মথুরাপুরের কয়াল পরিবারের জগদ্ধাত্রী প্রতিমা। ছবি: দিলীপ নস্কর
একটি পারিবারিক পুজো মানে হইচই, আনন্দ, আড্ডায় মেতে থাকা। সেখানে জমিদার বাড়ির পুজো মানে ইতিহাস, ঐতিহ্য। দূর দুরান্ত থেকে পরিবারের সব সদস্যের একত্রিত হওয়া ও এলাকার মানুষের সমাগম বাড়তি পাওনা। বহু পরিবারের ক্ষেত্রে দুর্গাপুজো সেই সুযোগ করে দেয়। তবে মথুরাপুরের কয়াল পরিবারের মানুষ জগদ্ধাত্রী পুজো ঘিরে আনন্দে মেতে ওঠেন। এ বার ১৬১তম বর্ষে পড়ল পুজো।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, পরিবারের কর্তা প্রয়াত জমিদার তারাপদ কয়াল স্বপ্নাদেশে মা জগদ্ধাত্রীর পুজো করার নির্দেশ পান। সেই থেকে বাড়িতে জগদ্ধাত্রী পুজো হয়ে আসছে। প্রায় পাঁচ পুরুষ ধরে চলা ওই পুজোয় একই কাঠামো ব্যবহার হচ্ছে। আগে ওই পুজোয় পাঁঠা বলির প্রচলন ছিল। মানবিক কারণে সেটি এখন বন্ধ আছে। নবমী ও দশমীতে দেবীর পুজো চলে। পুজোর উপাচারে থাকে বিভিন্ন ফল। রাতে লুচি ও নানা রকম ভাজা ভোগ হিসেবে নিবেদন করা হয়। দশমীর দিনে দধিকর্মা থাকে। মায়ের ভোগ পরিবারের সদস্য ও দর্শনার্থীদের দেওয়া হয়। প্রতিমা বিসর্জনের আগে বাড়ির মহিলারা বরণ ও সিঁদুরখেলায় মেতে ওঠেন। পুরুষ সদস্যদের পাশাপাশি বিসর্জনেও অংশ নেন বাড়ির মহিলারা।
এই পুজো ঘিরে গ্রামের ছেলেমেয়েদের নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। পুজোর সময় গ্রামের দুঃস্থ শিশুদের পাঠ্যপুস্তক বিলি করা হয়। ওই পরিবারের প্রবীণ সদস্য চিত্তরঞ্জন কয়াল বলেন, “আগে পুজোর জৌলুস আরও বেশি ছিল। গত কয়েক বছরে ধরে নানা কারণে তা কিছুটা হারিয়ে যাচ্ছে।’’