বিদায়-বেলায়: প্রতিমার ছবি ফ্রেমবন্দি করে রাখছেন এক তরুণী। সন্দেশখালির রামপুরে রবিবার ছবিটি তুলেছেন নবেন্দু ঘোষ।
ইছামতীর দূষণ ঠেকিয়ে প্রশংসা কুড়িয়েছিল বনগাঁ পুরসভা। তবে বিসর্জনের ভিড় কতটা এড়ানো যাবে, তা নিয়ে সংশয় ছিল। এর আগে শুক্র-শনিবার বিসর্জনে ভিড় কমও হয়নি বনগাঁ শহরে। রবিবার জমায়েতের আশঙ্কা আরও বেশি ছিল। এদিন বহু প্রতিমা বিসর্জনের কথা ছিল শহরে। তবে দিনভর বৃ্ষ্টিতে লোকজন কমই বেরোলেন পথেঘাটে। স্বস্তির ছাপ পুলিশ-প্রশাসনের কর্তাদের মুখেও।
এ দিন টানা বৃষ্টির জেরে বহু প্রতিমাই শোভাযাত্রা ছাড়া বিসর্জন দিতে বাধ্য হয়েছেন উদ্যোক্তারা। তবে অনেকে জমকালো শোভাযাত্রার পরিকল্পনা করেছিলেন, তা অস্বীকার করছেন না। বৃষ্টিতে সে সব ভেস্তে যাওয়ায় মনোক্ষুণ্ণ অনেকে পুজো কমিটির কর্তাই।
এ দিকে, নদী দূষণের অভিযোগ উঠেছে বসিরহাট মহকুমার নানা প্রান্তে। শুক্রবার বিসর্জনের পরে দিন দু’য়েক কেটে গেলেও ইছামতীর চরে এখনও জমে রয়েছে কাঠামো, ফুল, বেলপাতা-সহ নানা সামগ্রী। স্থানীয় বাসিন্দাদের আশঙ্কা, দ্রুত নদী পরিষ্কার না হলে জলদূষণ ছড়িয়ে পড়বে।
প্রতিবারের মতো এ বারও বিজয়া দশমীতে বসিরহাট মহকুমার সীমান্ত-লাগোয়া টাকির ইছামতী নদীতে বহু প্রতিমা বিসর্জন হয়। একই দিনে বসিরহাট এবং বাদুড়িয়াতেও প্রতিমা নিরঞ্জন হয়েছে। বিসর্জন পরবর্তী দূষণ রুখতে প্রশাসনের তরফে অবশ্য নানা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল। নদীর ঘাটে আলাদা জায়গায় ফুল, বেলপাতা, কলাগাছ ফেলার ব্যবস্থা হয়। ফলে অধিকাংশ জায়গায় এই সব সামগ্রী সরাসরি নদীর জলে মেশেনি। বিজয়ার পরে প্রতিমার কাঠামো পরিষ্কারের কাজও চলছে জোরকদমে। স্থানীয় মানুষজন জানালেন, বসিরহাটে ইছামতীর জলে জোয়ার-ভাটা খেলায় নদীতে পড়া কাঠামোর অধিকাংশ ভেসে গিয়েছে। তবে বেশ কিছু জায়গায় নদীর চরে কাঠামো ও অন্যান্য সামগ্রী জমে রয়েছে বলে অভিযোগ।
টাকিতে ইছামতী নদীতে প্রতিবারই বহু প্রতিমা বিসর্জন হয়। রাজবাড়ি ঘাট, শ্মশান ঘাট-সহ কয়েকটি ঘাটে এলাকার বনেদি বাড়ি এবং ক্লাবের প্রতিমা বিসর্জন হয়। প্রচুর জনসমাগম হয় এলাকায়। তবে এ বার করোনা পরিস্থিতির জেরে তেমন ভিড় হয়নি। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, এর ফলে এলাকা অন্যান্যবার যতটা নোংরা হয়, এ বার ততটা হয়নি। তবে বিভিন্ন জায়গায় জমে থাকা কাঠামো ও অন্যান্য সামগ্রী দ্রুত সাফ করার দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।
বসিরহাট, টাকি এবং বাদুড়িয়া পুর প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে, বিসর্জনের পরেই নদীর চর থেকে প্রতিমার কাঠামো-সহ অন্য সামগ্রী পরিষ্কারের কাজ শুরু হয়েছে। বৃষ্টি হওয়ায় কাজে একটু সমস্যা হচ্ছে। তবে দ্রুত নদীকে আগের চেহারায় ফিরিয়ে দেওয়া হবে।
হাসনাবাদ, হিঙ্গলগঞ্জেও অনেক শোভাযাত্রা বাতিল হয়েছে বৃষ্টির কারণে। সন্দেশখালির রামপুরে কয়েকটি পুজো উদ্যোক্তারা প্রতিমা নিয়ে নৌকোয় করে নদীতে ঘোরেন। নৌকোয় ভিড়ও ছিল। বেশিরভাগেরই মাস্ক ছিল না। নদীর পাড়ে মানুষ শারীরিক দূরত্ব ভুলে জড়ো হয়েছিলেন।