বেহাল: ভেঙে পড়েছে সাঁকো। ছবি: প্রসেনজিৎ সাহা
নদী পারাপারের বাঁশের সাঁকো ভেঙে সমস্যায় পড়েছেন দু’পারের বাসিন্দারা। কুলতলির পিয়ালি নদীর উপরের ওই সাঁকো দিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই পারাপার করেন স্থানীয় মানুষ। সাঁকোর একদিকে মেরিগঞ্জ ১ পঞ্চায়েত, অন্যদিকে জয়নগরের রাজাপুর করাবেগ পঞ্চায়েত। প্রতিদিন দু’পারের বহু মানুষ এই সাঁকো দিয়ে যাতায়াত করতেন। কিন্তু মাস চারেক হল বাঁশের সাঁকোটি ভেঙে গিয়েছে। কুলতলির মেরিগঞ্জ, ক্যানিংয়ে হেড়োভাঙা এলাকায় উৎপাদিত আনাজ এই সাঁকো পেরিয়ে মহিষমারি হাটে বিক্রি করতে যেতেন স্থানীয় চাষিরা। জয়নগরের দিক থেকেও বহু মানুষ সাঁকো পেরিয়ে কুলতলি, ক্যানিংয়ে আসতেন নানা দরকারে। সাঁকো ভেঙে যাওয়ার তাঁরা সমস্যায় পড়েছেন। এখন দড়ি টানা ছোট একটা নৌকায় কোনওমতে দু’চারজন করে মানুষ পারাপার করছেন। দ্রুত এই সাঁকো সারানোর দাবি তুলছেন তাঁরা।
পিয়ালি নদীতে চড়া পড়ে দীর্ঘদিন হল খালের চেহারা নিয়েছে। এই খাল পারাপারের জন্য বাঁশের সাঁকো তৈরি করা হয়েছিল। সাঁকো পারাপার নিয়ন্ত্রণের জন্য একটি কমিটিও তৈরি হয়। পারাপারের জন্য স্থানীয়দের কাছ থেকে ভাড়াও নেওয়া হত। এলাকাবাসীর অভিযোগ, সাঁকো পারাপারের জন্য প্রাপ্ত টাকার ভাগ নিয়ে দু’পারের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে বিবাদ রয়েছে। তার জেরেই সাঁকো সারানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে না। সমাধানের জন্য স্থানীয় পুলিশ, প্রশাসন ওই কমিটিকে নিয়ে বৈঠকও করেছেন, কিন্তু সমস্যা মেটেনি।
স্থানীয় বাসিন্দা মুজিবর মোল্লা, রিজিয়া খানরা জানান, সাঁকো ভেঙে যাওয়ায় খুবই অসুবিধা হচ্ছে। বাঁশের তৈরি হলেও এর উপর দিয়ে মোটর সাইকেল, ভ্যান সবই যাতায়াত করতে পারত। কিন্তু এখন ছোট ডিঙি নৌকায় সেসব সম্ভব নয়। ওপারে যেতে হলে প্রায় দু’কিলোমিটার ঘুরে বালির চর ব্রিজ দিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে।
সাঁকো বন্ধ থাকায় সমস্যায় পড়েছেন মহিষমারি হাটের ব্যবসায়ীরাও। তাঁদের দাবি, সাঁকো বন্ধ থাকায় প্রভাব পড়ছে ব্যবসায়। একদিকে যেমন চাষিরা তাঁদের উৎপাদিত ফসল নিয়ে হাটে কম আসছেন, তেমনি সাধারণ মানুষও যাতায়াতের অসুবিধের জন্য হাটে আসতে পারছেন না। হাট কমিটির সম্পাদক আইজুল লস্কর বলেন, “সাঁকো বন্ধ থাকায় হাটের বিক্রি বাটা আগের তুলনায় অনেকটাই কমে গিয়েছে। আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে ব্যবসায়ীদের।” মেরিগঞ্জ ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান জাকির শেখ বলেন, “কেন এই সাঁকো সারানো হচ্ছে না তা জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখব।”