বার বার ভাঙন, একাধিকবার ভিটেমাটি ছেড়েছে অনেক পরিবার
sandeshkhali

Sandeshkhali: জোরে বৃষ্টিতেই বাড়ে ফাটল, জোড়াতালির বাঁধ নিয়ে আশঙ্কা

বর্ষাকাল আসন্ন। তাই ফের বাঁধ ভাঙার আশঙ্কায় দিন কাটাচ্ছেন সন্দেশখালি ১ ব্লকের দ্বীপাঞ্চল বাউনিয়া গ্রামের বাসিন্দারা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বসিরহাট শেষ আপডেট: ১৫ জুন ২০২২ ০৬:৩৯
Share:

দুর্বল: বাঁধ থেকে খসে পড়ছে ইট। ছবি: নির্মল বসু

ইয়াসের পর ভেঙে গিয়েছিল প্রায় দুই কিলোমিটার বাঁধ। নোনা জলে ডুবেছিল বিস্তীর্ণ এলাকা। এরপর বছর ঘুরে গেলেও পাকা বাঁধ তৈরি হয়নি। ইট, মাটি, পলিথিন শিটের তাপ্পি অবশ্য পড়েছে বেশ কয়েকবার। কিন্তু জোরে বৃষ্টি হলেই ফাটল দেখা দেয় বাঁধে। বর্ষাকাল আসন্ন। তাই ফের বাঁধ ভাঙার আশঙ্কায় দিন কাটাচ্ছেন সন্দেশখালি ১ ব্লকের দ্বীপাঞ্চল বাউনিয়া গ্রামের বাসিন্দারা। অভিযোগ, বিষয়টি প্রশাসনকে বার বার জানানো হলেও কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি।

Advertisement

স্থানীয় সূত্রে খবর, বসিরহাট মহকুমার সন্দেশখালি ১ ব্লকের বহু জায়গাতেই নদী বাঁধ দুর্বল। এই ব্লকের ন্যাজাট ১ পঞ্চায়েতের মধ্যে পড়ছে বিদ্যাধরী নদী দিয়ে ঘেরা দ্বীপাঞ্চল বাউনিয়া। এই এলাকায় হাইস্কুল, প্রাথমিক স্কুল, পঞ্চায়েত ভবন রয়েছে। ইয়াসের সময়ে প্রায় দু’কিলোমিটার বাঁধ ভেঙে ভেসেছিলেন গ্রামেরমানুষ। পরবর্তী সময়ে প্রশাসনের তরফে বাঁধ মেরামত করা হলেওইটের বাঁধ তৈরি করা হয়। যদিও গ্রামবাসীর দাবি ছিল ক্রংক্রিটের বাঁধ। অভিযোগ, পাকাপোক্ত বাঁধ তৈরি না হওয়ায় ভারী বর্ষা হলেই ফাটল দেখা দিচ্ছে বাঁধে। আরও অভিযোগ, ইয়াসের আগেও বহু বার বাঁধে ফাটল দেখা দিয়েছে। বাঁধ ভেঙে জল ঢুকেছে গ্রামে। প্রতি বছর ভাঙনের ফলে পিছিয়ে আনতে হয়েছে বাঁধ। এর ফলে, ইতিমধ্যেই গ্রামের মানুষের ১০০-১৫০ বিঘার মতো জমি নদীর জলে চলে গিয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দা পরিমল মিত্র বলেন, ‘‘নদীতে জল বাড়লে বা ঝোড়ো হাওয়া বইলেই আতঙ্কে ভুগি। নোনাজলে ভেসে যাওয়ার ভয়ে দু’চোখের পাতা এক করতে পারি না। পাকা বাঁধ তৈরি না হলে এই সমস্যা মিটবে না।’’

Advertisement

ওই গ্রামে গিয়ে দেখা গেল বিদ্যাধরী নদীর ধাক্কায় ইট ভেঙে বাঁধে ফাটল ধরেছে। কোখাও কোথাও সে ফাটল রীতিমতো চওড়া। তা দেখিয়ে স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘ক্রমশ বাঁধের ফাটল বাড়ছে। ভাঙন আটকাতে জায়গায় জায়গায় পলিথিনের শিট দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এ ভাবে কী জলোচ্ছ্বাস রোখা সম্ভব?’’

ওই গ্রামের বাসিন্দা তারক মণ্ডল, বিজলি মিত্র, স্বপন দে, কল্পনা দাসেরা জানান, একাধিকবার ভাঙনের ফলে বাঁধ পিছিয়ে আসছে। এর ফলে, ইতিমধ্যে তাঁদের ১০-১২বার ভিটেমাটি ছেড়ে নতুন করে ঘর বাঁধতে হয়েছে। ওঁদের একজন বলেন, ‘‘উপার্জন তেমন নেই। কোনওরকমে সংসার চলে। এরপর ঘর ভাঙলে আর গড়ার সামর্থ্য নেই।’’

এই বিষয়ে সন্দেশখালির বিধায়ক সুকুমার মাহাতো বলেন, ‘‘বাঁধে ভাঙন দেখলেই তা মেরামত করা হচ্ছে। বাউনিয়ায় বাঁধ মেরামতির জন্য বিডিওকে বলা হয়েছে।’’

সন্দেশখালি ১ ব্লকের বিডিও সুপ্রতিম আচার্যের দাবি, সুন্দরবন এলাকায় দ্বীপ ভাঙাগড়ার কাজ চলছে। কোথাও পাড় ভাঙছে, কোথাও পলি জমছে। বাউনিয়া সক্রিয় দ্বীপ অঞ্চল হওয়ায় এখানে ভাঙাগড়া বেশি। তিনি বলেন, ‘‘ইয়াসের যে সব বাঁধের ক্ষতি হয়েছিল তা পঞ্চায়েত ও সেচ দফতরের সহযোগিতায় সংস্কার করা হয়েছে। কিছু কিছু জায়গায় এখনও বাঁধ একটু দুর্বল আছে। সেগুলি দ্রুত সংস্কারের জন্য সেচ দফতর ও পঞ্চায়েতকে বলা হয়েছে।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তেফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement