ভাটপাড়ায় জমা পড়ল অনাস্থা

প্রশাসনের একটি সূত্র জানাচ্ছে, অনাস্থার চিঠি জমা পড়ার পনেরো দিনের মধ্যে পুরপ্রধানকে ভোটাভুটির বৈঠক ডাকতে হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

ভাটপাড়া শেষ আপডেট: ০৭ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৭:৩৩
Share:

নিরাপত্তা: অনাস্থা চলাকালীন।—ছবি: সজল চট্টোপাধ্যায়

ভাটপাড়ার পুরপ্রধান সৌরভ সিংহকে সরাতে অনাস্থার চিঠি জমা পড়ল শুক্রবার। ৩৫ আসনের পুরসভায় তৃণমূলের পক্ষে মোট ১৮ জন কাউন্সিলর অনাস্থা প্রস্তাবে সই করেছেন। খাতায়-কলমে এই মুহূর্তে বিজেপি পরিচালিত পুরবোর্ড সংখ্যালঘু হয়ে পড়ল বলে দাবি তৃণমূলের। বিজেপি অবশ্য পাল্টা জানিয়েছে, আস্থাভোটে ‘ম্যাজিক’ দেখা যাবে। তৃণমূল শিবিরে যাওয়া ৬ জন কাউন্সিলর তাঁদের পক্ষে ভোট দেবেন বলে দাবি করেছেন সৌরভ।

Advertisement

প্রশাসনের একটি সূত্র জানাচ্ছে, অনাস্থার চিঠি জমা পড়ার পনেরো দিনের মধ্যে পুরপ্রধানকে ভোটাভুটির বৈঠক ডাকতে হয়। তিনি বৈঠক না ডাকলে আরও সাত দিন সময় পান উপ পুরপ্রধান। সৌরভ এ দিন বলেন, “অপেক্ষা করুন। আমাদের হাতে এখনও ২২ দিন সময় রয়েছে। সাংসদ (সৌরভের কাকা অর্জুন সিংহ) দিল্লি থেকে ফিরছেন। তাঁর নেতৃত্বে আমাদেরই জয় হবে।” অর্জুনের কথায়, “তৃণমূলের স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে যাবে। আসল লড়াই তো হবে ভোটাভুটিতে। তখন দেখা যাবে কার দম কত।”

অনাস্থা ঘিরে গত কয়েক দিন ধরেই উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল ভাটপাড়া। গত পাঁচ দিন ধরে প্রতি রাতে বোমাবাজি হয়েছে বিভিন্ন এলাকায়। তার মধ্যে তৃণমূলের তিন কাউন্সিলরের বাড়িতে বোমাবাজির ঘটনাও ঘটে। বৃহস্পতিবার রাতে কাঁকিনাড়ার রথতলায় তৃণমূলের কাউন্সিলর মিলি দত্তর বাড়ির সামনে বোমাবাজি হয় বলে অভিযোগ। শুক্রবার অনাস্থা প্রস্তাবের চিঠি জমা পড়ার পরে বিজেপির একটি পার্টি অফিস তৃণমূল দখল করে নিয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। সে কথা অবশ্য মানেনি শাসক দল।

Advertisement

অন্য দিকে, বৃহস্পতিবার থেকেই বকেয়া পেনশনের দাবিতে পুরসভার গেট আটকে আন্দোলন করছিলেন পুরসভার প্রাক্তন কিছু কর্মী। ফলে পুরসভার কর্মীরা দু’দিনই ভিতরে ঢুকতে পারেননি। তৃণমূল কাউন্সিলরেরা এ দিন সাড়ে ১১টা নাগাদ অনাস্থার চিঠি জমা দিতে পুরসভায় আসেন। তাঁদেরও আটকে দেওয়া হয়। কাউন্সিলরেরা জানান, তাঁদের দাবির প্রতি পূর্ণ সমর্থন রয়েছে। তাঁদের বোর্ড হলে এক সপ্তাহের মধ্যে যাতে তাঁরা প্রাপ্য পান তা দেখা হবে। এরপরেই কাউন্সিলরদের ভিতরে যেতে দেওয়া হয়। সৌরভ এ দিন পুরসভায় আসেননি। চিঠি জমা পড়ে নির্দিষ্ট জায়গায়। পুরসভার এগজিকিউটিভ অফিসার তন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায়কেও দেওয়া হয় তার কপি। তৃণমূলের দাবি, ১৮ জন সই করলেও বিজেপির আরও কয়েক জন তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন।

এ দিন সৌরভের বাড়িতে গেলে জানানো হয়, তিনি কলকাতায় গিয়েছেন। পরে অবশ্য তিনি বাড়িতেই সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হন। বলেন, “রাজ্য সরকার আমাদের সঙ্গে বিমাতৃসুলভ আচরণ করছে। আমাদের প্রাপ্য দিচ্ছে না। পেনশনপ্রাপকেরা আন্দোলন করছেন। আমরা তাঁদের সঙ্গেই রয়েছি। ভোটাভুটিতে অনেক কিছুই দেখতে পাবেন।”

নৈহাটির বিধায়ক পার্থ ভৌমিক বলেন, “১৫ দিন তো সর্বোচ্চ সময়। ক্ষমতা থাকলে তার আগে অনাস্থার মুখোমুখি হোন পুরপ্রধান। ছ’জনের গল্প যে আসলেই গল্প, তা সকলেই বুঝে গিয়েছেন। বরং উনি নিজের ঘর সামলান। অনেকেই আমাদের সঙ্গে আসার জন্য যোগাযোগ করছেন।”

ভাটপাড়ার ৩৫ জন কাউন্সলরের মধ্যে অর্জুন পদত্যাগ করেছেন। এক কাউন্সিলর জেলে। এক জন ফরওয়ার্ড ব্লকের। ফলে আস্থা ভোটে জিততে মোট ১৭ জনের সমর্থন দরকার সৌরভের।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement