Crocodile

Crocodile: ব্রিটিশ জমানার পরে ফের মগরের দেখা হুগলি নদীতে! ফলতায় উদ্ধার করল বনবিভাগ

স্থানীয় সূত্রের খবর, বুধবার দুপুরে ‘বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল’-এর মধ্যে কুমিরটিকে দেখতে পান কর্মীরা। নিমেষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়ায় এলাকায়।

Advertisement

সৈকত ঘোষ

ডায়মন্ড হারবার শেষ আপডেট: ২২ সেপ্টেম্বর ২০২১ ২০:১৪
Share:

ফলতায় উদ্ধার হওয়া মিষ্টি জলের কুমির। নিজস্ব চিত্র।

ফলতার বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের জলাশয় থেকে উদ্ধার হল পূর্ণবয়স্ক একটি মিষ্টি জলের কুমির (মগর)। গত কয়েক দশকের মধ্যে এই প্রথম দক্ষিণবঙ্গের গঙ্গায় দেখা পাওয়া গেল এই প্রজাতির কুমির।

স্থানীয় সূত্রের খবর, বুধবার দুপুরে ‘বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল’-এর মধ্যে কুমিরটিকে দেখতে পান কর্মীরা। নিমেষে আতঙ্ক ছড়ায় এলাকায়। পরে ভগবতপুর কুমির প্রকল্প থেকে রেঞ্জার তন্ময় চট্টোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে বনকর্মীরা এসে বেশ কিছুক্ষণের চেষ্টায় কুমিরটিকে উদ্ধার করে নিয়ে যান। আপাতত পাথরপ্রতিমার ভগবতপুর কুমির প্রকল্পে নিয়ে যাওয়া হয়েছে সেটিকে।

Advertisement

বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে,ফলতার বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের (এসইজেড) মধ্যে জলাশয় লাগোয়া ছোট নালার মাধ্যমে কুমিরটি হুগলি নদী থেকে ঢুকে পড়েছিল। বন দফতরের ডায়মন্ড হারবার অফিসে খবর পাঠানো হলেও সেখানে কুমির ধরার প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কর্মী ছিলেন না। ফলে ভগবতপুর কুমির প্রকল্প থেকে বনকর্মীদের আসতে হয়। তন্ময় জানিয়েছেন, উদ্ধার হওয়া কুমিরটির দৈর্ঘ প্রায় ৫ ফুট।

দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিভাগীয় বনাধিকারিক (ডিএফও) মিলন মণ্ডল বলেন, ‘‘উদ্ধার হওয়া কুমিরটি নোনাজলের নয়। ফলে কুমির প্রকল্পের মধ্যে আলাদা জলাশয়ে এটিকে রেখে বিশেষ পরিচর্যা নেওয়া হচ্ছে।’’ তিনি জানান, সম্প্রতি প্রবল বৃষ্টির জেরে হুগলি নদীতে জলস্ফীতির জেরেই সম্ভবত মগরটি ‘স্লুইস গেট’ পার করে ওই জলাশয়ে ঢুকে পড়েছিল।

Advertisement

রাজ্যের প্রধান মুখ্য বনপাল (বন্যপ্রাণ) দেবল রায় আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেন, ‘‘সুন্দরবনের নদী-খাঁড়িতে নোনাজলের কুমিরের দেখা মেলে। মিষ্টি জলের কুমিরের বসতি এই অঞ্চলে নেই।’’ তিনি জানান, বিগত কয়েক দশকে পশ্চিমবঙ্গে বিচ্ছিন্ন ভাবে কয়েকটি মিষ্টি জলের কুমির দেখা গেলেও এ রাজ্যে তাদের চিহ্নিত কোনও বসতিক্ষেত্র নেই।

রাজ্য বন্যপ্রাণ উপদেষ্টা পর্ষদের সদস্য জয়দীপ কুণ্ডু জানান, ভারতে পাওয়া তিন প্রজাতির কুমিরের মধ্যে মগরের মুখ সবচেয়ে চওড়া। ব্রিটিশ জমানার পুরনো নথিতে গঙ্গার নিম্নপ্রবাহে মগরের উপস্থিতির কথা বলা রয়েছে। তবে বহু বছর ২৪ পরগনায়, তাদের দেখা মেলেনি। তিনি বলেন, ‘‘হুগলি থেকে মালদহ পর্যন্ত গঙ্গার বিভিন্ন স্থানে ঘড়িয়ালের বসতি রয়েছে। পশ্চিমবঙ্গে গঙ্গা বা অন্য কোনও নদীতে মগর প্রজাতির কুমিরের বসতি রয়েছে কি না, তা সমীক্ষা করে দেখা প্রয়োজন।’’

সরীসৃপ বিশেষজ্ঞ অনির্বাণ চৌধুরীর কথায়, ‘‘ব্রিটিশ আমলে গঙ্গা, পদ্মা, ব্রহ্মপুত্র-সহ পূর্ব ভারতের নানা মিষ্টি জলের নদী এবং জলাশয়ে মগরের সন্ধান পাওয়া যেত। কিন্তু বহু বছর আগেই পশ্চিমবঙ্গ থেকে এই প্রজাতির কুমির লুপ্ত হয়ে গিয়েছে বলে মনে করা হয়। ২০১৬-য় নদিয়ার করিমপুরে জলঙ্গি নদী থেকে একটি মগর উদ্ধার হয়। ২০১৮ সালে মালদহের পঞ্চানন্দপুরের কাছে গঙ্গা থেকে একটি মিষ্টি জলের কুমির উদ্ধার করা হয়েছিল। সে সময় মনে করা হয়, কুমিরটি বিহার থেকে চলে এসেছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement