খাদ্য-বিলি: ক্যানিংয়ের বিভিন্ন জায়গায়। ছবি: সামসুল হুদা
‘মিশন ইম্পসিবল’ নয়। এদের কাহিনির নাম হওয়া উচিত বরং ‘মিশন পসিবল’।
অসম্ভবকে সম্ভব করার যুদ্ধ চালাচ্ছে ‘রবিনহুড আর্মি’। যাদের দু’বেলা দু’মুঠো খাবার জোটে না, সেই সব পথশিশু ও অসহায় মানুষের মুখে খাবার তুলে দেয় তারা। সদ্য পার হওয়া স্বাধীনতা দিবসে এদের এক বিশেষ কর্মসূচি লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছল। বিভিন্ন হোটেল, রেস্তোরাঁ কিংবা অনুষ্ঠান বাড়ির উদ্বৃত্ত খাবার সংগ্রহ করে অসহায় মানুষের মুখে তুলে দেওয়ার কাজটি তারা সারা বছরই করে। ১৫ অগস্ট ‘মিশন মিলিয়ন ২০১৮’ নামের তাদের সেই কর্মসূচিতে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের প্রায় ১০ লক্ষ অসহায় মানুষের মুখে খাবার তুলে দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছিল তারা।
সেই কর্মসূচিরই অংশ হিসেবে এই স্বাধীনতা দিবসে তারা সুন্দরবন এলাকার মানুষের দিকেও হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। ক্যানিং ১ ব্লকের কার্গিল পাড়া, নিকারিঘাটা, ক্যানিং স্টেশন চত্বর-সহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকার এমন প্রায় ১০০০ অসহায় মানুষ ও পথশিশুদের মুখে তারা খাবার তুলে দেয়। পোলাও, আলুরদম, কেক, বিস্কুট-সহ নানা রকম খাবার দেওয়া হয়। কলকাতার বাসিন্দা নীল ঘোষ ২০১৪ সালের ১৪ অগস্ট দিল্লিতে তাঁর কয়েকজন সঙ্গীকে নিয়ে ‘রবিনহুড আর্মি’ গড়ে তোলেন। সেই শুরু। বাড়তে বাড়তে রবিনহুড আর্মির সদস্য সংখ্যা এখন ১৬ হাজার ছাড়িয়েছে। সারা দেশের ৬০টি শহরে এবং বিশ্বের ১৬টি দেশে তারা কাজ করছে। এ জন্য কোনও আর্থিক অনুদানও নেওয়া হয় না, দাবি আর্মির।
রবিনহুড আর্মির হিসাব অনুযায়ী, ভারতে প্রতি বছর প্রায় ৪০ শতাংশ উদ্বৃত্ত খাবার নষ্ট হয়। যার আনুমানিক মূল্য প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা। বিভিন্ন হোটেল, অনুষ্ঠান বাড়িতেও উদ্বৃত্ত খাবারের প্রায় ২০ শতাংশ নষ্ট হয়। আর্মির সদস্য সৈয়দ মঞ্জুর রহমান বলেন, ‘‘প্রথম দিকে অনেকে আমাদের সহযোগিতা না করলেও এখন বিভিন্ন হোটেল, রেস্তোরাঁর মালিকরা ডেকে তাঁদের উদ্বৃত্ত খাবার আমাদের হাতে তুলে দিচ্ছেন।’’