লোভনীয়: জয়নগরের মোয়া। নিজস্ব চিত্র।
জয়নগরের মিত্রগঞ্জ বাজারে পুরসভার দেওয়া জায়গাতেই অবশেষে বসতে চলেছে মোয়া তাজা রাখার যন্ত্র।
বৃহস্পতিবার টাউন হলে জয়নগরের মোয়ার জিআই প্রাপ্তি উদযাপনের অনুষ্ঠানে বিশেষ ওই যন্ত্র বসানোর কথা জানান স্থানীয় সাংসদ প্রতিমা মণ্ডল। আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই যন্ত্র বসানোর কাজ শেষ হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
একবার তৈরি হওয়ার পরে খুব বেশিদিন তাজা থাকে না জয়নগরের মোয়া। ফলে প্রচুর চাহিদা থাকলেও দেশের অন্যত্র বা বিদেশে রফতানির ক্ষেত্রে সমস্যায় পড়েন ব্যবসায়ীরা। এর সমাধানেই ওই বিশেষ যন্ত্র বসানোর পরিকল্পনা করা হয়।
যন্ত্রটিকে কেন্দ্র করে একটি মোয়া হাব তৈরিরও উদ্যোগ করা হয়েছিল। খাদি দফতরের তরফে বছর দু’য়েক আগে এর জন্য প্রায় ৩ কোটি টাকা মঞ্জুর হয়। কিন্তু একাধিক জায়গায় যন্ত্রটি বসানোর চেষ্টা হলেও নানা টালবাহনায় তা ভেস্তে যায়। শেষ পর্যন্ত মিত্রগঞ্জ বাজারে পুরসসভার জায়গাতেই যন্ত্র বসানোর উদ্যোগ হয়েছে।
সাংসদ বলেন, “জয়নগরে এই মোয়া হাব তৈরির জন্য দীর্ঘদিন ধরে লড়াই করছেন এখানকার ব্যবসায়ীরা। আমিও নানা ভাবে চেষ্টা করেছি। মুখ্যমন্ত্রী-সহ নানা দফতর এ ব্যাপারে সাহায্যের হাত বাড়িয়েছেন। সকলের সহযোগিতায় শেষ পর্যন্ত হাবটি তৈরি হচ্ছে।”
এ দিনের অনুষ্ঠানে সাংসদ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বিধায়ক বিশ্বনাথ দাস, জেলা পরিষদ সদস্য খান জিয়াউল হক-সহ খাদ্য, খাদ্য সুরক্ষা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি এবং খাদি দফতরের আধিকারিকেরা।
জয়নগরের মোয়ার জি-আই নিয়ে স্থানীয় স্তরে বিভ্রান্তি চলছিল বেশ কিছুদিন ধরে। সে বিভ্রান্তিও কেটেছে এ দিন। জয়নগরের মোয়ার জিআই মিলেছে বেশ কয়েক বছর হল। কিন্তু কী ভাবে জিআই শংসাপত্র মিলবে, তা জানতেন না অনেক মোয়া ব্যবসায়ী। অভিযোগ, এই সুযোগে শংসাপত্র করে দেওয়ার নাম করে মোয়া ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে বেআইনি ভাবে টাকা তুলছিল কোনও কোনও সংগঠন।
এ দিন রাজ্য সরকারের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি দফতরের তরফে এ ব্যাপারে ব্যবসায়ীদের সতর্ক করা হয়েছে। সংস্থার তরফে মহুয়া হোমচৌধুরী জানান, জিআই শংসাপত্রের জন্য কোনও সংগঠনের মাধ্যমে আবেদন করার দরকার নেই। টাকা দেওয়ারও প্রশ্ন নেই। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি দফতরে সরাসরি আবেদন করলে মাত্র ১০ টাকার বিনিময়েই শংসাপত্র মিলবে।
মহুয়া জানান, ইতিমধ্যে এলাকার ৪৯ জন ব্যবসায়ী সরাসরি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি দফতরে জিআই শংসাপত্রের আবেদন করেছেন। তাঁদের শংসাপত্র তৈরি হয়ে গিয়েছে। খুব শীঘ্রই তাঁদের তা তুলে দেওয়া হবে।