আগামী শনিবার বন্ধ থাকবে হাবড়ায় এই বস্ত্রহাট। ছবি: সুজিত দুয়ারি
শহরে ক্রমশ বাড়ছে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা। এই পরিস্থিতিতে বেশ কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করার সিদ্ধান্ত নিল হাবড়া পুরসভা ও হাবড়া থানা। পুরসভা সূত্রে জানানো হয়েছে, সোমবার পর্যন্ত হাবড়া শহরে সক্রিয় করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ১০১ জন। পুরপ্রশাসক নারায়ণ সাহা বলেন, ‘‘করোনা পরিস্থিতিতে আগামী শুক্রবার একদিনের জন্য শহর এলাকায় হাট-বাজার, দোকান সব বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে পুরসভা ও থানার পক্ষ থেকে। ওই দিন শুধুমাত্র ওষুধ, দুধ-সহ জরুরি পরিষেবা চালু থাকবে।’’
হাবড়ার জয়গাছি সুপার মার্কেটে সপ্তাহের বুধ ও শনিবার পাইকারি বস্ত্রহাট বসে। নদিয়া ও উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে ক্রেতা-বিক্রেতারা ভিড় করেন। সেখানে স্বাস্থ্যবিধি বজায় রাখা সম্ভব নয়। পুরপ্রশাসক জানান, আগামী শনিবার বস্ত্রহাট বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পরবর্তী সময়ে পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে ফের কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
এ দিকে, পুরসভার পক্ষ থেকে পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের সচেতন করার কাজ শুরু হয়েছে। পুরপ্রশাসক ও হাবড়া থানার আইসি অরিন্দম মুখোপাধ্যায় শহরের মানুষকে পথে নেমে করোনা বিধি নিয়ে সচেতন করছেন। পুরপ্রশাসক ব্যবসায়ীদের কাছে আবেদন করে বলছেন, মাস্ক ছাড়া কোনও ক্রেতাকে যেন মালপত্র বিক্রি করা না হয়। ব্যবসায়ীদের দোকানে মাস্ক মজুত রাখতে বলা হচ্ছে। কোনও ক্রেতার মাস্ক না থাকলে তাঁকে মাস্ক দিতে হবে।
পাশাপাশি চলছে ধরপাকড়। পুলিশ জানিয়েছে, মঙ্গলবার মাস্ক না পরে পথে বেরোনোর অভিযোগে ১১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে শহরের মানুষের মাস্ক পরার প্রবণতা বাড়ছে।
হাবড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে সোমবার আরও ১ চিকিৎসক এবং ৩ জন স্বাস্থ্যকর্মী করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। সব মিলিয়ে হাসপাতালে আক্রান্তের সংখ্যা ৩০ জন। তাঁদের মধ্যে আছেন চিকিৎসক, নার্স ওয়ার্ডবয়, ওটি কর্মী, সাফাইকর্মী, চতুর্থ শ্রেণির কর্মী। চিকিৎসকদের কারও কারও পরিবারের সদস্যেরাও করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।
এর ফলে রোগীদের পরিষেবা দিতে রীতিমতো হিমশিম খেতে হচ্ছে হাবড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে। জরুরি অস্ত্রোপচার ছাড়া বাকি অস্ত্রোপচার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন হাসপাতাল সুপার বিবেকানন্দ বিশ্বাস। হাসপাতাল সূত্রে জানানো হয়েছে, ৮০টি কোভিড শয্যা চালু করার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ৫০টি কোভিড শয্যা ইতিমধ্যেই চালু হয়েছে। সোমবার পর্যন্ত ১১ জন করোনা আক্রান্ত রোগী হাসপাতালে ভর্তি আছেন।
সুপার বলেন, ‘‘চিকিৎসক নার্স স্বাস্থ্যকর্মী, ওটি কর্মীরা করেনায় আক্রান্ত হওয়ায় এবং কোভিড শয্যা চালু হওয়ায় এখন সিজার ও জরুরি অস্ত্রোপচার ছাড়া আর কোনও অস্ত্রোপচার করা হচ্ছে না।’’
হাসপাতাল সূত্রে জানানো হয়েছে, হাবড়া হাসপাতাল চত্বরে ১০০ শয্যার একটি কোভিড হাসপাতাল অনুমোদন হয়েছে। এটি কেন্দ্রের প্রকল্প। ওই হাসপাতালটি তৈরির জন্য হাসপাতাল চত্বরে থাকা পুরনো পরিত্যক্ত ভবন ভাঙার কাজ দ্রুত গতিতে চলছে।