Murder

ছেলের খুনের বদলা নিতে খুন পড়শিকে

অভিযোগ, মদ্যপানের সঙ্গী দিবাকর সর্দারকে গলায় চাদর পেঁচিয়ে খুন করে সে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

জয়নগর শেষ আপডেট: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৮:৫৫
Share:

খুনের পুনর্নির্মাণ। ছবি: সুমন সাহা

মাঠে বসে মদ খাচ্ছিল দুই পড়শি। একজন কিনে এনেছিল মদ। অন্যজন এনেছিল বিষের শিশি। রাতের অন্ধকারে মদের গ্লাসে একটু একটু মিশিয়ে দিচ্ছিল বিষ।

Advertisement

এক সময়ে নেশা চড়ে যায় দু’জনেরই। বিষের তেজে অন্যজন ততক্ষণে নেতিয়ে পড়েছে। তারই মধ্যে চলছে কথা কাটাকাটি।

যে বিষ মিশিয়েছিল, সে জানতে চায়, ‘‘ছেলেটাকে মারলি কেন?’’ তার দাবি, উল্টো দিক থেকে উত্তর মেলে, ‘‘ছেলেকে মেরেছি, তোকে মারব, তোর বৌকেও মারব।’’

Advertisement

এ কথা শুনে মাথায় রক্ত চড়ে যায় রমেন মণ্ডলের। অভিযোগ, মদ্যপানের সঙ্গী দিবাকর সর্দারকে গলায় চাদর পেঁচিয়ে খুন করে সে। ধরাও পড়ে। প্রাথমিক তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে, ছেলেকে খুনের বদলা নিতেই ওই ঘটনায় অভিযুক্ত দিবাকরকে খুন করেছে রমেন।

ঘটনাটি জয়নগর থানার চালতাবেড়িয়ার চরপুকুরিয়ার। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, খুনোখুনির ইতিহাসটা বছর তিনেকের পুরনো। সে সময়ে বঁটির কোপে খুন হন গ্রামের এক ব্যক্তি। ওই ঘটনায় নাম জড়িয়েছিল রমেনের ছেলে বাবুসোনার।

সেই খুনের বদলা নিতে দিবাকর-সহ কয়েকজন বাবুসোনাকে বছর দু’য়েক আগে পিটিয়ে মারে বলে অভিযোগ। ধরা পড়ে তিনজন। তার মধ্যে ছিল দিবাকর। তবে জামিন পেয়ে যায় সে। মামলার তদন্তভার নেয় সিআইডি। মামলাটি এখনও চলছে।

ছেলের খুনি সন্দেহে দিবাকরের উপরে রাগ ছিল বাবুসোনার বাবা রমেনের। এক সময়ে বন্ধুত্ব ছিল দুই পড়শির। পরে সম্পর্কে চিড় ধরে বলে জানতে পারে পুলিশ।

১৯ ফেব্রুয়ারি গ্রাম থেকে কিছুটা দূরে দিবাকরের দেহ উদ্ধার হয়। দিন তিনেক ধরে নিখোঁজ ছিল সে। তদন্তে নেমে পুলিশ রমেনকে গ্রেফতার করে। জেরায় এক সময়ে সে পুলিশকে জানায়, ছেলের খুনের বদলা নিতে দিবাকরকে মেরেছে সে-ই। বৃহস্পতিবার রমেনকে সঙ্গে নিয়ে চালতাবেড়িয়ার মাঠে পৌঁছয় পুলিশ। সেখানে ঘটনার পুনর্নির্মাণ করা হয়।

পুলিশ জানায়, একই পাড়ায় পাশাপাশি বাড়ি রমেন ও দিবাকরের। ১৬ ফেব্রুয়ারি হাটে গিয়ে দিবাকরের সঙ্গে দেখা হয়েছিল রমেনের। দু’জনের কথাবার্তা হয়। রমেনের দাবি, দিবাকরই মদ্যপানের প্রস্তাব দেয়। মদও কেনে।

তখনই খুনের ছক মাথায় আসে রমেনের। কীটনাশক নিয়ে আসে সে শিশিতে। পুলিশকে রমেন জানিয়েছে, মদ খেতে বসে দিবাকরের গ্লাসে অল্প অল্প করে বিষ মিশিয়ে দিতে থাকে। তারপরে খুনও করে।

তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, দিন কয়েক আগে মদের সঙ্গে বিশ মিশিয়ে খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিল দিবাকর। তা জানত রমেন। এ বারও একই ভাবে ঘটনা সাজাতে চেয়েছিল সে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement