মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
ইতিমধ্যে সভা করে গিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। প্রচারে এসেছেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। আজ, সোমবার বনগাঁ লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত বাগদা ও স্বরূপনগরে সভা করতে আসছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। সব মিলিয়ে প্রচারের আলোয় বনগাঁ লোকসভা কেন্দ্র।
দলনেত্রীর সভা সফল করতে কয়েকদিন ধরে কোমর বেঁধে নেমে পড়েছেন উত্তর ২৪ পরগনা জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। কয়েক দিন ধরেই চলেছে মিটিং, মিছিল, পথসভা এবং স্থানীয়স্তরে প্রচার।তৃণমূলের উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, ‘‘বাগদা ও স্বরূপনগরের দু’টি সভায় এক লক্ষ করে মোট দু’লক্ষ মানুষের জমায়েত হবেন।’’ প্রশাসন ও দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বাগদার সভাটি হবে স্থানীয় হেলেঞ্চা হাইস্কুলের মাঠে। স্বরূপনগরের সভাটি হচ্ছে স্থানীয় চারঘাটে। মুখ্যমন্ত্রী আসছেন হেলিকপ্টারে। বনগাঁ কেন্দ্রে মতুয়া ভোট বরাবরই উল্লেখযোগ্য নির্ণায়ক হয়ে এসেছে। নাগরিকত্ব নিয়েও এখানে অলিতে গলিতে আলোচনা বিস্তর।
২০০৮ সালের পঞ্চায়েত ভোটের সময় থেকে মতুয়াদের বড় অংশের সমর্থন তৃণমূল বা মুখ্যমন্ত্রীর অনুকূলে গিয়েছে। মতুয়াদের বড়মা, সদ্যপ্রয়াত বীণাপাণি ঠাকুরের সঙ্গে মমতা বন্দোপাধ্যায়ের ‘‘মা-মেয়ের’’ সম্পর্ক ছিল বলে বরাবর দাবি করে এসেছে তৃণমূল শিবির। মমতা মতুয়াদের উন্নয়নে হাত উজাড় করে দিয়েছেন বলেও বিভিন্ন মহলের মত। বড়মার মৃত্যুর কিছু দিন আগে মুখ্যমন্ত্রী ঠাকুরনগরে এসে তাঁকে রাজ্যের সর্বোচ্চ সম্মান ‘বঙ্গবিভূষণে’ও সম্মানিত করেছেন। তবে রাজনৈতিক মহল মনে করছেন, এ বার মতুয়াদের ভোট ভাগাভাগি হওয়ার সম্ভাবনা ভাবাচ্ছে তৃণমূল শিবিরকে। আর সেই সুযোগটাই নিতে তৎপর বিজেপি।
বিজেপি এ বার এই কেন্দ্রে প্রার্থী করেছে সারা ভারত মতুয়া মহাসঙ্ঘের সঙ্ঘাধিপতি শান্তনু ঠাকুরকে। অন্যদিকে তৃণমূল প্রার্থী মমতা ঠাকুর মতুয়া বাড়ির লোক। তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিনের সভা দু’টি থেকে মুখ্যমন্ত্রীর মতুয়াদের উদ্দেশ্যে বার্তা দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বাগদা ও স্বরূপনগরের বহু মানুষ ওপার বাংলা থেকে বিভিন্ন সময় এসে এ অঞ্চলে স্থায়ী ভাবে বসবাস করছেন। সম্প্রতি অসমে এনআরসি চালু হওয়ার পর থেকে ওই সব মানুষের মধ্যে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। তৃণমূলও প্রচারে এনআরসি’র বিষয়টি তুলে আনছে। এনআরসি চালু হলে সকলকে ওপার বাংলায় ফিরে যেতে হবে বলে দলের তরফে তাঁদের মনে করিয়ে দেওয়া হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী সভামঞ্চ থেকে এনআরসি নিয়ে সরব হতে পারেন বলে তৃণমূল সূত্রের খবর।
ইদানীং এলাকায় বিজেপির বাড়বাড়ন্ত চোখে পড়ার মতো। বিশেষ করে বনগাঁ মহকুমার চারটি বিধানসভা এলাকায় বিজেপির শক্তি বেড়েছে। এই মহকুমায় গত পঞ্চায়েত ভোটে বিজেপি চারটি পঞ্চায়েত দখল করেছিল। বিজেপির বারাসত সাংগঠনিক জেলার সভাপতি প্রদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘তৃণমূল বুঝতে পারছে, এখানে তাদের পায়ের তলার মাটি সরে গিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী তিনটি সভা করে ‘ড্যামেজ কন্ট্রোলে’র চেষ্টা করছেন। তবে তা আর সম্ভব নয়।’’ জ্যোতিপ্রিয়র অবশ্য দাবি, ‘‘গতবারের চেয়ে জয়ের ব্যবধান এ বার আরও বাড়ছে। বিজেপিকে নিয়ে আমরা ভাবছি না।’’