আ-হা-রে ইলিশ
গত কয়েক বছরে সুন্দরবনে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল ইলিশ উৎসব। এই উৎসবের হাত ধরেই বর্ষার মরসুমেও বেড়েছিল পর্যটকদের আনাগোনা। কিন্তু এ বছর বর্ষা চলে এলেও পর্যটকদের দেখা মিলছে না সুন্দরবনে।
কয়েক বছর ধরেই সুন্দরবন পর্যটনের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে এই ইলিশ উৎসব। এই মরসুমে যে সকল পর্যটকেরা সুন্দরবনে বেড়াতে আসেন, তাঁদের জন্য ইলিশের আলাদা পদের ব্যবস্থা হয়। লঞ্চ বা ভুটভুটিতে চেপে সুন্দরবেন নদী-খাঁড়ি ভ্রমণ করতে করতেই সেই খাবার-দাবারের স্বাদ নেন পর্যটকেরা। এমনিতে সুন্দরবন ভ্রমণের মরসুম শীতকাল। কিন্তু ইলিশের আকর্ষণে গত কয়েক বর্ষায়ও প্রচুর পর্যটক আসছিলেন বলেই জানান স্থানীয় বাসিন্দারা।
দেশ জুড়ে লকডাউনের ফলে সুন্দরবনেও বন্ধ ছিল পর্যটন। গত ১০ জুন সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্পের ক্ষেত্র অধিকর্তা তথা প্রধান বন সংরক্ষক সুধীরচন্দ্র দাস একটি বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্বাস্থ্যবিধি ও বেশ কিছু নিয়ম মেনে সুন্দরবনে পর্যটন শুরুর নির্দেশ দেন। তবে তারপরেও সুন্দরবনে পর্যটক এসেছেন হাতে গোনা। ট্যুর অপারেটরদের দাবি, করোনা সংক্রমণের ভয়েই পর্যটকেরা আসছেন না।
পর্যটন ব্যবসায়ীদের আশা ছিল, বর্ষায় ইলিশ উৎসবের হাত ধরে পরিস্থিতি ঘুরে দাঁড়াতে পারে। কিন্তু করোনা পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়ায় পর্যটক বাড়েনি। তা ছাড়া, এ বছর সে ভাবে দেখা মেলেনি ইলিশেরও। ফলে সুন্দরবনের ইলিশ উৎসব জমছে না। লকডাউন শিথিল হওয়ার পরে ছোট ছোট গ্রুপে দু’একটি পর্যটকদের দল এলেও, ইলিশ উৎসবকে কেন্দ্র করে আগের বছরগুলির মতো পর্যটকদের ঢল নামেনি এ বার। পর্যটন ব্যবসায়ী শম্ভুনাথ মান্না বলেন, “মরসুমের শুরু থেকেই আমরা এ বার একের পর এক ধাক্কা খেয়েছি। করোনা-আতঙ্কে দীর্ঘ দিন পর্যটক নেই সুন্দরবনে। তার উপরে আমপানের দাপটে আমাদের লঞ্চ, ভুটভুটি সবই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পর্যটক এলে আমরা ঘুরে দাঁড়াতে পারতাম। কিন্তু তা হল কই? কবে যে সব স্বাভাবিক হবে বুঝতে পারছি না।”
আর এক ব্যবসায়ী নিউটন সরকার বলেন, “এই বর্ষায় এখনও পর্যন্ত ১৪ জনের একটিমাত্র পর্যটকদের দল ইলিশ উৎসবে এসেছেন। আর সে ভাবে পর্যটকদের দেখা নেই। ইলিশ উৎসবের হাত ধরে ঘুরে দাঁড়ানোর কথা ভেবেছিলাম। কিন্তু তা হল না।”