গাইঘাটার একটি স্কুলে মিড ডে মিলের খাবারের মান পরীক্ষা করছেন শিক্ষকেরা। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক
স্কুলে স্কুলে মিড ডে মিল পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে রাজ্যে আসছে কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক দল। তার আগে ইতিমধ্যেই স্কুলগুলিতে নির্দেশিকা পাঠিয়েছে প্রশাসন। বিভিন্ন বিষয়ে সচেতন করা হয়েছে কর্তৃপক্ষকে।
দুই জেলার বিভিন্ন স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, রান্নাঘর ও খাওয়ার ঘর পরিচ্ছন্ন রাখা, চাল-ডাল রান্নার সামগ্রী ঢেকে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মিড ডে মিলের খাদ্যসামগ্রী কতটা রয়েছে, তা নথিবদ্ধ রাখতে বলা হয়েছে। স্কুলে শিক্ষক, অভিভাবক, রাঁধুনি-সহ কয়েক জনকে নিয়ে মিড ডে মিল কমিটি থাকার কথা। যে স্কুলে কমিটি নেই, সেখানে দ্রুত তা গঠন করার কথা বলা হয়েছে।
পড়ুয়াদের খেতে দেওয়ার আগে শিক্ষক, রাঁধুনি-সহ মাঝে মধ্যে দু’একজন অভিভাবককে ডেকে খাবার চাখতে বলার নিয়ম আছে। সেই নিয়ম কার্যকর করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অনেক স্কুলে হাত না ধুয়েই পড়ুয়ারা খেতে বসে যায়। সে দিকেও নজর দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
নিয়ম অনুযায়ী, রাঁধুনিদের টুপি, গ্লাভস, অ্যাপ্রন পরে রান্না করার কথা। তা যাতে সঠিক ভাবে পালন করা হয়, তা স্কুলগুলিকে জানানো হয়েছে।
কেন্দ্রীয় দল আসার আগে সব নিয়ম ঠিকঠাক আছে কি না, তা দেখতে স্কুলে পরিদর্শন করছেন ব্লক প্রশাসনের লোকজন। জয়নগর উত্তর চক্রের স্কুল পরিদর্শক কৃষ্ণেন্দু ঘোষ বলেন, “সব স্কুলই নিয়ম মেনে মিড ডে মিল দেয়। তা-ও সচেতন থাকার জন্য নির্দেশিকা পাঠানো হয়েছে। সব ঠিকঠাক আছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
সন্দেশখালি ২ ব্লকের স্কুল পরিদর্শক নবকুমার রায় বলেন, “যে সমস্ত স্কুলের মিড ডে মিলের রান্না বা খাওয়ার ঘর বেহাল, তাদের বিডিও বা স্কুল পরিদর্শককে জানাতে বলা হয়েছে।”
পর্যবেক্ষক দলের পরিদর্শনের জন্য তারা তৈরি বলেই জানিয়েছে অনেক স্কুল। বাসন্তীর নারায়ণতলা রামকৃষ্ণ বিদ্যামন্দিরের প্রধান শিক্ষক দীপককুমার কর বলেন, “সরকারি নির্দেশিকা মেনেই আমরা স্কুলে মিড ডে মিল চালাই। মাসে এক বার মাংস, মাসে অতিরিক্ত দু’বার ডিম, ফল সবই চালু করা হয়েছে। পর্যবেক্ষক দলকে স্বাগত। ওঁরা এসে খতিয়ে দেখুন। যদি কোনও সমস্যা থাকে, আমাদের জানালে সমাধান করব।”
ক্যানিং রায়বাঘিনি হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক সুমিত বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, “পর্যবেক্ষক দল আসছে বলে আলাদা করে কিছুই করার নেই। সমস্ত নিয়ম মেনেই স্কুলে মিড ডে মিল চলে।”
নির্দেশিকা পেয়ে অবশ্য সমস্যায় পড়েছে বেশ কিছু স্কুল। সেখানকার কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, এমনিতেই বরাদ্দ টাকায় মিড ডে মিল চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। তার উপরে তড়িঘড়ি রান্নাঘর-খাওয়ার ঘরের পরিকাঠামো ঠিক করা-সহ বিভিন্ন নির্দেশে সমস্যা বেড়েছে। কী করে সব সামাল দেওয়া যাবে, তা নিয়ে চিন্তিত তাঁরা।