প্রতীকী ছবি—শাটারস্টক
লকডাউনের জেরে বন্ধ পোশাক তৈরির কারখানা। সমস্যায় পড়েছেন মালিক-শ্রমিক দু’পক্ষই। হাবড়া-অশোকনগর এলাকায় উল্লেখযোগ্য শিল্প কারখানা নেই। ক্ষুদ্র শিল্প হিসাবে এখানে অসংখ্য ছোট-বড় পোশাক তৈরির কারখানা রয়েছে। অনেকেই বাড়িতে কারখানা তৈরি করে ব্যবসা করেন। কেউ কেউ জমি কিনে বড় কারখানা করেছেন। এই সব কারখানায় এলাকার অনেকে কাজ করেন।
কিন্তু লকডাউনে কারখানা বন্ধ থাকায় কী করবেন, বুঝতে পারছেন না শ্রমিক-মালিক কোনও পক্ষই। কী ভাবে সংসার চলবে, তা নিয়ে চিন্তিত সকলেই কয়েকজন কারখানা মালিক জানালেন, রাজ্যের এবং ভিনরাজ্যের বিভিন্ন সংস্থা ও বড় পোশাক ব্যবসায়ীরা এখানে ছিট কাপড় পাঠিয়ে দেন। সেই কাপড় সেলাই করে কারখানায় তৈরি হয় জামা- প্যান্ট, নাইটি, টি-শার্ট। কলকাতা-সহ রাজ্য ও দেশের বাজারে তা বিক্রি হয়। কারখানা মালিকেরা জানান, করোনাভাইরাসের প্রভাব ও লকডাউনের ফলে সংস্থাগুলি ছিট কাপড় পাঠানো বন্ধ করে দিয়েছে। কারণ সংস্থাগুলিও পোশাক বাইরে বিক্রি করতে পারছে না।
একজন শ্রমিক কাজ অনুযায়ী সপ্তাহে ৩-৪ হাজার টাকা আয় করেন। এখন কাজ হারিয়ে তাঁরা বেকার। কারখানা মালিকদেরকাছ থেকে অগ্রিম টাকা চাইছেন সকলে। কোনও কোনও কারখানা মালিক সেই টাকা দিচ্ছেনও। তবে এ ভাবে বেশি দিন যে চালানো যাবে না, তা বুঝতে পারে দু’পক্ষই। হাবড়া পায়রাগাছি এলাকায় পোশাক তৈরির কারখানা রয়েছে বাপি পালের। ভাইয়ের সঙ্গে তাঁর ব্যবসা। কারখানায় ২৪ জন শ্রমিক কাজ করেন। বাপি বলেন, “পোশাক তৈরির কাজ এখন বন্ধ হয়ে গিয়েছে। আমরা দুই ভাই মিলে শ্রমিকদের বেতন দিয়েও মাসে ৩০-৩৫ হাজার টাকা আয় করতাম। সে সব বন্ধ হয়ে গিয়েছে। শ্রমিকেরা পথে বসেছেন। অগ্রিম তাঁদের ৫০০ টাকা করে দিয়েছি। কিন্তু আর সম্ভব নয়।’’
গাইঘাটার চাঁদপাড়ার বাসিন্দা সমীর টিকাদার হাবড়ায় একটি পোশাক তৈরির কারখানায় কাজ করেন। চোখের জল মুছে জানালেন, সপ্তাহে ১৮০০-১৯০০ টাকা আয় করতেন। পরিবারে ৬ জন সদস্য। এখন কাজ নেই। হাবড়ার ফুলতলা এলাকার বাসিন্দা কারখানার শ্রমিক মানিক মাতব্বরের কথায়, “কাজকর্ম সব বন্ধ হয়ে গিয়েছে। সরকার আমাদের খাওয়ার ব্যবস্থা না করলে না খেয়ে থাকতে হবে।”