সরিষায় কিসান মান্ডিতে মাছ বাজার চালু হলেও বন্ধ সব্জি বাজার। —নিজস্ব চিত্র।
নীল-সাদা ঝাঁ চকচকে ভবনগুলি ফাঁকা পড়ে রয়েছে। মাস কয়েক আগে ঘটা করে উদ্বোধন করা হয়েছিল এই ভবনেরই। কিন্তু তৈরি হয়ে পড়ে থাকলেও এখনও চালু হল না সেই কিসান মান্ডি। ডায়মন্ড হারবার ২ ও মথুরাপুর ১ ব্লকের কিসান মান্ডি দু’টিরই এক অবস্থা!
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কৃষকদের পাশে দাঁড়াতে কৃষি বাজার তৈরির উদ্যোগ করেছিলেন। প্রত্যেক ব্লকে ব্লকে কিসান মান্ডি তৈরির কথা ঘোষণা হয়। কৃষকেরা তাদের সব্জি যাতে ফড়েদের খপ্পরে পড়ে অল্প দামে বিক্রি করতে বাধ্য না হন, সে জন্যই সরকারের এই পরিকল্পনা। তা ছাড়া, অতিরিক্ত সব্জি যাতে পচে না যায়, সে জন্য মান্ডিতে হিমঘরেরও ব্যবস্থা করা হয়েছে।
কৃষকদের অতি প্রয়োজনীয় এই সরকারি প্রকল্পের তবে এই হাল কেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার এই দুই ব্লকে?
ডায়মন্ড হারবারের মহকুমাশাসক শান্তনু বসু বলেন, ‘‘ডায়মন্ড হারবার কিসান মান্ডিতে মাছের বাজার রমরমিয়ে চলছে। সরিষাহাটের পাইকারি মাছের বাজারটি এখন কিসান বাজারে চলে এসেছে। দু’টি বাজারেই খুচরো সব্জি বিক্রেতাদের বসানোর চেষ্টা চলছে।’’
জাতীয় সড়কের পাশে চেওড়া মোড়ের কাছে কৃষি দফতরের প্রায় ১৫ বিঘা জমিতে বছরখানেক আগে ডায়মন্ড হারবারের কিসান মান্ডির ভবনটি তৈরি হয়। ২০১৫ সালে উদ্বোধন হয়। একই ভাবে মথুরাপুর ১ ব্লকে রেলগেটের কাছে প্রায় ২০ বিঘা জমির উপরে কৃষি বাজার তৈরি করা হয়েছিল। উদ্বোধনের দিন দু’টি কিসান মান্ডির জন্যই খুচরো বিক্রেতাদের আমন্ত্রণ করে আনা হয়েছিল।
প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ডায়মন্ড হারবারে কিসান মান্ডি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে প্রায় ৬ কোটি ১৫ লক্ষ টাকা। মথুরাপুরের বাজারটি তৈরি হয়েছে প্রায় সাড়ে ৬ কোটি টাকায়। কিন্তু এত কিছুর পরেও তা চালু করা যাচ্ছে না। ডায়মন্ড হারবারে সব্জি বাজার বসছে না। তবে মাস কয়েক আগে ২১টি অস্থায়ী শেড বানিয়ে মাছের পাইকারি বিক্রেতারা বাজারে বসছেন। কেনা-বেচাও চলছে। কিন্তু মথুরাপুরে তা-ও হচ্ছে না।
সব্জি ব্যবসায়ীদের দাবি, ডায়মন্ড হারবারের কিসান মান্ডিতে কয়েক দিন গিয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু কোনও খরিদ্দার মেলেনি। ওখানে এলাকার ছোট খরিদ্দারেরা যেতেও চাইছেন না। একই কথা শুনিয়েছেন মথুরাপুরের স্টেশন বাজারের কয়েকজন ব্যবসায়ী। তাঁদের দাবি, যে জায়গায় কিসান বাজারটি করা হয়েছে, তা অনেকটা পিছনের দিকে। যাতায়াত সুবিধাজনক নয়। সে জন্যই হয় তো খদ্দেররা আসছেন না। কয়েক দিন ব্যবসা চালানোর পরে বাধ্য হয়ে তাঁরা আবার স্টেশন বাজারেই ফিরে এসেছেন বলে জানালেন।
মথুরাপুর ১ ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে, ওখানে খুচরো ও পাইকারি বাজার চালানোর জন্য এলাকায় মাইকে প্রচার চালানো হচ্ছে। কৃষ্ণচন্দ্রপুর, ঘোড়াদল পাইকারি সব্জি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলা হয়েছে। কয়েক দিনের মধ্যেই সকলকে নিয়ে সভা করা হবে।