Children sickness

জ্বর-শ্বাসকষ্ট নিয়ে বহুশিশু ভর্তি হাসপাতালে

পাথরপ্রতিমা, নামখানা, মৌসুনি, ঘোড়ামারা ও সাগরের বহু শিশু জ্বর, সর্দি, কাশি ও শ্বাসকষ্টে ভুগছে। এই সব এলাকার বাসিন্দারা কাকদ্বীপ সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের উপরেই ভরসা রাখছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কাকদ্বীপ, বারাসত শেষ আপডেট: ২১ এপ্রিল ২০২৩ ০৯:৩৭
Share:

জ্বর নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি বহু শিশু। প্রতীকী চিত্র।

পারদ ঊর্ধ্বগামী। তারই সঙ্গে দিন দশেক ধরে বেড়েছে পেটের অসুখ ও জ্বরের প্রকোপ।

Advertisement

বারাসত ১, দেগঙ্গা ও আমডাঙা ব্লকের স্বাস্থ্যকেন্দ্র, উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও হাসপাতালে জ্বরে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। শিশুর সংখ্যাও কম নয়। হাসপাতালগুলিতে শিশুদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।

গত কয়েকদিনে পেটের অসুখ ও জ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে চলেছে। তিনটি ব্লক মিলিয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন প্রায় ৬০ জন শিশু। বহির্বিভাগে চিকিৎসার জন্য রোজ শতাধিক রোগী আসছেন। অনেকে আবার শিশু ও প্রবীণদের এই গরমে হাসপাতালে না এনে স্থানীয় চিকিৎসকদের কাছেই পরামর্শ নিচ্ছেন। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, হাসপাতালগুলিতে ওষুধের জোগান ও পর্যাপ্ত চিকিৎসক রাখার দিকে নজর দিয়েছে সরকার। চিকিৎসকদের দাবি, শরীরে ঘাম বসে যাওয়া, বেশিক্ষণ জলে ভিজে থাকা বা দিনে একাধিকবার স্নান করার ফলে ঠান্ডা-গরমের হেরফেরে জ্বর হচ্ছে। অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া পেটের অসুখের অন্যতম কারণ। জ্বরের থেকে পেটের সমস্যা বেশি দেখা দিচ্ছে।

Advertisement

বারাসত মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সুপার সুব্রত মণ্ডল বলেন, “এখন ২৩ জন শিশু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। রাস্তার খোলা খাবার, রেস্তরাঁর খাবার খাওয়ার ফলে পেটের সমস্যা বাড়ছে। এ সময়ে রঙিন জল, আইসক্রিম, কাটা ফল, ঠান্ডা পানীয়, লস্যি, ঘোল না খাওয়াই বাঞ্ছনীয়। বেশি সময় জলে ভেজা যাবে না। সচেতন থাকলেই সুস্থ থাকা সম্ভব।”

পাথরপ্রতিমা, নামখানা, মৌসুনি, ঘোড়ামারা ও সাগরের বহু শিশু জ্বর, সর্দি, কাশি ও শ্বাসকষ্টে ভুগছে। এই সব এলাকার বাসিন্দারা কাকদ্বীপ সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের উপরেই ভরসা রাখছেন। কিন্তু পর্যাপ্ত শয্যার অভাব রয়েছে এই হাসপাতালে। আপাতত হাসপাতালে মজুত শয্যার দ্বিগুণ শিশুকে ভর্তি রাখা হয়েছে। অনেক শিশুকে ডায়মন্ড হারবার বা কলকাতার হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছে।

কাকদ্বীপ হাসপাতালে রোজ ১৫-২০ জন শিশু জ্বর-শ্বাসকষ্ট নিয়ে ভর্তি হচ্ছে। এই সপ্তাহে ভর্তি হয়েছে ৭৫ জন শিশু। এখানে শিশুদের জন্য হাসপাতালে পিডিয়াট্রিক ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট (পিকু)-র শয্যা সংখ্যা ৪৮। এত সংখ্যক শিশু ভর্তি থাকায় হিমশিম খেতে হচ্ছে কর্তৃপক্ষকে।

হাসপাতাল সূত্রে জানা যাচ্ছে, অস্ত্রোপচার বিভাগের পাশের একটি ওয়ার্ডে ফাঁকা শয্যায় শিশুদের রাখা হচ্ছে। না হলে একটি শয্যায় দু’জন শিশুকে রাখতে হবে। কিছু দিন আগে এক শিশু মারা গিয়েছিল এই হাসপাতালে। তা নিয়ে অভিযোগ দায়ের করা হয়। তার পুনরাবৃত্তি চাইছেন না হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

দেশে ফের চোখ রাঙাচ্ছে করোনা ভাইরাস। এই পরিস্থিতিতে দেশের কোভিড হাসপাতালগুলি চিহ্নিত করে প্রস্তুতি নিচ্ছে প্রশাসন। সেখানে কাকদ্বীপ হাসপাতালে কিছু শিশু অ্যাডিনোর উপসর্গ নিয়ে ভর্তি হচ্ছে বলেও হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে। শিশু বিভাগের এক চিকিৎসক জানান, “তাপমাত্রা বাড়ার জন্য শিশুদের সমস্যা দেখা দিয়েছে। নবজাতক থেকে বড় শিশুরা জ্বর, শ্বাসকষ্ট ও ডায়েরিয়ায় ভুগছে। এই গরমে শিশুদের বাড়ির বাইরে না নিয়ে যাওয়াই ভাল। খুব প্রয়োজন বেরোতে হলে সঙ্গে ওআরএস রাখুন।” চিকিৎসকদের মতে, শিশুদের শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা তৈরি না হওয়ার ফলে অতিরিক্ত গরমে জ্বর আসছে। একে বলা হয় ডি-হাইড্রেশন ফিভার। শরীর থেকে প্রচুর জল বেরিয়ে যাওয়ায় এমন হচ্ছে। সে সময়ে ওআরএস খাওয়াতে হবে।

কাকদ্বীপ হাসপাতালের সুপার কৃষ্ণেন্দু বিশ্বাস বলেন, “শিশুদের শয্যাসংখ্যা কম থাকায় বাধ্য হয়ে অন্য হাসপাতালে রেফার করতে হচ্ছে। গত এক মাসে শিশু ভর্তির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে এক হাজারের কাছাকাছি। অনেককে অক্সিজেন দিতে হচ্ছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement