কাটা হয়েছে ম্যানগ্রোভ। —নিজস্ব চিত্র
নদীবাঁধ-লাগোয়া এলাকা থেকে ম্যানগ্রোভ কেটে বের করা হচ্ছে জমি। সেই জমিই বিক্রির অভিযোগ উঠেছে গ্রামবাসীদের একাংশের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, দীর্ঘ দিন ধরে এমন চলছে নামখানা রেঞ্জের নারায়ণপুর দ্বিতীয়ঘেরি গ্রামে। ক’দিন আগে গ্রামবাসীদের একাংশ এই রকমই এক জমিতে বেআইনি একটি নির্মাণ বন্ধ করতে পুলিশে খবর দেন। পুলিশ এসে কাজ বন্ধ করে।
বন দফতর ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, নারায়ণপুর দ্বিতীয়ঘেরি গ্রামের হাতানিয়া-দোয়ানিয়া নদীবাঁধের পাশে মৎস্যজীবীদের বসতি রয়েছে। ওই বসতির লোকজন দীর্ঘ দিন ধরে তাঁদের বাড়ির সোজাসুজি অংশের নদীর চর দখল করে নিচ্ছেন বলে অভিযোগ। চর দখলের পরে মাটি কেটে বড় বড় চাতাল তৈরি করা হচ্ছে নদীর ধারে। সেই চাতাল বানাতে গিয়ে ছোট বড় বানি, গরান, গামা, বাবলা-সহ কাটা পড়ছে বহু গাছ। নদীর পাশ থেকে এ ভাবে নিয়মিত গাছ কেটে নেওয়ায় এবং মাটি তুলে নেওয়ায় ক্ষতি হচ্ছে বাঁধের। পুরনো বড় গাছ কেটে ফেলায় দুর্বল হচ্ছে বাঁধ। অনেকে জানালেন, নদীর ঢেউয়ের তোড় এসে কাঁপিয়ে দিচ্ছে বাঁধ। কোটালের জোয়ারে যে কোনও সময়ে হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়তে পারে বাঁধ বলে আশঙ্কা। চর দখল করে যে চাতালগুলি তৈরি হচ্ছে, তা মোটা টাকায় ট্রলার মালিকদের কাছে বিক্রি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ। মালিকেরা চাতাল কিনে তার পাশে ট্রলার নোঙর করা হচ্ছে। বেআইনি ভাবে দখল করা চরের জমিতে কোথাও কোথাও ঘরবাড়ি তৈরির কাজও চলছে বলে অভিযোগ।
ওই এলাকার বাসিন্দা সমীর দাস, শ্যামল দাসদের অভিযোগ, গতকাল রবিবার চরের চাতালে ঘর নির্মাণের কাজ চলছিল। তাঁরা পুলিশে খবর দিয়েছিলেন। পুলিশ-প্রশাসনের লোকজন এসে কাজ বন্ধ করে। নদীর পাশে চাতাল তৈরি হওয়ায় তাঁদের বাড়ির জল নিকাশির পথও বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। পরিবেশ-প্রকৃতির ক্ষতি তো হচ্ছেই। স্থানীয় পঞ্চায়েতে তাঁরা এর প্রতিকার চেয়েছিলেন। কিন্তু পঞ্চায়েত বিষয়টিতে নিস্পৃহ থেকেছে বলে অভিযোগ। বন দফতরের সাহায্য চেয়েছেন গ্রামের বহু মানুষ। গণস্বাক্ষর-সহ একটি অভিযোগপত্র প্রশাসনিক দফতরে জমা দেওয়া হয়েছে।নারায়ণপুর পঞ্চায়েতের প্রধান চম্পা বৈরাগী বলেন, ‘‘গাছ কেটে চাতাল বানানোর খবর শুনেছি। অবৈধ নির্মাণের খবরও জেনেছি। আমাদের প্রতিনিধিরা এলাকায় গিয়ে বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন। তারপরে আমরা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করব।’’ গাছ কাটা বিষয়ে নামখানা রেঞ্জার সুবোধ সরকার বলেন, ‘‘অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে দেখা হবে।’’