—প্রতীকী চিত্র।
দশমীর দিন অঞ্জলি মণ্ডলকে শেষ বার দেখতে পেয়েছিলেন স্থানীয়েরা। উৎসবের মরসুম। প্রতিবেশীরা ভেবেছিলেন, হয়তো বাপের বাড়ি গিয়েছেন ওই বধূ। কিন্তু বাপের বাড়ির লোকজনেরা খোঁজাখুঁজির পর বাড়ি থেকে কিছুটা দূর থেকে উদ্ধার হল অঞ্জলির দেহ। দক্ষিণ ২৪ পরগনার বারুইপুর থানার শিখরবালি-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের ঘটনা। স্ত্রীকে খুনের পর মাটি খুঁড়ে পুঁতে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্বামীর বিরুদ্ধে। যদিও মূল অভিযুক্ত এখন পলাতক।
স্থানীয়েরা জানাচ্ছেন, উত্তর মনসাতলার বাসিন্দা রবীন মণ্ডল এবং ইন্দ্রাপালার বাসিন্দা অঞ্জলির বিয়ে হয় বছর ২০ বছর আগে। প্রেম করেই বিয়ে করেছিলেন দু’জন। দম্পতির দুই সন্তান রয়েছে। তাদের এক জনের বয়স ১৯ বছর এবং আর এক জনের বয়স ১৪ বছর। তারা মামার বাড়িতে থাকে। অভিযোগ, দুই সন্তানের উপর মত্ত অবস্থায় অত্যাচার করতেন রবীন। দম্পতির মধ্যে বহু দিন ধরে অশান্তি চলছিল।
পুলিশ এবং স্থানীয় সূত্রে খবর, রবীন বেআইনি ভাবে মদ বিক্রি করতেন। তাঁর নামে একাধিক মামলা আছে। বেশ কয়েক বার জেলও খেটেছেন তিনি। শেষ বার একটি মারপিটের ঘটনায় গ্রেফতার হয়েছিলেন গত ২০ সেপ্টেম্বর। গত ৫ অক্টোবরই জামিন ছাড়া পান রবীন। প্রতিবেশীদের একাংশের দাবি, দশমীর দিন রবীন এবং তাঁর স্ত্রীর মধ্যে অশান্তি হয়। তার পর থেকে আর অঞ্জলিকে কেউ দেখতে পাননি। পুলিশের অনুমান, সেদিনই খুন হন অঞ্জলি।
অভিযোগ, প্রায়ই স্ত্রীর কাছে মদ খাওয়ার টাকা চাইতেন রবীন। না পেলেই চলত অত্যাচার। দশমীর দিনও মারধর করেন স্ত্রীকে। অন্য দিকে, কোনও ভাবে অঞ্জলির খোঁজ না পেয়ে তাঁর বাপের বাড়ির লোকজন বাড়িতে চলে আসেন। রবীনকে জিজ্ঞাসা করেও হদিস মেলেনি। শনিবার সকালে বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে একটি জায়গায় মাটি খুঁড়ে অঞ্জলির দেহ মেলে। ওই মহিলাকে পুঁতে দিয়ে উপরে খড় ছড়ানো ছিল। তার উপরে বিছানো ছিল কাঠ। এই খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে পুলিশ। এলাকায় হইচই শুরু হয়। অন্য দিকে, রবীনের আর কোনও খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না।
এই খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসেছেন বারুইপুর এসডিপিও অতীশ বিশ্বাস, বারুইপুর থানার আইসি সৌম্যজিৎ রায় এবং অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পার্থ ঘোষ।