—প্রতীকী ছবি
কুপ্রস্তাব মানেননি তিনি। অভিযোগ, তাই হেনস্থা করা হচ্ছে তাঁকে ও পরিবারকে। নিয়মিত অশ্লীল ইঙ্গিত করা হচ্ছে বারাসত হাটখোলার বাসিন্দা অভিযোগকারিণীকে। সম্প্রতি বাধ্য হয়ে প্রতিবাদ করেন তাঁর বৃদ্ধ বাবা। অভিযোগ, এর পরেই অভিযুক্ত তিন ভাই মহিলার বাবাকে বেধড়ক মারধর করে। ওই মহিলাকেও মারধর করে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়।
চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন বৃদ্ধের মস্তিষ্কে অস্ত্রোপচার করতে হতে পারে। অভিযোগকারীর দাবি, পুরো ঘটনা থানায় জানিয়েও লাভ হয়নি। শেষ পর্যন্ত পুলিশ সুপারের দ্বারস্থ হওয়ায় গ্রেফতার করা হয়েছে এক অভিযুক্তকে। কিন্তু বাকি দু’ভাই এখনও এলাকায় ঘুরছে বলে অভিযোগ। বৃহস্পতিবার সকালে ফের দুই অভিযুক্ত ওই মহিলার বোনকে যৌন নিগ্রহের চেষ্টা করে বলে জানানো হয়েছে। চরম আতঙ্কে তাঁদের দিন কাটছে বলে জানান মহিলা।
বাবা-মায়ের বাড়ির কাছেই বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকেন অভিযোগকারিণী। তাঁর স্বামী কর্মসূত্রে বাইরে থাকেন। ফলে বেশির ভাগ সময়ে বাবা-মায়ের বাড়িতেই থাকেন তিনি। উল্টো দিকের বাড়ির বাসিন্দা তিন ভাই প্রীতম ঘোষ, বাবু ঘোষ এবং নিমাই ঘোষ প্রায়ই তাঁকে কুপ্রস্তাব দেয় বলে অভিযোগ।
গত ৩০ নভেম্বর বিষয়টি চূড়ান্ত পর্যায়ে যায়। বিকেলে বারান্দায় দাঁড়িয়ে ছিলেন ওই মহিলা। সেই সময়ে বাবু নিজের বাড়ি থেকে মহিলার উদ্দেশে অশালীন ইঙ্গিত করতে থাকে। তিনি বাড়ির ভিতরে চলে গেলে গালিগালাজ শুরু করে বাবু এবং তার ভাইয়েরা। এমনকি, তাঁকে ধর্ষণের হুমকিও দেওয়া হয়। মহিলার বাবা বেরিয়ে এ সবের প্রতিবাদ করেন। অভিযোগ, তার পরেই তিন ভাই ওই বৃদ্ধের উপরে চড়াও হয়। মহিলা বাবাকে বাঁচাতে গেলে তাঁকেও মারধর করে বাবুরা। তাঁকে টেনে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হয় বলে অভিযোগ। কিন্তু তা না পেরে বাবুরা তাকে তুলে নিয়ে ধর্ষণ করার হুমকি দিতে থাকে।
কোনও রকমে নিজেকে ছাড়িয়ে বারাসত থানার পথে এগোন মহিলা। এর মধ্যেই ফের তাঁর বাবার উপরে চড়াও হয়ে ইট দিয়ে মাথায় আঘাত করা হয়। বাবাকে নিয়ে হাসপাতালে যান অভিযোগকারিণী। সেখান থেকে বৃদ্ধকে কলকাতার এক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসার পরে আপাতত বৃদ্ধ বাড়ি ফিরেছেন। তবে দিন পনেরো পর্যবেক্ষণে রেখে বৃদ্ধের মস্তিষ্কে অস্ত্রোপচার নিয়ে সিদ্ধান্ত হবে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা।
ঘটনার পরদিনই বারাসত থানায় অভিযোগ দায়ের করেছিলেন মহিলা। কিন্তু পুলিশ কোনও পদক্ষেপ করেনি বলে তাঁর দাবি। শেষে বারাসতের পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। এর পরেই মঙ্গলবার প্রীতমকে গ্রেফতার করা হয়। মহিলার অভিযোগ, মুক্ত অন্য দুই ভাই তাঁদের দেখে নেওয়ার হুমকি দিচ্ছে। বৃহস্পতিবার সকালে মহিলার বোনকে বাইকে দু’ভাই অনুসরণ করে হুমকি দেয়। তিনিও এ দিন বারাসত থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন।
বারাসত পুলিশ জেলার সুপার বলেন, “অভিযোগের ভিত্তিতে পদক্ষেপ করা হচ্ছে। এক জনকে গ্রেফতার করে পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। বাকি দুই অভিযুক্ত পলাতক। খোঁজে তল্লাশি চলছে। তাদেরও গ্রেফতার করা হবে।”
এ দিনও অবশ্য অভিযুক্ত নিমাই ঘোষকে রাস্তায় দেখা গিয়েছে। সংবাদমাধ্যমের কাছে নিমাই তাদের বিরুদ্ধে ওঠা যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করে আগাম জামিন নেওয়ার কথাও জানিয়েছে।