পরপর জ্বরে মৃত্যু, ক্ষোভ বাসিন্দাদের

শনিবার বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে ডেঙ্গিতে মারা গিয়েছেন সুমিত্রা সেন নামে এক মহিলা। তাঁর বাড়ি হাবড়ার ডহরথুবা এলাকায়। মৃত্যুর ঘটনার পর এলাকার বাসিন্দারা প্রশ্ন তুলেছেন, তাঁদের আর কত মৃত্যু দেখতে হবে? 

Advertisement

সীমান্ত মৈত্র

হাবড়া শেষ আপডেট: ০৫ অগস্ট ২০১৯ ০৬:৫৬
Share:

পরিদর্শন: হাবড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে সুজন চক্রবর্তী ও আব্দুল মান্নান। ছবি: সুজিত দুয়ারি

জ্বর-ডেঙ্গিতে পরপর মানুষের মৃত্যুর ঘটনায় ক্ষোভ বাড়ছে শহরবাসীর।

Advertisement

শনিবার বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে ডেঙ্গিতে মারা গিয়েছেন সুমিত্রা সেন নামে এক মহিলা। তাঁর বাড়ি হাবড়ার ডহরথুবা এলাকায়। মৃত্যুর ঘটনার পর এলাকার বাসিন্দারা প্রশ্ন তুলেছেন, তাঁদের আর কত মৃত্যু দেখতে হবে?

এর মধ্যে রবিবার হাবড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে এসে সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী ও কংগ্রেস নেতা আব্দুল মান্নান অভিযোগ তুলেছেন, হাবড়া হাসপাতালই মশা উৎপাদন কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। ডেঙ্গির প্রকোপ ছড়ানোর জন্য তাঁরা স্থানীয় বিধায়ক তথা খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের ভূমিকার সমালোচনা করেছেন। তাঁদের কথায়, ‘‘মন্ত্রী থেকে লাভটা কী, যদি না ডেঙ্গি প্রতিরোধ করা যায়!’’

Advertisement

এলাকাবাসীরা জানান, পুরসভা বা প্রশাসন মশা মারতে সক্রিয় ভূমিকা নিচ্ছে না। এক যুবকের কথায়, ‘‘পরপর মানুষের মৃত্যুর ঘটনার পরেও পুরসভার তরফে এখনও মশা মারার তেল স্প্রে করা হচ্ছে না। সপ্তাহে মাত্র একদিন দেওয়া হয়ে থাকতে পারে। আমরা চাই সপ্তাহে ৪-৫ দিন এই এলাকায় মশা মারার ব্যবস্থা করুক পুরসভা।’’

আতঙ্কিত শহরবাসীর অনেকেই এখন নিজেদের দিনের বেলায় গৃহবন্দি করে রাখছেন। ঘরে অনেকেই দিনের বেলা মশারি টাঙিয়ে রাখছেন। দূরে থাকা আত্মীয়-স্বজনেরা আতঙ্কিত হয়ে নিয়মিত পরিজনদের খোঁজ খবর নিচ্ছেন। এলাকায় আসছেন না বাইরের কেউ।

এক মহিলা বলছিলেন, ‘‘কর্মসূত্রে স্বামী বাইরের রাজ্যে থাকেন। তাঁকে এখন বাড়ি ফিরতে নিষেধ করেছি।’’ আত্মীয়-স্বজনেরা বেড়াতে আসার পরিকল্পনা বাতিল করছেন। এক যুবক বলেন, ‘‘মামা মামিদের বাড়িতে আসার কথা ছিল। ওঁরা আর এখানে আসার সাহস পাচ্ছেন না।’’ আতঙ্কিত এক পুলিশ কর্মী তো বলেই ফেললেন, ‘‘কয়েক মাস অন্যত্র বদলি হয়ে যেতে পারলে বেঁচে যেতাম।’’

পুরসভার তরফে হাসপাতাল চত্বরে ডেঙ্গি রোগীদের সাহায্য করার জন্য শিবির খোলা হয়েছে। ওই শিবিরকে কটাক্ষ করে মান্নান বলেন, ‘‘মানুষকে শিবিরের নামে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে। মানুষের কোনও কাজে লাগছে না।’’

সুজন বলেন, ‘‘রাজ্য সরকার ডেঙ্গির কথা অস্বীকার করে কার্যত চিকিৎসার দায়িত্বকে অস্বীকার করছে।’’ যদিও জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক জানিয়েছেন, রাজ্য সরকার নিজেদের ক্ষমতার বাইরে গিয়েও মানুষকে পরিষেবা দিচ্ছে। সুজন-মান্নানরা রাজনীতি করতে এসেছেন। মানুষকে সেবা করার ইচ্ছা থাকলে নিয়মিত এসে মানুষের পাশে দাঁড়ান। হাসপাতাল সুপার শঙ্করলাল ঘোষও দাবি করেছেন, হাসপাতাল চত্বরে কোথাও মশার লার্ভা নেই। পুরসভার তরফে ব্যক্তি মালিকানায় থাকা জমির মালিকদের ঝোপ জঙ্গল সাফাই করতে নোটিস দিয়েছেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement