—প্রতীকী চিত্র।
এক মহিলার অস্বাভাবিক মৃত্যু ঘিরে রহস্য দানা বেঁধেছে। মৃতার নাম মমতাজ বিবি (৩৮)। তাঁর বাড়ি দক্ষিণ ২৪ পরগনার চম্পাহাটিতে। বুধবার সকালে গরফা থানা এলাকার নর্থ পূর্বাচল রোডের একটি বাড়ির একতলা থেকে মমতাজকে অচৈতন্য অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা মৃত বলে জানান। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জেনেছে, এক যুবকের সঙ্গে থাকতেন মমতাজ। ঘটনার পরে প্রথমে বাপ্পা দে নামে ওই যুবকের খোঁজ মিলছিল না। পরে অবশ্য তাঁর সন্ধান পায় পুলিশ। তদন্তকারীদের দাবি, প্রাথমিক ভাবে মহিলার মাথায় আঘাতের চিহ্ন মিলেছে। তবে, মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানতে দেহটি ময়না তদন্তে পাঠানো হয়েছে। রাত পর্যন্ত এই ঘটনায় কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি।
পুলিশ জেনেছে, গত দু’বছর ধরে গরফার ওই বাড়ির একতলার একটি ঘরে বাপ্পার সঙ্গে ভাড়া থাকছিলেন মমতাজ। তিনি আয়ার কাজ করতেন। তাঁদের পাশের ঘরে থাকেন অন্য ভাড়াটে। দোতলায় থাকেন বাড়িওয়ালা। এ দিন সকালে মমতাজের পাশের ঘরের সেই ভাড়াটে বাড়িওয়ালার এক আত্মীয়কে জানান, মঙ্গলবার থেকে মমতাজকে দেখা যাচ্ছে না। ডেকেও তাঁর সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না। তিনি ফোনও ধরছেন না। এর পরে বাড়িওয়ালা নিত্যানন্দ সরকার এবং তাঁর জামাই তাঁদের কাছে থাকা ডুপ্লিকেট চাবি দিয়ে গেট খোলেন।ভিতরের দরজা ভেজানো ছিল। সেটি ধাক্কা দিতেই খুলে যায়। ঘরে ঢুকে বাড়িওয়ালা দেখেন, মেঝেতে অচৈতন্য অবস্থায় পড়ে আছেন মমতাজ।
নিত্যানন্দ তখন স্থানীয় পুরপ্রতিনিধিকে ফোন করেন। লালবাজারের ১০০ ডায়ালে ফোন করেও ঘটনাটি জানানো হয়। খবর পেয়ে পুলিশ এসে মমতাজের দেহ উদ্ধার করে। প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, মমতাজ ও বাপ্পা স্বামী-স্ত্রী হিসাবে ঘর ভাড়া নিয়েছিলেন।
তদন্তকারীরা জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বাপ্পা দাবি করেছেন, তিনি এবং মমতাজ, দু’জনেই বিবাহিত। তাঁরা এখানে লিভ-ইন করতেন। তবে, একই সঙ্গে বাপ্পার অভিযোগ,
বিভিন্ন কারণে মমতাজ আত্মঘাতী হওয়ার হুমকি দিতেন। ওই যুবক পুলিশের কাছে আরও দাবি করেছেন, মঙ্গলবার সকালে মমতাজের এক ভাই তাঁকে ফোন করে জানান, তাঁর দিদি ফোন ধরছেন না। পুলিশ জানিয়েছে, তা শুনে বাপ্পা বাড়িতে যান এবং মমতাজের ঝুলন্ত দেহ দেখেন। তিনিই ওড়নার ফাঁস কেটে দেহটি নামান। বাপ্পা দাবি করেছেন, দেহটি নামানোর সময়ে খাটের কোনায় মমতাজের মাথা লাগে। তাতেই তিনি চোট পান।
ওই যুবকের আরও দাবি, মমতাজের দেহ নামানোর পরে কোনও সাড় নেই দেখে তিনি ভয় পেয়ে যান এবং দেহটি মেঝেতে রেখে পালান। বন্ধ করে দেন মোবাইলও। তবে বাপ্পা ঠিক কথা বলছেন কি না, তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।