পিএমের স্মারকলিপি
বনগাঁ মহকুমা জুড়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা। উপসর্গ থাকা আক্রান্তদের বারাসত, নিউটাউন বা ব্যারাকপুরের কোভিড হাসপাতালে ভর্তি করা হচ্ছে। বনগাঁ থেকে ওই হাসপাতালগুলির দূরত্ব অনেকটাই।
এ বার তাই বনগাঁয় কোভিড হাসপাতাল তৈরির দাবি উঠল। শুক্রবার বাম ও কংগ্রেসের পক্ষ থেকে কোভিড হাসপাতালের দাবি তুলে বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালের সুপার শঙ্করপ্রসাদ মাহাতোর কাছে স্মারকলিপি জমা দেওয়া হয়েছে। সিপিএমের বনগাঁ শহর এরিয়া কমিটির সম্পাদক সুমিত কর বলেন, ‘‘মহকুমা জুড়ে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। আক্রান্তদের চিকিৎসা পেতে দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে। আমরা হাসপাতাল সুপারের কাছে দাবি জানিয়েছি, মহকুমা হাসপাতালের একাংশকে কোভিড হাসপাতাল হিসাবে গড়ে তোলার।’’
হাসপাতালে ভর্তি কোনও রোগী মারা গেলে, তাঁর লালারস পরীক্ষার রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত মৃতদেহ পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া যাবে না বলেও দাবি করা হয়েছে বাম-কংগ্রেসের পক্ষ থেকে।
সম্প্রতি বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে মৃত দুই ব্যক্তির রিপোর্ট আসার আগেই মৃতদেহ পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছিল। যা নিয়ে চারিদিকে সমালোচনার ঝড় ওঠে।
স্মারকলিপিতে দাবি করা হয়েছে, মহকুমা হাসপাতালে ভেন্টিলেটরের ব্যবস্থা করতে হবে। হাসপাতালে ২৪ ঘণ্টার হেল্প লাইন চালু করতে হবে। করোনা সন্দেহে বা করোনা আক্রান্তদের বিনামূল্যে অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা চালুও দাবি তোলা হয়েছে।
গত শনিবার মহকুমা হাসপাতালে এক বৃদ্ধ পড়ে গিয়ে মারা গিয়েছেন। ওই ঘটনার তদন্ত দ্রুত শেষ করে দোষীদের শাস্তির ব্যবস্থা করার দাবিও বামেদের তরফে করা হয়েছে। হাসপাতাল সুপার বলেন, ‘‘কোভিড হাসপাতাল তৈরির বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। ২৪ ঘণ্টা হেল্প লাইন নম্বর চালু করতে পদক্ষেপ করা হচ্ছে।’’
বামেদের পাশাপাশি বনগাঁর বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক, সাহিত্য পত্রিকা, মানবাধিকার সংগঠনের পক্ষ থেকেও পুরপ্রশাসকের কাছে বনগাঁয় কোভিড হাসপাতাল তৈরির দাবি করা হয়েছে। একই সঙ্গে মহকুমা হাসপাতালেই লালারস পরীক্ষার ব্যবস্থা করা এবং বনগাঁয় একটি সেফ হাউজ় তৈরির দাবি উঠেছে।
বনগাঁর পুরপ্রশাসক শঙ্কর আঢ্য বলেন, ‘‘বনগাঁয় কোভিড হাসপাতাল এবং সেফ হাউজ় তৈরির দাবি জানিয়ে স্বাস্থ্য দফতর ও প্রশাসনের কাছে চিঠি দেওয়া হয়েছে।’’ প্রশাসনের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, বনগাঁ শহরে কবিগান অ্যাকাডেমিকে সেফ হাউজ় তৈরির পরিকল্পনা করা হয়েছে।
স্বাস্থ্য দফতর ও প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, মহকুমায় শুক্রবার পর্যন্ত করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ২৮৫ জন। সব থেকে বেশি আক্রান্ত বনগাঁ ব্লকে। সেখানে আক্রান্তের সংখ্যা ১১৩ জন। শুক্রবারই বনগাঁ ব্লকে একই পরিবারের ৭ সদস্য সহ ১১ জন নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন বিএমওএইচ মৃগাঙ্ক সাহা রায়। বাগদায় আক্রান্তের সংখ্যা ৪০ জন। গাইঘাটা ব্লকে আক্রান্তের সংখ্যা ৮২ জন। বনগাঁ শহরে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৫০ জন। শুক্রবার নতুন করে ৫ জন আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন পুরপ্রশাসক।