Security of Women

নার্সদের কোয়ার্টার লক্ষ্য করে উড়ে আসে ইট

আর জি কর-কাণ্ডের পর থেকে সরকারি হাসপাতালগুলির পরিকাঠামো, নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। জেলার বহু হাসপাতালে মহিলা চিকিৎসক, নার্সরা কেমন পরিবেশে কাজ করেন— তা সরেজমিন দেখতে গিয়ে উঠে এল বহু ক্ষোভ, আশঙ্কা, আতঙ্কের চাপা কাহিনী।

Advertisement

সামসুল হুদা

ভাঙড়  শেষ আপডেট: ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১০:২০
Share:

নলমুড়ি ব্লক হাসপাতালের এই ভাঙা পাঁচিল দিয়ে ঢুকে পড়ে বহিরাগত লোকজন। নিজস্ব চিত্র।

রাতের অন্ধকারে নার্সদের কোয়ার্টার লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছোড়া হয়। হাসপাতালের কাছেই বসে মদের আসর। হাসপাতাল চত্বরের মধ্যে প্রায়ই পড়ে থাকতে দেখা যায় মদের খালি বোতল।

Advertisement

আর জি কর-কাণ্ডের পরে উত্তাল গোটা রাজ্য তথা দেশ। কর্মস্থলে মহিলা কর্মীদের নিরাপত্তার দাবি উঠেছে সর্বত্র। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে এমনই পরিস্থিতি ভাঙড় ১ ব্লকের নলমুড়ি ব্লক হাসপাতালের। এই নিয়ে বিভিন্ন সময়ে সরব হয়েছেন নার্স, মহিলা কর্মীরা। কিন্তু অভিযোগ, উৎপাত বন্ধ হয়নি।

স্থানীয় সূত্রের খবর, নলমুড়ি ব্লক হাসপাতালের চার দিকে পাঁচিল দেওয়া থাকলেও পিছনের দিকের পাঁচিলের বেশ কিছুটা অংশ ভাঙা রয়েছে। এই ভাঙা অংশ দিয়ে আশপাশের গ্রামের লোকজন হাসপাতালে যাতায়াত করেন। বহিরাগতেরাও ভিতরে ঢুকে পড়ে। অভিযোগ, সন্ধ্যার পরে হাসপাতালে পিছনের মাঠে বলে মদ্যপানের আসর। রাতের অন্ধকারে হাসপাতালে নার্সদের কোয়ার্টার লক্ষ্য করে ইট ছোড়া হয় বলে অভিযোগ। যাদবপুর লোকসভা কেন্দ্রের প্রাক্তন সাংসদ তথা ওই হাসপাতালে তৎকালীন রোগীকল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান মিমি চক্রবর্তীকে গত বছর বিষয়টি জানান হাসপাতালের মহিলা কর্মীরা। নিরাপত্তা নিয়ে সরব হয়েছিলেন তাঁরা। অভিযোগ, তারপরে দীর্ঘ সময় কেটে গেলেও এখনও পর্যন্ত হাসপাতালের ভাঙা পাঁচিল ঠিক করা হয়নি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাসপাতালের এক নার্স বলেন, “বাসন্তী হাইওয়ে লাগোয়া এই ব্লক হাসপাতালে রাতবিরেতে অনেক রোগী আসেন। অনেক সময়ে কোয়ার্টার থেকে তড়িঘড়ি ছুটে যেতে হয়। কিন্তু হাসপাতালে বহিরাগত লোকজন যাওয়া আসা করেন। এমনকী, আমাদের কোয়ার্টার লক্ষ্য করে ইট ছোড়ে। বিষয়টি আমরা প্রাক্তন সাংসদকে জানিয়েছিলাম। কিন্তু তারপরেও পাঁচিল ঠিক হয়নি। যেখানে আর জি কর-কাণ্ডের পরে এত হইচই হচ্ছে, সেখানে আমাদের হাসপাতালে মহিলাদের নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন রয়ে গিয়েছে।”

Advertisement

হাসপাতাল সূত্রের খবর, মহিলা চিকিৎসক না থাকলেও ১৪ জন নার্স, দু’জন গ্রুপ ডি মহিলা, দু’জন সাফাই কর্মী, আশা, এএনএম সহ বহু মহিলা কর্মী রয়েছেন। নার্স ও মহিলা কর্মীদের জন্য আলাদা বিশ্রাম কক্ষ, শৌচালয়ের ব্যবস্থা রয়েছে। হাসপাতালের বিভিন্ন জায়গায় মহিলাদের নিরাপত্তার কথা ভেবে সিসি ক্যামেরা ও আলো লাগানো হয়েছে। এ ছাড়াও, পুলিশের এক জন এএসআই সহ দু’জন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকেন। রাতে সিভিক ভলান্টিয়ার মোতায়েন থাকে হাসপাতালে। থানা থেকে রাতে পুলিশের টহলদারি গাড়ি হাসপাতালে নজরদারি চালায়।

বিএমওএইচ মিলন মহান বলেন, “ভাঙা পাঁচিল নিয়ে সমস্যা হয়। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি।” ভাঙড় ১ বিডিও প্রিয়াঙ্কা বালা বলেন, “আশা করছি, পাঁচিলের সমস্যার দ্রুত সমাধান হবে। মহিলাদের নিরাপত্তা আরও কী ভাবে বাড়ানো যায়, তা নিয়ে প্রশাসনিক ভাবে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেব। পুলিশের সঙ্গেও বিষয়টি নিয়ে কথা বলব।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement