River Dams

বিপজ্জনক নদী বাঁধ, আশঙ্কায় বাসিন্দারা

প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ডায়মন্ড হারবার ২ ব্লকের নুরপুর পঞ্চায়েতের শ্রীফলবেড়িয়া গ্রামের কাছে হুগলি নদীর বাঁধে প্রায় ১০০ মিটার অংশে বিপজ্জনক ভাবে ধস নেমেছে।

Advertisement

দিলীপ নস্কর

ডায়মন্ড হারবার শেষ আপডেট: ২২ জুন ২০২০ ০৫:২৫
Share:

ডায়মন্ড হারবার ২ ব্লকে শ্রীফলতলা গ্রামের কাছে বেহাল নদীবাঁধ। নিজস্ব চিত্র

অমাবস্যার কোটালের শুরুতেই কাকদ্বীপ ও ডায়মন্ড হারবার এলাকার বিভিন্ন নদী বাঁধ বিপজ্জনক চেহারা নিয়েছে। রবিবার অনেক জায়গাতেই নদীর জল বেড়ে বাঁধের কাছাকাছি চলে এসেছে। কোথাও কোথাও জল উপচেও পড়েছে। নদী বাঁধে ছোট ছোট ফাটল ধরেছে কিছু কিছু জায়গায়। তবে সেচ দফতর ও পঞ্চায়েতের তৎপরতায় জল আটকানো গিয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের আশঙ্কা, আগামী দু’দিনে জল আরও বাড়লে বাঁধ ভেঙে এলাকা প্লাবিত হতে পারে।

Advertisement

প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ডায়মন্ড হারবার ২ ব্লকের নুরপুর পঞ্চায়েতের শ্রীফলবেড়িয়া গ্রামের কাছে হুগলি নদীর বাঁধে প্রায় ১০০ মিটার অংশে বিপজ্জনক ভাবে ধস নেমেছে। বছর কয়েক ধরেই ওই বাঁধটি ভাঙতে শুরু করেছিল। পাকাপাকি ভাবে মেরামতি না হওয়ায় ভাঙতে ভাঙতে একেবারেই সরু হয়ে গিয়েছে। এলাকার বাসিন্দারা জানান, বাঁধটি পাকাপাকি ভাবে তৈরির জন্য একাধিকবার প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। কিন্ত কোনও ভাবেই তা করা হয়নি। স্থানীয় বাসিন্দা সমর পাল, শ্যামলী দাসরা বলেন, “এই বাঁধটি সামনের দিকে প্রায় ২০০ মিটার দূরে ছিল। প্রতি বছর ভাঙতে ভাঙতে এগিয়ে আসছে। বর্তমানে বাঁধের অবস্থা বিপজ্জনক। কিন্তু সংস্কারের কাজ শুরু হয়নি। মাস কয়েক আগে বাঁশ পুঁতে, মাটির বস্তা ফেলে মেরামতি হলেও তা জলের ধাক্কায় ধুয়ে গিয়েছে। যে কোনও মুহূর্তে বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হবে এলাকা।”

এই নদী পথ দিয়ে বড় বড় জাহাজ কলকাতা বন্দরে চলাচল করে। জাহাজ চলে যাওয়ার পর বড় বড় ঢেউ এসে আছড়ে পড়ে বাঁধের উপরে। তার জেরেই বাঁধ দিন দিন আরও খারাপ হয়ে যাচ্ছে বলেই জানান স্থানীয় মানুষজন।

Advertisement

ডায়মন্ড হারবার মহকুমার কুলপি ব্লকেও বেশ কয়েকটি জায়গায় হুগলি নদীর বাঁধে ধস নেমেছে। আপাতত কোথাও মাটির বস্তা, ইট ফেলে অস্থায়ী ভাবে সারানো হয়েছে।

কাকদ্বীপ মহকুমার এলাকায় সাগরের ঘোড়ামারা পঞ্চায়েতে নদী বাঁধ খুবই বিপজ্জনক অবস্থায় রয়েছে বলে বাসিন্দারা জানিয়েছেন। ওই এলাকার বাসিন্দা অরুণ প্রামাণিক জানান, জল না ঢুকলেও বাঁধের অবস্থা ভাল নয়। বর্ষায় দুশ্চিন্তায় থাকতে হবে।

আমপানের জেরে পাথরপ্রতিমা ব্লকের গোপালনগর পঞ্চায়েতের উত্তর গোপালনগর গ্রামের কাছে গোবদিয়া নদী বাঁধ প্রায় দেড় কিলোমিটার ভেঙে তছনছ হয়েছিল। সেচ দফতর ও পঞ্চায়েত থেকে তা অস্থায়ী ভাবে সারানো হয়েছে। তবে কোটালের জোয়ারের জল কাণায় কাণায় পূর্ণ হওয়ায় কোথাও কোথাও ধস নেমেছে। তবে বাঁধ ভেঙে জল ঢোকেনি।

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই ব্লকের বিভিন্ন পঞ্চায়েত এলাকায় নদী ও সমুদ্র বাঁধ আমপানে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। ভেঙে যাওয়া বাঁধগুলি সেচ দফতর ও পঞ্চায়েত থেকে অস্থায়ী ভাবে মেরামতি করা হয়েছে।

পাথরপ্রতিমা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি শেখ রাজ্জাক বলেন, “এই এলাকার মূলত পাঁচটি পঞ্চায়েতে নদী বাঁধ ভেঙেছিল। ভাঙনগুলি অস্থায়ী ভাবে সারানো হয়েছে। এখনও পর্যন্ত কোথাও জল ঢুকছে বলে খবর পাইনি।”

সেচ দফতর সূত্রের খবর, কাকদ্বীপ মহকুমা এলাকার ভেঙে যাওয়া সমস্ত বাঁধ অস্থায়ী মেরামতির কাজ হয়েছে। কোথাও এখনও কাজ চলছে। বর্ষার পরে পাকাপাকি ভাবে বাঁধ নির্মাণ করা হবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement