সুদীপ্তা বেরা
অগ্নিদগ্ধ হয়ে মৃত্যু হল এক তরুণীর। পুলিশ জানায়, হাড়োয়ার উচিলদহ গ্রামের বাসিন্দা মৃতের নাম সুদীপ্তা বেরা (২০)। শুক্রবার রাতে কলকাতার চিত্তরঞ্জন হাসপাতালে মারা যান তিনি।
মৃতের পরিবারের অভিযোগ, স্বামীর সঙ্গে অন্য এক মহিলার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক দেখে ফেলায় সুদীপ্তার গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দিয়ে দেওয়া হয়। সুদীপ্তার বাবা সুকদেব নায়েক এ ব্যাপারে জামাই লক্ষ্মণ-সহ মেয়ের শাশুড়ি, ভাসুর এবং ভাসুরের স্ত্রীর বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করছেন। পেশায় গৃহশিক্ষক লক্ষ্মণকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। বাকিরা পলাতক।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর পাঁচেক আগে হাড়োয়ার উচিলদহ গ্রামের লক্ষ্মণের সঙ্গে এলাকারই মেয়ে সুদীপ্তার বিয়ে হয়। ওই দম্পতির এক সন্তান। অভিযোগ, বিয়েতে চাহিদা মতো যৌতুক দেওয়া সত্ত্বেও আরও টাকার দাবি ছিল লক্ষ্মণের পরিবারের। সুদীপ্তা অন্য এক মহিলার সঙ্গে স্বামীর বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের কথা জানতে পারলে সংসারে অশান্তি চরমে ওঠে। গ্রামে সালিশি বসানো হয়। কিন্তু তাতেও সমাধান হয়নি। বরং সুদীপ্তার উপরে অত্যাচারের মাত্রা বাড়ে।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, শুক্রবার সকাল থেকে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে গন্ডগোল শুরু হয়। দুপুরে শ্বশুরবাড়ির একটি ঘর থেকে সুদীপ্তাকে অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করেন স্থানীয় মানুষ। মিনাখাঁ গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাঁকে। সেখান থেকে পাঠানো হয় কলকাতার হাসপাতালে। রাতে মারা যান সুদীপ্তা।
সুকদেব বলেন, ‘‘মেয়ের উপরে অত্যাচারের মাত্রা বাড়ায় আমরা হাড়োয়া থানায় বিষয়টি জানিয়েছিলাম। কিন্তু তাতেও জামাই কোনও শুধরোয়নি। মেয়েকে খুনের হুমকি দিত। এ বার মারধর করার পরে মেয়ের গায়ে কেরোসিন তেল ঢেলে পুড়িয়ে খুন করেছে।’’ মৃতের কাকা প্রতাপ নায়েক বলেন, ‘‘মাস চারেক আগে একবার বালিশ চাপা দিয়ে খুনের চেষ্টা করেছিল। মেয়ে বাপের বাড়ি চলে আসে। কয়েক দিন আগে জামাই ভুল স্বীকার করে ওকে ফিরিয়ে নিয়ে যায়। কিন্তু তারপরেও এই ঘটনা।’’
খুনের অভিযোগ অস্বীকার করে লক্ষ্মণ বলে, ‘‘অল্পেই উত্তেজিত হয়ে পড়ত স্ত্রী। সাংসারিক অশান্তির পরে হঠাৎই গায়ে কেরোসিন তেল ঢেলে দেশলাই ঠুকে দেয়।’’