্দার। — নিজস্ব চিত্র।
সোনারপুরকাণ্ডে ধৃত জামালউদ্দিন সর্দারকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হবে, নাকি পাঠানো হবে জেল হেফাজতে, তা নিয়ে আদালতের মধ্যেই ‘সংঘাত’ দেখা গেল সরকারি আইজীবী এবং পুলিশের মধ্যে। তা নিয়ে নাকি তদন্তকারী অফিসারকে ভর্ৎসনাও করেন বিচারক। শনিবার বারুইপুর আদালত চত্বরে দাঁড়িয়ে এমন দাবিই করলেন জামালের আইনজীবী সুব্রত সর্দার।
শুক্রবার সন্ধ্যায় বাসন্তী হাইওয়ে ধরে সোনারপুর যাওয়ার রাস্তা থেকে গ্রেফতার করা হয় জামালকে। মুখে মাস্ক পরে পুলিশের চোখে ধুলো দিতে চেয়েছিলেন। ফোন এবং সিম পাল্টে ফেলেছিলেন। কিন্তু তাতেও পুলিশের হাত থেকে রক্ষা পাননি। গ্রেফতার হওয়ার পর জামালের রাত কাটে থানার লকআপে। শনিবার দুপুরে তাঁকে বারুইপুর আদালতে হাজির করানো হয়। সেখানেই তাঁর হেফাজত নিয়ে পুলিশ এবং সরকারি আইনজীবীর বক্তব্যে অসঙ্গতি দেখা যায়।
জামালের আইনজীবীর বক্তব্য, শুনানির সময় সরকারি আইনজীবী সামিউল হক তদন্তের জন্য জামালকে ১৪ দিন পুলিশি হেফাজতে পাঠানোর দাবি করেন। কিন্তু এই মামলার তদন্তকারী অফিসার জেল হেফাজতের আবেদন করেন। কেন একই মামলায় দু’পক্ষের আবেদন ভিন্ন হবে? প্রশ্ন তোলেন সুব্রত। তিনি আরও জানান, এই কারণেই তদন্তকারী অফিসারকে ভর্ৎসনাও করেন বিচারক।
শনিবার জামালের পক্ষ থেকে জামিনের আবেদন করেন তাঁর আইজীবী। তিনি জানান, জামালের বিরুদ্ধে যে ধারায় অভিযোগ করা হয়েছে, তার বেশির ভাগই জামিনযোগ্য। জামিন অযোগ্য যে ধারা রয়েছে, সেগুলো নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি। তাঁর দাবি, খুনের চেষ্টার অভিযোগ করা হয়েছে, কিন্তু আক্রান্তের মেডিক্যাল রিপোর্টে তেমন আঘাতের চিহ্ন মেলেনি। বাড়ির লোকজনের সামনে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ করেছিলেন আক্রান্ত। খুনের চেষ্টা করলে বাড়ির লোকজনের সামনে করা হত কি, সেই প্রশ্ন তোলেন সুব্রত।
জামালের বিরুদ্ধে শিকল দিয়ে বেঁধে রেখে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। সেই শিকল উদ্ধার করেছে পুলিশ। উদ্ধার হয়েছে সিসিটিভি ফুটেজও। শিকল, সিসি ক্যামেরা উদ্ধারের পরেও অভিযুক্তকে পুলিশি হেফাজতে নেওয়ার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন জামালের আইনজীবী। যদিও দু’পক্ষের সওয়াল-জবাব শেষে বিচারক জামালকে ১০ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।