এইসব বাজার বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ছবি: সুজিত দুয়ারি।
পুর এলাকায় করোনা সংক্রমণ ক্রমশ বাড়ছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে পদক্ষেপ করল অশোকনগর-কল্যাণগড় পুরসভা ও পুলিশ।
মঙ্গলবার পুরভবনে ব্যবসায়ী সংগঠনের প্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠক করেন পুরকর্তৃপক্ষ ও পুলিশ-প্রশাসনের কর্তারা। বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, আগামী তিন সপ্তাহ ধরে প্রতি সপ্তাহের শুক্র ও শনিবার এলাকার সমস্ত বাজার, দোকানপাট বন্ধ থাকবে। তবে জরুরি পরিষেবা চালু থাকবে। তিন সপ্তাহ পরে পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
বৈঠকে মুখ্য পুরপ্রশাসক উৎপল তালুকদার-সহ অশোকনগর-কল্যাণগড় ব্যবসায়ী সমন্বয় কমিটির অন্তর্গত ২৪টি বাজার সমিতির প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। উপ পুরপ্রশাসক অতীশ সরকার জানান, পুর এলাকায় মঙ্গলবার পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত সক্রিয় রোগীর সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১২০। অশোকনগর স্টেট জেনারেল কোভিড হাসপাতালে চিকিৎসক-নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীরা একের পর এক আক্রান্ত হচ্ছেন। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার পর্যন্ত হাসপাতালে আক্রান্তের সংখ্যা ১৩। এ সবের প্রেক্ষিতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হল।
পুরসভা সূত্রে জানানো হয়েছে, বাজার বন্ধ থাকলেও ওষুধ, দুধ ও মিষ্টির দোকান খোলা থাকবে। এ ছাড়া, অশোকনগর স্টেশন-সংলগ্ন সাইকেল ও বাইক রাখার গ্যারেজগুলি খোলা থাকবে। প্রতিদিন বহু মানুষ এই গ্যারেজগুলিতে সাইকেল-বাইক রেখে ট্রেন ধরে কর্মস্থলে যান। অনেকেরই ফিরতে রাত হয়। তাঁদের কথা ভেবেই এই সিদ্ধান্ত।
অতীশ বলেন, ‘‘ওই দু’দিন এলাকার মদের দোকানগুলিও বন্ধ রাখার বিষয়ে পুলিশ-প্রশাসনের কাছে আবেদন করা হয়েছে।’’
পুর এলাকার গোলবাজারে রোজ ভোর ৫টা থেকে মাছের পাইকারি বাজার বসে। নদিয়া থেকেও মাছ ব্যবসায়ীরা গোলবাজারে আসেন। সকালে হাজার তিনেক ব্যবসায়ী এখান থেকে মাছ কিনে বিভিন্ন বাজারে বিক্রি করেন। কিন্তু বাজারে ভিড়ের মধ্যে শারীরিক দূরত্ব বজায় থাকে না। অনেকেই কেনাবেচা করেন মাস্ক ছাড়া।
গোলবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক গুপি মজুমদার সপ্তাহে দু’দিন বাজার বন্ধের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘এলাকায় করোনার প্রকোপ কমাতে পুরসভা ও প্রশাসনের সিদ্ধান্তকে আমরা কঠোর ভাবে মেনে চলব। ক্রেতা-বিক্রেতাদের আমরা সচেতন করছি।’’
বুধবার গোলবাজার, কল্যাণগড় বাজার, কচুয়া মোড় বাজারে ঘুরে দেখা গেল, ক্রেতা-বিক্রেতাদের অনেকেই মাস্ক পরেছেন। তবে অনেকে এখনও সচেতন নন। কারও কারও মাস্ক ঝুলছিল থুতনি, কানে। যদিও পুলিশের দাবি, বাজার এলাকায় ক্রেতা ও বিক্রেতাদের মাস্ক পরতে বাধ্য করা হয়েছে। জটলা ভেঙে দেওয়া হয়েছে। নিয়মিত চলছে ধরপাকড়।
থানা সূত্রে জানানো হয়েছে, বুধবার সকালে মাস্ক না পরে বেরোনোর অভিযোগে ১২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ দিন অশোকনগরের প্রাক্তন বিধায়ক ধীমান রায় কল্যাণগড় বাজার এলাকায় কয়েকজন তৃণমূল কর্মী-সমর্থককে নিয়ে মাস্ক বিলি করেন। প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে না বেরোনোর আবেদন করেন।