খাস কলকাতার নানা প্রান্তে বোতলবন্দি জলের লাইসেন্সহীন ব্যবসা চলছে। আর মহানগরেরই উপান্তে বানতলা, মহিষবাথান, ভাঙড়ের মতো এলাকার প্রায় ১৪ হাজার মানুষের কাছে পানীয় জলের উৎস ভেড়ি! মঙ্গলবার, বিশ্ব জল দিবসে বণিকসভা বেঙ্গল ন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের এক অনুষ্ঠানে এই তথ্য তুলে ধরে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন জলবিজ্ঞানীরা। রাজ্য সরকার মাঝ্মধ্যেই দাবি করে আসছে, প্রত্যন্ত গ্রামেও পরিস্রুত পানীয় জল পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু খাস কলকাতার কাছে বানতলা, ভাঙড়ের যে-তথ্য জলবিজ্ঞানীরা দিয়েছেন, তাতে সরকারের সেই দাবির সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এ বছর রাষ্ট্রপুঞ্জের বিশ্ব জল দিবসের বিষয় ‘ভাল জল, ভাল কাজ’। রাজ্যের আর্সেনিক টাস্ক ফোর্সের চেয়ারম্যান কুমারজ্যোতি নাথ বলেন, শুধু জল দিবস পালনের জন্য ‘জল বাঁচাও’ স্লোগান নয়। কী ভাবে মানুষকে জল বাঁচানোর প্রক্রিয়ায় যুক্ত করা হচ্ছে, এ বার সেটিই মুখ্য বিষয়। এতে রাজনৈতিক এবং বাণিজ্যিক সংস্থাগুলিরও সক্রিয় সহযোগিতা দরকার।
২০১১ সালে রাজ্যে পালাবদলের পরে তৃণমূল সরকার এসে জল সংরক্ষণের জন্য ‘জল ধরো, জল ভরো’ প্রকল্প শুরু করেছিল। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে ভূগর্ভস্থ জল সংরক্ষণের ব্যবস্থা আদৌ কতটা কার্যকর, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতেই পারে। বিজ্ঞানীদের অনেকেই বলছেন, বিশুদ্ধ জলের ব্যবসা করে, এমন অনেক সংস্থারই কোনও লাইসেন্স নেই। অথচ তাদের ব্যবসার জন্য প্রতিদিন ভূগর্ভের হাজার হাজার লিটার জল চুরি হয়ে যাচ্ছে। বিভিন্ন পুরসভার সরবরাহ করা জল কতটা স্বাস্থ্যকর, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন কুমারবাবু।
জল দিবসের আলোচনাসভায় কুমারবাবু ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন ন্যাশনাল অ্যাকাডেমি অব সায়েন্সের কলকাতা শাখার সভাপতি হেমন্ত মজুমদার, বোস ইনস্টিটিউটের মলিকিউলার মেডিসিন বিভাগের প্রধান পরিমল সেন, ইনস্টিটিউট অব ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজের সহ-অধ্যাপক জিনিয়া মুখোপাধ্যায় প্রমুখ। হাজির ছিলেন বণিকসভার সভাপতি গৌরপ্রসাদ সরকারও।