ভিড়: তার মধ্যেই রয়েছেন দেবেশ মণ্ডল। —ফাইল চিত্র
নেতারা বলছেন, জমায়েতকে ঘরমুখো করতেই তাঁরা গিয়েছিলেন গ্রামে। তা-ও কয়েক মিনিটের জন্য। জনতার অভিজ্ঞতা অবশ্য অন্য। তাঁরা প্রশ্ন তুলছেন, জমায়েত সরাতেই যদি যাবেন, তা হলে আগের দিন মাইকে প্রচার করা হল কেন, নেতারা আসছেন গ্রামে। কেনই বা তাঁদের বক্তৃতা করার জন্য এমনকী মাইকেরও ব্যবস্থা রাখা হল? সদুত্তর নেই তৃণমূল নেতৃত্বের মুখে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। কিন্তু ভিড় থেকে বিপদআপদ ঘটে গেলে দায় কে নেবে, সে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।
সম্প্রতি হিঙ্গলগঞ্জের ভেটকিয়া গ্রামের বাসিন্দা আসরাফ গাজিকে খুন করার অভিযোগ ওঠে সান্ডেলেরবিল পঞ্চায়েতের উপপ্রধান তৃণমূলের জয়নাল গাজির বিরুদ্ধে। প্রথমে স্থানীয় বিধায়ক দেবেশ মণ্ডল জয়নালের পক্ষ নেওয়ায় গ্রামবাসীদের একাংশের মধ্যে ক্ষোভ ছড়ায়। গ্রামে জয়নালের বিরুদ্ধে মিছিল শুরু হয়। তারপরেই তৃণমূল নেতৃত্ব জয়নালকে ছেঁটে ফেলার সিদ্ধান্ত নেন। সেই ঘোষণা করতেই মঙ্গলবার গ্রামে গিয়েছিলেন দেবেশ। সঙ্গে ছিলেন জেলা পরিষদের শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ ফিরোজ কামাল গাজি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, তাঁরা যাওয়ার পরে প্রচুর মানুষের জমায়েত হয়ে যায়। ক্ষোভের মুখে পড়েন দেবেশ। মাইকে জয়নালকে বহিষ্কারের কথা ঘোষণা করলে জনতা শান্ত হয়। ওই ঘটনায় পুলিশ আট জনকে গ্রেফতার করলেও জয়নাল এখনও বেপাত্তা।
বুধবার দেবেশ দাবি করেন, লকডাউনের নিয়ম ভাঙেননি তিনি। জয়নালের শাস্তির দাবিতে গ্রামের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে দেখে মিনিটে কয়েকের জন্য গ্রামে গিয়েছিলেন। জয়নালকে বহিষ্কারের কথা ঘোষণা করেন। তা শুনে জনতা ঘরে ফিরে যায়।
ফিরোজ বলেন, “খুনের ঘটনায় ক্ষুব্ধ অনেকেই লকডাউন অমান্য করে বিক্ষোভে সামিল হচ্ছিলেন। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশকে মান্যতা দিতেই আমরা গ্রামে গিয়েছিলাম।’’
যদিও গ্রামের বাসিন্দারা বলছেন, তৃণমূল নেতৃত্ব গ্রামে আসার পরে জমায়েত হয়। তাঁরা যে গ্রামে আসবেন, তা আগে থেকেই প্রচার করা হয়েছিল। সভা করা হয়নি বলে দাবি করা হলেও নেতাদের জন্য মাইকের ব্যবস্থা হয়েছিল। কেন মাইক আনা হয়েছিল, কেন আগে থেকে প্রচার হয়েছিল, আসছেন নেতারা— সে প্রসঙ্গে উত্তর মেলেনি দেবেশদের কাছ থেকে।
পুলিশ জানিয়েছে, খুনের ঘটনায় আগেই ধরা পড়েছিল ৫ জন। মঙ্গলবার রাতে ধরা পড়ে মতিয়ার গাজি, জুলফিকার মোড়ল, রাজু গাজি নামে আরও তিনজন। তবে মূল অভিযুক্ত জয়নাল এখনও অধরা।