অভিযুক্ত: বিক্রম সরকার। বৃহস্পতিবার তোলা নিজস্ব চিত্র
গ্রেফতারি এড়াতে চোরাপথে বাংলাদেশে পালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিল নার্সিং পড়ুয়া উদ্ভব সরকারকে খুনের অভিযোগে ধৃত সহপাঠী বিক্রম সরকার। প্রাথমিক তদন্তের পরে এ কথা জানিয়েছে পুলিশ।
বুধবার দুপুরে অশোকনগর থানা ও গঙ্গারামপুর থানার পুলিশ যৌথ অভিযান চালিয়ে গঙ্গারামপুর থানার যাদববাটি এলাকা থেকে বিক্রমকে গ্রেফতার করে। বৃহস্পতিবার বারাসত জেলা আদালতে তোলা হলে বিচারক তাকে পুলিশি হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন। পুলিশ জানিয়েছে, রবিবার দুপুরে অশোকনগরে ভাড়া বাড়ির ঘর থেকে উদ্ভবের দেহ উদ্ধার করেছিল পুলিশ। শরীরে বিভিন্ন অংশে আঘাতের চিহ্ন ছিল। ঘটনার পর থেকে বিক্রমের খোঁজ মিলছিল না। ফোনও বন্ধ ছিল। ধৃতকে জেরা করে পুলিশ জানতে পেরেছে, পালিয়ে সে দক্ষিণ দিনাজপুরের কিছু এলাকায় আত্মগোপন করেছিল। ঘন ঘন ঠিকানা বদল করেছিল। বাংলাদেশে পালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল তার।
পুলিশের দাবি, জেরায় বিক্রম খুনের কথা স্বীকার করেছে। ভারী কিছু দিয়ে আঘাত করেছিল বলে জানিয়েছে। তদন্তে নেমে পুলিশ জানিয়েছে, শনিবার রাতে বিক্রম ও উদ্ভবের মধ্যে কোনও কারণে অশান্তি বাধে। অভিযোগ, উদ্ভব, বিক্রমের পরিবারের সদস্যদের কটূ কথা বলেছিল। বিক্রম মাথা গরম করে ঘর থেকে বেরিয়ে অশোকনগর স্টেট জেনারেল হাসপাতাল চত্বরে যায়। চা খায়।
রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ ঘরে এসে দেখে, উদ্ভব মোবাইল ঘাঁটাঘাঁটি করছেন। অভিযোগ, আচমকাই ভারী কিছু দিয়ে উদ্ভবের মাথায় আঘাত করে বিক্রম। এরপরে ফল কাটার ছুরি দিয়ে কোপায়। উদ্ভব মারা গিয়েছেন বুঝতে পেরে দেহ খাটের নীচে ঢুকিয়ে দেয়।
কী কারণে উদ্ভবের সঙ্গে বিক্রমের অশান্তি বেধেছিল, তা এখনও স্পষ্ট নয় তদন্তকারীদের কাছে। বিষয়টি জানতে আরও জেরা করা হচ্ছে বিক্রমকে। খুনের অস্ত্রটিও এখনও উদ্ধার হয়নি।
সোমবার নিহত যুবকের জ্যাঠা অরুণ সরকার অশোকনগর থানায় লিখিত অভিযোগ করেন বিক্রমের বিরুদ্ধে। উদ্ভবের বাড়ি দক্ষিণ দিনাজপুরের গঙ্গারামপুর থানার যাদববাটি এলাকায়। বিক্রমও ওই এলাকা বাসিন্দা। অশোকনগর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে সরকারি নার্সিং ট্রেনিং স্কুলে প্রথম বর্ষে পড়তেন দু’জন। পয়লা নভেম্বর থেকে শুরু হয়েছিল ক্লাস। কয়েকজন সহপাঠীর সঙ্গে একটি বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকতেন তাঁরা। সেই বাড়ির ঘর থেকেই মেলে উদ্ভবের দেহ।