বন্ধ-মিল: নোটিস দেখছেন শ্রমিকেরা। ছবি: মাসুম আখতার
সাত মাস পর ফের ঝাঁপ বন্ধ হল শ্যামনগরের উইভারলি জুটমিলে। কাজ হারালেন প্রায় আড়াই হাজার শ্রমিক। শনিবার সকালে শ্রমিকেরা কাজে গিয়ে দেখেন, গেট বন্ধ। সাসপেনশন অফ ওয়ার্কের নোটিস সাঁটানো। কাঁচা পাটের অভাবে আপাতত চটকল বন্ধ রাখা হচ্ছে বলে নোটিসে জানানো হয়েছে।
শ্রমিকদের বক্তব্য, কাঁচা পাটের সমস্যা রয়েছে ঠিকই, কিন্তু তা এমন পর্যায়ে পৌঁছয়নি যে মিল বন্ধ করে দিতে হবে। শ্রমিকদের অভিযোগ, অবসরপ্রাপ্তদের প্রভিডেন্ট ফান্ড এবং গ্র্যাচুইটির টাকা বকেয়া রয়েছে। গত ১৫ দিনের বেতনও দেওয়া হয়নি শ্রমিকদের। এ দিন সাসপেনশন অব ওয়ার্কের নোটিসে অবশ্য বলা হয়েছে, যাদের দৈনিক মজুরি বকেয়া রয়েছে, পরবর্তী কাজের দিনে তা মিটিয়ে দেওয়া হবে।
দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন সমস্যায় ভুগছিল উইভারলি চটকলটি। জানুয়ারিতে আচমকা সাসপেনশন অব ওয়ার্কের নোটিস ঝুলিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয় মিল। শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে ফেব্রুয়ারির ১৭ তারিখে ফের চালু হয় মিল। আলোচনায় ঠিক হয়েছিল, শ্রমিকদের বকেয়া বেতন মেটানো হবে। কারখানার যন্ত্রপাতির মেরামতির কাজও হবে। শ্রমিকদের অভিযোগ, তা না করেই মিল চালু করার চেষ্টা করা হয়। কাঁচামালের জোগানও ছিল না।
২০ ফেব্রুয়ারি সাত সকালে চটকলের সামনে শুরু হয় শ্রমিক বিক্ষোভ। শ্রমিকদের একাংশ মিলের ভিতরে ঢুকে পড়ে। হামলা হয় আধিকারিকদের আবাসনে। ভাঙচুর হয় সেখানে। চটকলের সিইও অর্ঘ্য চট্টোপাধ্যায়ের গাড়ি-সহ দু’টি গাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া হয়।
লকডাউন কিছুটা শিথিল হতেই ১৮ মে শ্রমিকদের বকেয়া মিটিয়ে ফের মিল চালু হয়। প্রথমে ১৫০ জন শ্রমিককে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে কেবলমাত্র সকালের শিফট চালু হয়েছিল। কিছু দিনের মধ্যে মিল পুরোদমে চালু হয়। কিন্তু এ দিন ফের বন্ধ হয়ে গেল। শ্রমিকেরা কারখানার সামনে ক্ষোভ-বিক্ষোভ দেখান।
চটকলের শ্রমিকনেতা অজয় রায় জানান, অবসরপ্রাপ্ত শ্রমিকদের বকেয়ার দাবিতে গত কয়েক দিন ধরে শ্রমিক অসন্তোষ শুরু হয়েছিল। বিভিন্ন দাবিদাওয়া নিয়ে গোলমাল চলছিল। তাঁর অভিযোগ, সে জন্যই কর্তৃপক্ষ চটকল বন্ধ করে দিলেন।
কারখানার সিইও অর্ঘ্য চট্টোপাধ্যায়কে ফোন করা হলে তিনি ফোন ধরেননি। জবাব দেননি হোয়াটসঅ্যাপ বার্তারও।