ফেরা: বাড়ির লোকের সঙ্গে গুলাম। —নিজস্ব চিত্র
মাস পাঁচেক পর হ্যাম রেডিয়োর চেষ্টায় বাড়ি ফিরলেন মানসিক ভারসাম্য এক যুবক। বুধবার হিঙ্গলগঞ্জ থেকে গুলাম রসুল নামে ওই যুবককে তাঁর বাড়ির লোক ঝাড়খণ্ডে ফিরিয়ে নিয়ে যান।
সোমবার সন্ধ্যায় হিঙ্গলগঞ্জ বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক সুশান্ত ঘোষ তাঁকে বাজারে ঘুরতে দেখেন। তিনি ওই যুবকের নাম-ঠিকানা জানতে চান। ঝাড়খণ্ডের কমলপুর গ্রামের খোঁজ মেলে। এরপরেই শুরু হয় খোঁজ।
সুশান্ত জানান, গুলামের জন্য খাবারের ব্যবস্থা করতে যান তিনি। সে সময়ে গুলাম ফের নিখোঁজ হয়ে যান। শেষমেশ হ্যাম রেডিয়োর দ্বারস্থ হন সুশান্ত। গুলামের নাম ও গ্রামের নাম সুশান্ত হ্যাম রেডিয়োকে জানান। পাশাপাশি হিঙ্গলগঞ্জে গুলামের ছবি ও লিফলেট বিলিয়ে দেওয়া হয়। সোশ্যাল মিডিয়াতেও তাঁর সম্পর্কে লেখা হয়। এ দিকে হ্যাম রেডিয়োর সদস্যরা ঝাড়খণ্ডে পৌঁছন। খোঁজ শুরু হয় গুলামের বাড়ির। কমলপুর গ্রামে দু’বার গিয়েছেন হ্যাম রেডিয়োর সদস্যেরা। গুলামের ছবি দেখানো হয় গ্রামের মানুষকে। সে সময়ে ছেলের ছবি দেখে চিনতে পারেন গুলামের মা। মঙ্গলবারই গুলামের পরিবারের লোকজন রওনা দেন ঝাড়খণ্ড থেকে। বুধবার সকাল ৯টায় তাঁরা হিঙ্গলগঞ্জে পৌঁছন।
এ দিকে গুলামের তখনও কোনও খোঁজ নেই। বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ সৌমিত্র ঘোষ নামে এক ব্যক্তি গুলামকে হাসনাবাদের রূপমারি অটো স্ট্যান্ডে দেখেন। তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় গুলামের ছবি দেখেছিলেন। সঙ্গে সঙ্গে তিনি সুশান্তকে খবর দেন। সুশান্ত সেখানে গুলামের বাড়ির লোকজনকেও নিয়ে যান। গুলামকে ফিরে পেয়ে খুশি তাঁর বাড়ির লোক।
গুলামের পরিবার থেকে জানানো হয়, ওই যুবক রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন। স্ত্রী ও পাঁচ সন্তান রয়েছে। কিন্তু বছর চল্লিশের মানুষটি হঠাৎ মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েন। বাড়ির থেকে বেপাত্তা হয়ে যান।
গুলামের ভাই মহম্মদ কালাম বলেন, ‘‘হ্যাম রেডিয়ো এবং সুশান্তবাবুর জন্য আমরা দাদাকে পেলাম। কৃতজ্ঞ ওঁদের কাছে।’’
হ্যাম রেডিয়োর ওয়েস্ট বেঙ্গল রেডিয়ো ক্লাবের তরফ থেকে অম্বরীশ নাগ বিশ্বাস ও সুবীর দত্ত বলেন, ‘‘বৃহস্পতিবার বিশ্ব রেডিয়ো দিবস। তার আগেই হ্যাম রেডিয়োর তৎপরতায় ওই মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তিকে পরিবারের কাছে পৌঁছে দিতে পেরে আমরা খুশি। সুশান্তর ভূমিকাও প্রশংসনীয়।’’