ফাইল চিত্র।
চিকিৎসার গাফিলতিতে রোগীর মৃত্যু হয়েছে—এই অভিযোগে রোগীর আত্মীয়েরা বিক্ষোভ দেখালেন বসিরহাট সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে। হাসপাতাল সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগও করা হয়।
হাসপাতাল সুপার শ্যামল হালদার বলেন, ‘‘অভিযোগ খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
এক মাসের মধ্যে এই নিয়ে তিনটি অভিযোগ উঠল হাসপাতালের বিরুদ্ধে। বিনা চিকিৎসায় একজনের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছিল। আর একজনকে চিকিৎসা না করেই কলকাতার হাসপাতালে স্থানান্তরিত করে দেওয়ার অভিযোগ ছিল। ফের বিনা চিকিৎসায় মহিলার মৃত্যুর অভিযোগ উঠল।
পুলিশ, হাসপাতাল এবং রোগীর আত্মীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার দুপুরে পায়খানা এবং বমি শুরু হয় খোলাপোতার বাসিন্দা পূর্ণিমা রায়ের (৩২)। প্রাথমিক চিকিৎসার পর পায়খানা এবং বমি কমলেও মহিলার শ্বাসকষ্ট, ঘাড়ে যন্ত্রণা শুরু হয়। রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ তাঁকে বসিরহাট সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে মহিলাকে পাঠানো হয় ওই চত্বরের মধ্যেই থাকা হাসপাতালের ডায়ারিয়া বিভাগে। ভোর ৫টা নাগাদ মহিলার মৃত্যু হয়েছে বলে জানান চিকিৎসক।
পুলিশ জানায়, এই ঘটনার পর ক্ষোভে ফেটে পড়েন মৃতার আত্মীয়েরা। তাঁদের অভিযোগ, শ্বাসকষ্ট হল আর ভর্তি করা হল ডায়ারিয়া ওয়ার্ডে। তার উপর ভর্তির পর থেকে সারা রাত কোনও চিকিৎসকের দেখা মেলেনি। নার্সরাও কোনও ওষুধ দেননি।
মৃতার ভাই চিন্ময় দাস বলেন, ‘‘ভর্তির পর কোনও চিকিৎসক দিদিকে একবারও দেখার প্রয়োজন মনে করেননি। যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে দিদি কাতরেছেন। তবু কোনও চিকিৎসক আসেননি। নার্সরাও চিকিৎসককে খবর দেননি। এমনকী মৃত্যুর আগে জল চেয়েও পাননি দিদি।’’
হাসপাতালের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তোলেন ওই মহিলার স্বামী গণেশ রায়। তিনি বলেন, ‘‘চিকিৎসার গাফিলতিতেই আমার স্ত্রীর মৃত্যু হয়েছে। শ্বাসকষ্ট হয়েছে। তাঁকে ডায়ারিয়া বিভাগে কেন পাঠানো হল? চিকিৎসক ও নার্সদের শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।’’
কিন্তু এই ঘটনা বার বার বসিরহাট হাসপাতালে ঘটছে কেন?
হাসপাতাল সূত্রে জানানো হয়েছে, বসিরহাট জেলা হাসপাতালে যে কয়েকজন চিকিৎসক আছেন তা দিয়ে সব ক’টি ওয়ার্ডের শতাধিক রোগীর চিকিৎসা করা সম্ভব হচ্ছে না। তার উপর যুক্ত হয়েছে সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল। যেখানে একটি হাসপাতালেই প্রয়োজনীয় চিকিৎসক নেই সেখানে দু’টো হাসপাতাল চলবে কী করে!