এবড়ো-খেবড়ো: এই পথেই যাতায়াত। বারাসতে। ছবি: সুদীপ ঘোষ
গঙ্গার পরিশোধিত জল পৌঁছে দেওয়ার জন্য রাস্তা খুঁড়ে বসানো হয়েছিল পাইপ। গত বর্ষায় কথা ছিল, রাস্তা সারানো হবে শীঘ্রই। কিন্তু বছর পেরোলেও বারাসত পুরসভার প্রতিটি ওয়ার্ডে বেহাল অবস্থা রাস্তার।
টিটাগড় থেকে গঙ্গার জল পরিশোধিত হয়ে নিউ ব্যারাকপুর, মধ্যমগ্রাম, বারাসত পুরসভার ঘরে ঘরে পৌঁছে দেওয়ার কাজ শেষ হয়েছে। তবে রাস্তা এবড়ো খেবড়ো হয়ে পড়ে থাকায় মাটি-কাদায় একাকার হয়ে যাতায়াত করাই দায় বারাসতে।
৪৪৫ কোটি টাকা ব্যয়ে গঙ্গার ওই পানীয় জলপ্রকল্পের জন্য খোঁড়াখুড়ি হয়েছিল ৩৫টি ওয়ার্ডেই। টিটাগড় থেকে ওই জল এসে জমা হচ্ছে কোরা এলাকায়। সেখানেই জল পরিশোধন হয়ে বিভিন্ন ওয়ার্ডে যাওয়ার জন্য রাস্তার নীচে পাইপ বসানো হয়েছে। তাতেই দেখা দিয়েছে এমন বিপত্তি।
মানুষের দুর্ভোগের কথা স্বীকার করে বারাসতের চেয়ারম্যান সুনীল মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ‘‘ওই কাজে কেএমডিএ-র বরাদ্দ টাকা শেষ। বাকি টাকা পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর দেবে বলে জানিয়েছে। কোন রাস্তায় কত খরচ পড়বে, তা জানানো হয়েছে। টাকা এলেই কাজ শুরু হবে।’’
এলাকায় গিয়ে জানা গেল, খোঁড়া রাস্তার জন্য পাঁচশো মিটার যেতে দেড় কিমি ঘুরতে হচ্ছে। বৃষ্টি হলেই চলাচল বাড়ছে সমস্যা। হৃদয়পুরের বাসিন্দা আশিস গুহের বক্তব্য, ‘‘আবার বর্ষা আসবে ভেবেই ভয় হচ্ছে। গত বর্ষায় মোটরবাইক চালানোই ঝুঁকির হয়ে দাঁড়িয়েছিল। এ বারও তো রাস্তা সারাই হল না।’’ নবপল্লির বাসিন্দা নবনীতা রায় আবার বলেন, ‘‘সাইকেল ভ্যানে উঠলে খুব ভয় করে। রাস্তাঘাট এখনও ঠিক হল না।’’
বারাসতের বাসিন্দাদের বক্তব্য, যশোর রোড, কেএনসি রোডের মতো কিছু বড় রাস্তা বাদ দিলে ভিতরে ভিতরে অধিকাংশ রাস্তাই কমবেশি খোঁড়া। একটু হাওয়া দিলেই ধুলোয় ভরে যাচ্ছে এলাকা। এক বাসিন্দার কথায়, লোডশেডিংয়ের মধ্যে বিপত্তি বাড়ছে। প্রায়শই ঘটছে দুর্ঘটনা।
জেলাসদর বলে বারাসতে অফিস-কাছারি-বিশ্ববিদ্যালয়ে রোজ বাইরে থেকে প্রচুর মানুষ আসেন। এক দিকে খোঁড়া রাস্তা, তার উপরে দাঁড়িয়ে থাকছে টোটো, ভ্যান রিকশা। অশোকনগরের বাসিন্দা মিলন দেবের কথায়, ‘‘এমনিতেই রাস্তায় যানজট থাকে। তার উপরে খোঁড়াখুড়ির জন্য গাড়ি নিয়ে যাতায়াত করা খুবই সমস্যার হয়ে দাঁড়িয়েছে।’’ তবে সুনীলবাবু জানিয়েছেন, ‘‘শীঘ্রই যাতে কাজ শুরু করা যায় সে ব্যাপারে তদ্বির করা হবে।’’