বন্ধ দোকানপাট। সাগরে। নিজস্ব চিত্র
টানা আড়াই মাস বন্ধ থাকার পরে গত ৮ জুন থেকে খুলে গিয়েছে সাগরের কপিলমুনির আশ্রম। কিন্তু করোনা পরিস্থিতি এবং পরিবহণ সমস্যার জেরে এখনও সে ভাবে কপিলমুনির মন্দির দর্শনে আসছেন না পুণ্যার্থীরা। দীর্ঘ দিন বিক্রি বন্ধ থাকায় সঙ্কটে পড়েছেন মন্দির চত্বরে ডালা, মালা, পুজোর সরঞ্জাম বিক্রি করা দোকানিরা। অনেকে অন্য পেশা খুঁজে নিচ্ছেন এই পরিস্থিতিতে।
রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এমনকী, রাজ্যের বাইরে থেকেও বছরভর বহু পুণ্যার্থী গঙ্গাসাগরে কপিলমুনির মন্দির দর্শনে আসেন। সাগরে স্নান সেরে স্থানীয় দোকান থেকে পুজোর ডালা নিয়ে মন্দিরে পুজো দেন তাঁরা। বেতের তৈরি ডালাতে সাজানো থাকা ফুল, মালা, নকুলদানা, চেলি কাপড়, নারকেল-সহ নানা কিছু। বহু বছর ধরে মন্দিরের সামনে সার দেওয়া গুমটি ঘরেই এই পুজোর সরঞ্জামের দোকানগুলি চলত। ২০১৪ সালে গঙ্গাসাগর মেলা চত্বর সৌন্দর্যায়নের সময়ে ডালা-মালার দোকানগুলির জন্য মন্দিরের সামনে পাকা ভবন তৈরি হয়। সব মিলিয়ে মন্দির চত্বরে প্রায় ১৩০টি এ রকম দোকান রয়েছে।
দোকানিরা জানালেন, দোকানগুলির জন্য হাজার থেকে বারশো টাকা মাসিক ভাড়া গুনতে হয়। এ ছাড়াও, বিদ্যুতের বিলের খরচ রয়েছে। দীর্ঘ কয়েক মাস ধরে পুণ্যার্থীরা না আসায় ব্যবসা কার্যত বন্ধ। ফলে ভাড়া ও বিদ্যুতের বিল কী ভাবে মেটাবেন, তাই নিয়েই দুশ্চিন্তায় রয়েছেন তাঁরা। অনেকেই দোকান বন্ধ রেখে মজুরের কাজ, মাছ বিক্রি বা রাজমিস্ত্রির জোগাড়ের কাজ করে সংসার সামলাচ্ছেন।
সম্প্রতি মন্দির চত্বরে গিয়ে দেখা গেল, ২-৩টি দোকান খোলা। এক দোকানি বলেন, “এখন আর পুণ্যার্থীরা আসছে না। স্থানীয় দু’একজন এলেও তাঁরা পুজো না দিয়ে দর্শন করে ফিরে যাচ্ছেন।’’ এই অবস্থায় দোকানের ভাড়াটুকুও উঠছে না। পুজোর সরঞ্জাম-সহ অন্য দোকানগুলির বিদ্যুতের বিল মকুবের জন্য গঙ্গাসাগর-বকখালি উন্নয়ন পর্ষদকে জানানো হয়েছে ছোট ব্যবসায়ীদের তরফে।
গঙ্গাসাগর-বকখালি উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান তথা সাগরের বিধায়ক বঙ্কিম হাজরা বলেন, “ওঁরা বিদ্যুতের বিল কমানোর বিষয়ে আবেদন করেছেন। তা বিবেচনা করা হচ্ছে। তবে দোকান ভাড়ার টাকার বিষয়ে কিছু বলা যাবে না।”