সুন্দরবন জুড়ে এমনই কংক্রিটের নদীবাঁধ তৈরির কথা ছিল আয়লার পরে। —নিজস্ব চিত্র।
সুন্দরবন নিয়ে নতুন ‘মাস্টার প্ল্যান’ তৈরির কথা ঘোষণা করেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার বসিরহাটে নির্বাচনী জনসভায় গিয়ে সে কথা বলেন। তবে সুন্দরবন নিয়ে আদৌ কী ভাবছে সরকার, মাস্টার প্ল্যানই বা কী— সে সম্পর্কে কিছুই জানাননি তিনি। সুন্দরবন যে নতুন জেলা হবে, সে সম্পর্কে আরও এক বার এ দিনের সভা থেকে ঘোষণা করেছেন মমতা।
মাস্টার প্ল্যানে সুন্দরবনের জন্য ঠিক কী উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, সে বিষয়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেল, বিশ্ব ব্যাঙ্কের সঙ্গে সম্প্রতি রাজ্য সরকারের একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। যেখানে সুন্দরবনের পর্যটন, সৌন্দর্যায়ন, কংক্রিটের নদীবাঁধ তৈরির পরিকল্পনা করা হচ্ছে। পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করতে ৪১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ ধরা হয়েছে প্রাথমিক ভাবে। যে টাকার ৭০ শতাংশ দেবে বিশ্বব্যাঙ্ক এবং বাকি ৩০ শতাংশ দেবে রাজ্য সরকার। ৬ মে রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে প্রকল্পের অনুমোদন মিলেছে বলে সূত্রের খবর।
সুন্দরবন উন্নয়ন দফতর সূত্রের খবর, মুখ্যমন্ত্রী সুন্দরবনের সামগ্রিক উন্নয়নের জন্য কেন্দ্রীয় জলসম্পদ দফতরে একাধিক বার চিঠি লিখেছেন, প্রধানমন্ত্রীর কাছেও ১২ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প জমা দিয়েছিলেন। কিন্তু কোনও লাভ হয়নি। কেন্দ্র এ বিষয়ে কোনও উৎসাহ দেখায়নি বলেই দাবি সুন্দরবন উন্নয়ন দফতরের মন্ত্রী বঙ্কিম হাজরার। আর সে কারণেই বিশ্বব্যাঙ্কের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে সুন্দরবনের সামগ্রিক উন্নয়নের জন্য এই মাস্টার প্ল্যান তৈরি করা হচ্ছে। রাজ্যের মুখ্য সচিবের নেতৃত্বে একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটিও গঠন করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন বঙ্কিম। তিনি বলেন, “ইতিমধ্যেই উচ্চ পর্যায়ের কমিটি তৈরি হয়েছে। সেখানে মুখ্য সচিবের নেতৃত্বে সুন্দরবন উন্নয়ন দফতর, পরিবেশ দফতর, সেচ দফতর সহ বেশ কিছু দফতরের প্রধান ও মুখ্য সচিবেরা রয়েছেন।” ২০২৫ সালে এই প্রকল্পের কাজ শুরু হবে এবং ২০২৯ সালের মধ্যে শেষ হবে বলে জানান মন্ত্রী। মাস্টার প্ল্যান সম্পূর্ণ হলে সুন্দরবনের অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিস্থিতি আরও উন্নত হবে বলে দাবি বিশেষজ্ঞদের।
এ নিয়ে কটাক্ষ করে প্রাক্তন সেচমন্ত্রী সুভাষ নস্কর বলেন, “আদৌ এই সরকারের কাজ করার ইচ্ছে আছে তো? নাকি ভোটের আগে মানুষকে বোকা বানাতে এই ধরনের কথা বলছেন? আয়লার পরে কংক্রিটের বাঁধ তৈরির জন্য ৫০৩২ কোটি টাকা বাম সরকার এনে দিয়েছিল। শুধু কাজ করল না বলে ৪ হাজার কোটি টাকার বেশি কেন্দ্রে ফেরত চলে গেল। আর এখন মাস্টার প্ল্যান করছে!”