রমা ব্রহ্ম
গাইঘাটার বিক্রি হওয়া যমজ শিশুকন্যার মা চাইছেন তাঁর শিশুদের ফিরে পেতে। কিন্তু একই সঙ্গে তাঁর চিন্তা, অনটনের সংসারে মেয়েদের খাওয়াবেন কী, মানুষই বা করবেন কী করে।
গত শুক্রবার গাইঘাটার রামচন্দ্রপুর ভাদুরিয়া এলাকার বাসিন্দা রতন ব্রহ্ম নিজের যমজ শিশুকন্যাকে স্থানীয় শিমুলপুর ও মহিষাকাঠি এলাকার দুই বাসিন্দার কাছে বিক্রি করেছিলেন। এ জন্য তিনি ১ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা পেয়েছিলেন। যদিও রতনের দাবি ছিল, অভাবের সংসারে দু’টি মেয়ে তার পক্ষে লালন পালন করা কঠিন। তাই বাড়ির কাছের লোকজনের কাছে দত্তক দিয়েছিলেন। আগেই তাঁর আট বছরের এক কন্যাসন্তান রয়েছে। রবিবার খবর পেয়ে পুলিশ গাইঘাটার ওই দুই ব্যক্তির বাড়ি থেকে যজম দুই মেয়েকে উদ্ধার করে। রতনকে বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়। ১ লক্ষ ৪৫ হাজার টাকাও পুলিশ উদ্ধার করে। রতন এখন জেল হেফাজতে। মঙ্গলবার দু’টি শিশুকে চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির কাছে হাজির করানো হয়। তাদের আপাতত ঠাঁই হয়েছে কলকাতার হোমে।
সংসারে অভাবের কথা মানলেও স্বামীর কাজ মানতে পারছেন না মা রমা। তিনি বাপের বাড়ি আলিপুরদুয়ার চলে গিয়েছিলেন। স্বামীর গ্রেফতার হওয়ার পরে ফিরেছেন।
শুক্রবার সকালে রতনের বাড়ি গিয়ে দেখা গেল, কাঠ-টিনের বাড়িতে তালা বন্ধ। রাস্তায় দেখা হল রমার সঙ্গে। বললেন, ‘‘স্বামী অসুস্থ। দু’বার হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছি। প্রচুর টাকা খরচ করে চিকিৎসা করাতে হয়েছিল। দু’টো মেয়ে মানুষ করা সত্যিই কঠিন। তবুও চেয়েছিলাম নিজের কাছে রাখতে।’’
স্থানীয় শিমুলপুর পঞ্চায়েত প্রধান কণা গুহর কাছে গিয়েও রমা শিশুদের ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি করেছেন। পাশাপাশি তাদের খাওয়াপরার ব্যবস্থা করে দিতে অনুরোধ করেছেন। কথা বলতে বলতে কান্নায় ভেঙে পড়লেন রমা।
কণা জানান, শিশুদের মায়ের কাছে ফেরানোর ব্যাপারটি আপাতত আদালতে বিচারাধীন। এ বিষয়ে তাঁর কিছু করার নেই। তবে তাঁর কথায়, ‘‘পরিবারটির আর্থিক পরিস্থিতি খারাপ। সরকারি প্রকল্পে একটি বাড়ি ও মহিলার কাজের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’’