সোমবার বনগাঁয় শাসকদলের কর্মসূচি। —নিজস্ব চিত্র।
গাইঘাটার পর এ বার বনগাঁতেও শিবির বদলের হিড়িক। পদ্মশিবির ছেড়ে জোড়াফুলে গেলেন বিজেপি-র প্রায় ৭০০ নেতা-কর্মী। সোমবার দুপুরে বনগাঁয় শাসকদলের একটি যোগদান মেলা কর্মসূচিতে বিজেপি আইটি সেল-সহ বিভিন্ন স্তরের নেতা-কর্মীরা দলবদল করে তৃণমূলের পতাকা হাতে তুলে নেন। দলবদলুদের দাবি, বিজেপি-র গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরেই তাঁদের এই সিদ্ধান্ত। যদিও ওই নেতা-কর্মীরা প্রকৃত অর্থে বিজেপি নন বলে পাল্টা দাবি করেছে পদ্মশিবির।
রবিবার গাইঘাটায় ফুলশড়া গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্যা অনুশ্রী দাস সাহা এবং চাঁদপাড়া বিজেপি-র যুব মোর্চার প্রাক্তন সভাপতি গোবিন্দ হালদার-সহ ৫০০ কর্মী-সমর্থক বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগদান করেন। তার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই সোমবার দুপুরে বনগাঁর রামনগর রোড এলাকায় শাসকদলের কর্মসূচিতে নিজেদের দল ছাড়লেন বিজেপি নেতা-কর্মীরা। যোগদান কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন তৃণমূলের সাংগঠনিক জেলার সভাপতি আলোরানি সরকার, চেয়ারম্যান শঙ্কর দত্ত, শাসক দলের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসি-র বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি নারায়ণ ঘোষ, বনগাঁ শহর তৃণমূল সভাপতি দিলীপ দাস, গোপাল শেঠ-সহ স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব।
তৃণমূলে যোগদান করা নেতা-কর্মীদের দাবি, “বিজেপি-র অন্দরে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব চরমে উঠেছে। তাই সেখানে সুষ্ঠু ভাবে কাজ করা কঠিন হয়ে পড়েছে। এই পরিস্থিতিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নের সাক্ষী হতে আমরা তৃণমূলে যোগদান করলাম।” যোগদানসভায় বিজেপি-কে আক্রমণ করতে ছাড়েননি তৃণমূলের বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি আলোরানী সরকার। তিনি বলেন, “কোনও সুস্থ মানুষ বিজেপি-তে থাকতে পারেন না। সে কারণে প্রতি দিনই বিজেপি নেতা-কর্মীরা দলে দলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাজের সঙ্গী হতে চাইছেন। এ দিন (সোমবার) সে ধারাবাহিকতাই বজায় থাকল।”
শাসকদলের দাবি উড়িয়ে দিয়েছে বিজেপি। ওই দলবদলুদের বিজেপি-র বলে মানতেই নারাজ দলের বারাসত সাংগঠনিক জেলার সহ-সভাপতি দেবর্ষি বিশ্বাস। তাঁর পাল্টা দাবি, “বিজেপি-র যাঁরা প্রকৃত সংগঠক, তাঁরা কোথাও যাচ্ছেন না। বিধানসভা নির্বাচনে যাঁরা ক্ষমতার লোভে তৃণমূল থেকে আমাদের দলে যোগদান করেছিলেন, আজ তাঁরাই ঘটা করে ঘরে ফিরছেন। তৃণমূল থেকে দলবদলের ভুয়ো তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। ৪ জনের বদলে ৪০ জনের ভুয়ো তালিকা দেখাচ্ছে তৃণমূল। অবাক হবার কিছু নেই। প্রকৃত অর্থে, বিজেপি থেকে কেউ তৃণমূলে যাচ্ছেন না। এঁরা কেউ বিজেপির লোক নন।”