Tmc rally

স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করে তৃণমূলের মহামিছিল

তৃণমূলের কর্মসূচিকে ঘিরে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। বিরোধীদের অভিযোগ, করোনা-আবহে এত মানুষকে নিয়ে কোন যুক্তিতে মিছিল ও জনসভা করল শাসক দল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

ভাঙড় শেষ আপডেট: ১৭ অগস্ট ২০২০ ০৪:৩২
Share:

মাস্ক নেই। নেই শারীরিক দূরত্ব। চলছে মিছিল। ভাঙড়ে। ছবি: সামসুল হুদা

প্রতিবাদ মিছিল করল তৃণমূল। রবিবার বিকেলে ভাঙড়ের বড়ালিঘাট থেকে ঘটকপুকুর চৌমাথা পর্যন্ত মহামিছিল হয়। মিছিল শেষে ঘটকপুকুর চৌমাথায় জনসভাও হয়েছে। যার জেরে রবিবার কার্যত বাসন্তী হাইওয়ে ও ঘটকপুকুর-সোনারপুর রোড অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। সমস্যায় পড়েন মানুষ।

Advertisement

এ দিন মিছিলে ছিলেন রাজ্যসভার সাংসদ তথা জেলা তৃণমূল সভাপতি শুভাশিস চক্রবর্তী, ক্যানিং পূর্বের বিধায়ক তথা জেলার যুব তৃণমূলের সভাপতি শওকত মোল্লা, সোনারপুর উত্তরের বিধায়ক ফেরদৌসি বেগম, জেলা তৃণমূলের পর্যবেক্ষক পরেশরাম দাস, তৃণমূল নেতা আরাবুল ইসলাম, ওহিদুল ইসলাম প্রমুখ।

১০ অগস্ট ভাঙড়ের কাচদিয়া গ্রামে আহলে সুন্নাতুল জামাতের কর্ণধার আব্বাস সিদ্দিকীর উপরে হামলার অভিযোগ ওঠে যুব তৃণমূলের বিরুদ্ধে। ওই ঘটনার পরে আব্বাস-অনুগামীরা ঘটকপুকুর-সহ কয়েকটি জেলায় রাস্তা অবরোধ করেন। ভাঙড়-সহ বিভিন্ন এলাকায় তৃণমূলের দলীয় প্ল্যাকার্ড, ফেস্টুন ছিঁড়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ।

Advertisement

ওই ঘটনার দু’দিন পরে ভাঙড়ের পদ্মপুকুরে যুব তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের বাড়িঘর ভাঙচুরেরও অভিযোগ ওঠে আব্বাস-অনুগামীদের বিরুদ্ধে।

ওই ঘটনার প্রতিবাদেই এ দিন যুব তৃণমূলের পক্ষ থেকে মহামিছিল ও প্রতিবাদ সভার আয়োজন করা হয়।

তৃণমূলের কর্মসূচিকে ঘিরে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। বিরোধীদের অভিযোগ, করোনা-আবহে এত মানুষকে নিয়ে কোন যুক্তিতে মিছিল ও জনসভা করল শাসক দল। মিছিলে অধিকাংশ কর্মী সমর্থকদের মাস্ক ছিল না বলেও অভিযোগ। মানা হয়নি শারীরিক দূরত্ববিধিও। মহামিছিল ও জনসভা করা নিয়ে পুলিশ-প্রশাসনের থেকে কোনও লিখিত অনুমতি নেওয়া হয়নি বলে জেলা পুলিশের এক কর্তা জানিয়েছেন।

বিজেপি রাজ্য নেতা অভিজিৎ দাস (ববি) বলেন, ‘‘আব্বাস সিদ্দিকী একজন অসুস্থ মানুষকে দেখতে গিয়েছিলেন। তাঁর সেই নৈতিক অধিকার আছে। তাঁর উপরে যে হামলা হল, তা নিয়ে কোনও ব্যবস্থা গ্রহণ করা হল না। করোনা পরিস্থিতিতে যেখানে রাজ্য সরকার বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলিকে মিটিং-মিছিল করার অনুমতি দিচ্ছে না, সেখানে শাসকদল কী ভাবে এত মানুষকে নিয়ে মিটিং-মিছিল করে? এদের বিরুদ্ধে অবিলম্বে ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অ্যাক্ট অনুযায়ী মামলা করা উচিত।’’

বিধানসভার বাম পরিষদীয় নেতা তথা বিধায়ক সুজন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘শাসক দল নিজেদের ক্ষমতা প্রদর্শন করতে গিয়ে করোনা পরিস্থিতিতে মানুষের বিপদ বাড়িয়ে দিল।’’

অভিযোগ উড়িয়ে শওকত বলেন, ‘‘এই মুহূর্তে আমরা দু’টি ভাইরাসের মোকাবিলা করছি। করোনাভাইরাসের কারণে আমাদের ঘরে থাকতে হচ্ছে। আর একটা ভাইরাস হচ্ছে সাম্প্রদায়িক ও বিভেদকামী শক্তি। করোনার থেকেও ভয়ঙ্কর এই ভাইরাস। তাই এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে পথে নেমে মোকাবিলা করতে হচ্ছে।’’

শওকতের কথায়, ‘‘আব্বাস সিদ্দিকী সাহেব মিথ্যা নাটক করছেন। তাঁর গায়ে কেউ হাত দেয়নি, তাঁর গাড়িও ভাঙচুর করা হয়নি।’’ ভাঙড় ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি শাজাহান মোল্লা বলেন, ‘‘সে দিন আহলে সুন্নাতুল জামাতের কয়েকজন ঘটকপুকুরে রাস্তা অবরোধ করেছিল। পিছন থেকে বিভেদকামী শক্তি এবং আমাদের দলের বিক্ষিপ্ত কিছু মানুষ উস্কানি দিয়ে গন্ডগোল তৈরি করেছিলেন। আমরা দলগত ভাবে এর মোকাবিলা করব।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement