সামিল পড়ুয়ারাও। নিজস্ব চিত্র
প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসক নেই। চিকিৎসকের দাবিতে দাবিতে সোমবার হিঙ্গলগঞ্জে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখালেন এলাকাবাসী। ঘণ্টা দেড়েক পরে পুলিশ এসে প্রতিশ্রুতি দিলে অবরোধ ওঠে।
বেলা ১১টা থেকে কালীবাড়ি মোড়ে প্ল্যাকার্ড, পোস্টার, ফেস্টুন হাতে রাস্তা অবরোধ শুরু হয়। নেবুতলা থেকে পারহাসনাবাদের গাড়ি বন্ধ হয়ে যায়। একই দাবিতে দোকানিরাও এ দিন ব্যবসা বন্ধ রেখে রাস্তায় নামেন। শিক্ষক-পড়য়ারাও সামিল হন। হিঙ্গলগঞ্জের বিধায়ক দেবেশ মণ্ডল বলেন, ‘‘হাসপাতালে চিকিৎসকের প্রয়োজনীয়তার কথা মানছি। কিন্তু এ ভাবে মানুষের জীবনযাত্রা স্তব্ধ করে দেওয়া ঠিক নয়। হিঙ্গলগঞ্জ প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পুরো সময়ের জন্য কবে থেকে চিকিৎসক থাকবেন, তা আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে জানানো হবে।’’
সুন্দরবনের প্রত্যন্ত এলাকার অসুস্থ মানুষদের একমাত্র ভরসা হিঙ্গলগঞ্জ প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি। ১৯১৪ সালে তৈরি এই হাসপাতালে রমেন্দ্রনগর, পথের দাবি, মালো পাড়া, ঘোষ পাড়া-সহ বহু জায়গা থেকে মানুষ আসেন। এলাকার মানুষের দীর্ঘ লড়াইয়ের পরে ২০১৪ সালে ১০ শয্যার পাশাপাশি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত অপারেশন থিয়েটারের উদ্বোধন হয়। এক সময়ে চার জন চিকিৎসক এবং বেশ কয়েকজন স্বাস্থ্যকর্মী ছিলেন এখানে। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে স্থায়ী চিকিৎসক নেই। ফলে সমস্যায় পড়েছেন রোগীরা। হাসপাতাল চত্বরে দুষ্কৃতীদের উপদ্রব বেড়েছে বলেও অভিযোগ।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানালেন, মাঝে একজন চিকিৎসক দেওয়া হয়েছিল ঠিকই, তিনি এসে দুষ্কৃতীদের উপদ্রবের কথা পুলিশকে বলে বন্ধও করিয়েছিলেন। কিন্তু মাস আটেক হল তাঁর বদলি হয়ে গিয়েছে। তারপরে আংশিক সময়ের জন্য একজন চিকিৎসক দেওয়া হয়েছে।
রক্ষনাবেক্ষণের অভাবে ফাটল ধরেছে ভবনে। চিকিৎসক নেই বলে স্বাস্থ্যকেন্দ্র চত্বরে ফের দুষ্কৃতীদের মদ-গাঁজার আড্ডা বসছে বলে অভিযোগ। অনেকে আবার গরু-ছাগলও বেঁধে রাখতে শুরু করেছেন স্বাস্থ্যকেন্দ্র চত্বরেই। সে সবেরই প্রতিবাদে এ দিন সরব হিঙ্গলগঞ্জ নাগরিক সমিতির সদস্যেরাও।
সমিতির সম্পাদক সুশান্ত ঘোষ বলেন, ‘‘হাসপাতালে সব সময়ের জন্য চিকিৎসক জরুরি। একাধিকবার বলেও চিকিৎসক মিলছে না। দূরের হাসপাতালে যেতে গিয়েই অনেকের মৃত্যু হচ্ছে।’’