জেটি মিশেছে নদীতে

এমনই অবস্থা হিঙ্গলগঞ্জের সুন্দরবনের প্রত্যন্ত রূপমারি পঞ্চায়েতের কুমিরমারি ফেরিঘাটের।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বসিরহাট শেষ আপডেট: ১৩ অগস্ট ২০১৯ ০১:০৮
Share:

নদীতে তলিয়েছে কংক্রিটের জেটির একাংশ। ছবি: নির্মল বসু

জেটি আছে। কিন্তু তা নদীর মধ্যে চলে গিয়েছে। ফলে ব্যবহার করা যায় না। কাঠের পাটাতনই ভরসা। সেখান দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে পারাপার করতে হয়। যে কোনও দিন বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

Advertisement

এমনই অবস্থা হিঙ্গলগঞ্জের সুন্দরবনের প্রত্যন্ত রূপমারি পঞ্চায়েতের কুমিরমারি ফেরিঘাটের। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, এমন অবস্থায় খেয়াঘাট দিয়ে রোজ কয়েক’শো মানুষ পারাপার করেন। পাটাতনের কাঠ ভেঙে দুর্ঘটনাও ঘটেছে কয়েকবার। অথচ নতুন জেটিঘাটের কোনও চিন্তাভাবনা নেই প্রশাসনের।

হিঙ্গলগঞ্জের বিধায়ক দেবেশ মণ্ডল বলেন, ‘‘কুমিরমারিতে নতুন জেটিঘাটের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। আশা করি শীঘ্রই তা মঞ্জুর হবে।’’

Advertisement

ব্লক প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সুন্দরবনের প্রত্যন্ত গ্রাম কুমিরমারির উপর দিয়ে বয়ে গিয়েছে ডাঁসা নদী। তার এক পাড়ে কুমিরমারি অন্য পাড়ে রয়েছে সন্দেশখালির বড়সেহেরা গ্রাম। ফেরিঘাট পেরিয়ে একটু এগোলেই সেহেরা হাইস্কুল, কালীনগর কলেজ, ন্যাজাট বাজার, ঘোষপুর হাসপাতাল। এলাকাবাসীদের কথা মাথায় রেখে ২০০৪ সালে কুমিরমারি ফেরিঘাটে কংক্রিটের জেটিঘাট তৈরি হয়। নদীর স্রোতে পাড় ভাঙে। ২০০৭ সালে ওই জেটিঘাটটি পাড় থেকে অনেকটাই দূরে নদীর মধ্যে সরে গিয়েছে। জেটিঘাটের কিছুটা অংশ আবার নদীগর্ভেও তলিয়ে গিয়েছে। এই অবস্থায় ওই জেটিঘাট ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়ে।

কাঠের পাটাতনে দিয়েই সকলে যাতায়াত করেন। স্কুল-কলেজে যেতে গেলেও ছাত্রছাত্রীদের ভরসা ওই কাঠের পাটাতন। বৃষ্টির সময়ে কাঠ ভিজে নষ্ট হচ্ছে। তা আরও বিপজ্জনক হয়ে উঠছে। নদীতে ভাটার সময়ে পাটাতনের জীর্ণ দশা আরও খারাপ হয়। নিত্যযাত্রী স্বপন বিশ্বাস, খগেন মণ্ডল বলেন, ‘‘কয়েক দিন আগে এক মহিলা বাচ্চা নিয়ে কাঠের পাটাতনের উপর দিয়ে নৌকায় উঠছিলেন। সে সময়ে পাটাতনের একটি কাঠ ভেঙে নদীতে পড়ে যান। মাঝি এবং যাত্রীদের জন্য বাচ্চার কোনও ক্ষতি হয়নি। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে নৌকোয় উঠতে ভয় লাগে।’’ ব্যবসায়ী মন্মথ মণ্ডল, রতন মণ্ডল বলেন, ‘‘মোটরবাইকে মালপত্র নিয়ে এ পার ও পার হতে হয়। এই অবস্থায় মালপত্র নিয়ে পার হতে অসুবিধা হয়। যে কোনও সময়ে কাঠের পাটাতন ভেঙে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।’’

শুধু ওই জেটিঘাট নয়, নদীপাড়ের একটা অংশ ধসে যাওয়ায় স্থানীয় বাসিন্দাদের আশঙ্কা, অবিলম্বে পাড় না বাঁধালে যাত্রী প্রতীক্ষালয়টি নদীগর্ভে তলিয়ে যাবে। ওই ফেরিঘাটের লিজ পাওয়া বিমল নাথ বলেন, ‘‘এখানে কংক্রিটের জেটিঘাটটি নদীর মধ্যে চলে যাওয়ায় যাত্রীদের সমস্যায় পড়তে হয়। বিশেষ করে বর্ষার দিনে মানুষ হয়রান হয়। ছ’মাস আগে কাঠের পাটাতন তৈরি করি। এখন দেখছি পাটাতন জলে নষ্ট হয়ে বিপজ্জনক হয়ে পড়েছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement