সূচনা: বসিরহাটে। নিজস্ব চিত্র
আনাজ বাগান হবে স্কুল মাঠে। সেই আনাজেরই তরকারি পড়বে পড়ুয়াদের মিড-ডে মিলের পাতে।
মাস খানেক আগে এমনই এক প্রকল্প চালু করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। নাম দেওয়া হয়েছে ‘সবুজ বিদ্যালয়, সতেজ বিদ্যালয়।’ বসিরহাট মহকুমার বিভিন্ন স্কুলে ইতিমধ্যে এই প্রকল্প চালু হয়ে গিয়েছে।
শুধু তাই নয়, এই প্রকল্পে যে সমস্ত চাষি স্কুলের মাঠে এসে আনাজ ফলাবেন তাঁদের ২৫ শতাংশ দেওয়া হবে। তিন বছরের চুক্তিতে তাঁরা এই কাজ করবেন। দিনে ১৮০ টাকা করে মজুরিও পাবেন তাঁরা। তবে জমি দিতে হবে স্কুলকে।
ইতিমধ্যে স্কুলগুলি জমি দেওয়া শুরু করেছে। গাছ লাগানোও চলছে। প্রথম পেঁপে চাষ করা হচ্ছে বলে জানান মহকুমাশাসক নীতেশ ঢালি। তাঁর কথায়, ‘‘ইতিমধ্যে বসিরহাটের ১০টি ব্লকের প্রায় ৮৫টি স্কুলে গাছ লাগানোর কাজ শুরু হয়েছে। এক কথায় স্কুলে ‘কিচেন গার্ডেন’ হলে সেখানকার পড়ুয়ারাও উপকৃত হবে।’’
প্রশাসন সূত্রের খবর, এই গাছ লাগানোর জন্য দু’জন করে চাষি রাখা হবে। একশো দিনের কাজের হিসেবে পঞ্চায়েত থেকে তাঁদের টাকা দেওয়া হবে।
অল্প জায়গার মধ্যে যে চাষি যত বেশি গাছ লাগাবেন, তার ভিত্তিতে তিনি বাড়তি টাকাও পাবেন। এতে বহু মানুষের জীবিকার পথও খুলে যাবে বলে মনে করেন নীতেশবাবু।
বাদুড়িয়া এলএমএস গার্লস হাইস্কুলের দেওয়া ১ কাঠা জমিতে ৮৩টি পেঁপে গাছ লাগানো হয়েছে। ব্লক কর্মীরা গিয়ে গাছ লাগিয়েছেন। ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা লক্ষ্মী দত্ত বণিক বলেন, ‘‘সরকারের এই উদ্যোগকে আমরা স্বাগত জানাই। স্কুলের গাছের পেঁপের ৭৫ শতাংশ মিড-ডে মিলে দেওয়া হবে। আর বাকিটা চাষিরা নেবেন।’’ স্কুলের মাঠে সবুজায়ন হলে পড়ুয়ারা সব দিক থেকে উপকৃত হবে বলে তিনি মনে করেন।
বসিরহাট ১ ব্লকের দণ্ডিরহাট নগেন্দ্রকুমার উচ্চ শিক্ষানিকেতনের প্রধান শিক্ষক দীপকরঞ্জন মণ্ডল বলেন, ‘‘আমাদের স্কুল সবুজায়নের জন্য ১০ কাঠা জমি দিয়েছে। ক্লাসঘরের গণ্ডি পেরিয়ে পড়ুয়ারা বাগানে গিয়ে মুক্ত বাতাস নিতে পারবে।’’
দিন কয়েক আগে হিঙ্গলগঞ্জের রানীবালা গার্লস স্কুলের মাঠে এই প্রকল্পের কাজে উপস্থিত ছিলেন বিডিও সুদীপ্ত মণ্ডল, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সুদীপ মণ্ডল, প্রধান শিক্ষিকা কৃষ্ণা মিত্র। তাঁদের কথায়, ‘‘যে ভাবে দিনের পর দিন গাছ কেটে ফেলা হচ্ছে, তাতে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে। এ ভাবে দিকে দিকে গাছ লাগিয়ে সবুজায়ন করা উচিত।’’