WB Panchayat Election 2023

বহু আসনে প্রার্থী দিতে পারল না বিরোধীরা

সন্দেশখালি ১ ও ২ ব্লকের বেশিরভাগ আসনেই কোনও লড়াই হচ্ছে না। দুই ব্লক মিলিয়ে ৬টি জেলা পরিষদ আসনের ৩টিতে প্রার্থী দিয়েছে সিপিএম।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ জুন ২০২৩ ০৯:৪৪
Share:

—প্রতীকী চিত্র।

পঞ্চায়েত ভোটের জন্য মনোনয়ন পর্ব শেষ হল বৃহস্পতিবার। দুই জেলার একাধিক ব্লকে বিরোধীদের কোনও মনোনয়নই সে ভাবে জমা পড়েনি। বিরোধী শিবিরের অভিযোগ, শাসক দলের ভয়েই মনোনয়ন দেওয়া যায়নি। তৃণমূলের দাবি, সংগঠনের অভাবে প্রার্থী দিতে পারেনি বিরোধীরা।

Advertisement

সন্দেশখালি ১ ও ২ ব্লকের বেশিরভাগ আসনেই কোনও লড়াই হচ্ছে না। দুই ব্লক মিলিয়ে ৬টি জেলা পরিষদ আসনের ৩টিতে প্রার্থী দিয়েছে সিপিএম। দুই ব্লকের পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতির সব আসনই কার্যত বিরোধীশূন্য। কয়েকটি আসনে কিছু নির্দল প্রার্থী লড়ছেন।

প্রশাসন সূত্রের খবর, সন্দেশখালি ১ ব্লকের গ্রাম পঞ্চায়েত আসনে ১৫৬টি মনোনয়ন জমা পড়েছে। এর মধ্যে তৃণমূলেরই ১৫২টি। নির্দল ৪টি। পঞ্চায়েত সমিতিতে ২৯টি মনোনয়ন জমা হয়েছে। এর মধ্যে তৃণমূলের ২৮টি, নির্দল মাত্র একটি। প্রায় একই পরিস্থিতি সন্দেশখালি ২ ব্লকেও।

Advertisement

স্থানীয় বিজেপি নেতা রতিকান্ত ঢালি বলেন, “সন্দেশখালির দু’টি বিডিও অফিসে আসার সব রাস্তার মোড়ে এবং পাড়ার মোড়ে তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা জড়ো হয়ে থাকছে। বিজেপি কর্মীদের বাড়ি গিয়ে ধমকাচ্ছে। প্রতিটি খেয়াঘাটে লোকজন রেখে দিচ্ছে তৃণমূল। পথচলতি মানুষজনেরও ব্যাগ পরীক্ষা করে দেখছে শাসক দলের বাহিনী। যা পরিস্থিতি, ভোট ছাড়াই তৃণমূল সব দখল করবে।”

সন্দেশখালি ১ ব্লকের ন্যাজাট ২ পঞ্চায়েতের চার বিজেপি প্রার্থী ব্লক দফতরে মনোনয়ন দিতে না পেরে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। আদালতের নির্দেশে এ দিন পুলিশি নিরাপত্তা দিয়ে তাঁদের ব্লক দফতরে পৌঁছে দেওয়া হয়। কিন্তু ব্লক প্রশাসন সূত্রের খবর, নির্দিষ্ট সময় পেরিয়ে যাওয়ায় তাঁদের মনোনয়ন নেওয়া যায়নি।

সিপিএম নেতা নিরাপদ সর্দার জানান, সন্দেশখালির ১ ব্লকে ৩টি জেলা পরিষদের আসনের ১টিতে এবং সন্দেশখালি ২ ব্লকের ৩টি আসনের ২টিতে তাঁরা প্রার্থী দিয়েছেন। তিনি বলেন, “পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতির কোনও আসনে প্রার্থী দিতে পারিনি। সব তৃণমূল একাই প্রার্থী দিয়েছে। সিপিএম আমলে সন্দেশখালিতে এ রকম ঘটনা ঘটেনি। দু’এক জন নির্দল প্রার্থী আছেন। ওগুলো লোক দেখানো। আসলে সব তৃণমূলেরই।”

তৃণমূল নেতা শেখ শাজাহান বলেন, “বিরোধীদের অভিযোগ ভিত্তিহীন। আসলে ওদের সংগঠন নেই। প্রার্থী খুঁজে পায়নি।”

দক্ষিণ ২৪ পরগনার ফলতা ব্লকও কার্যত বিরোধীশূন্য থাকছে। এই ব্লকে পঞ্চায়েতের মোট সদস্য সংখ্যা ২৩৪, পঞ্চায়েত সমিতিতে ৩৮ এবং জেলা পরিষদের সদস্য সংখ্যা ৩। এর মধ্যে জেলা পরিষদের দু’টি আসনে মনোনয়ন দিয়েছে বিরোধীরা। বাকি আর কোনও আসনে বিরোধীরা মনোনয়ন দেয়নি।

ফলতা ব্লকের সিপিএমের এরিয়া কমিটির সদস্য শম্ভুনাথ কুড়মি বলেন, “তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর থেকেই এখানে সন্ত্রাস চলছে। প্রাণের ভয়ে কেউ প্রার্থী হতে চাইছেন না।” বিজেপি নেতা অতনু সাঁতরা বলেন, “ফলতা ব্লকে কেউ প্রার্থী হতে এগিয়ে আসছেন না। তৃণমূলের ভয়ে সিঁটিয়ে রয়েছেন। জেলা পরিষদের একটি আসনে আমরা মনোনয়ন জমা করাতে পেরেছি।”

বিরোধীদের অভিযোগ মানতে চাননি ফলতার তৃণমূল নেতা জাহাঙ্গির খান। তাঁর দাবি, “ওদের কোনও সংগঠন নেই। তাই প্রার্থী দিতে পারেনি। এখানে কোনও সন্ত্রাস হয়নি।” ফলতার বিডিও সন্দীপ ঘোষ বলেন, “ব্লক চত্বরে ১৪৪ ধারা জারি রয়েছে। পুলিশ টহলদারি চালাচ্ছে। সমস্ত রকম নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। তারপরেও কেউ মনোনয়ন দিতে না এলে, আমি কী করব!”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement