রুহুল আমিন ঢালি
আন্তর্জাতিক নারীপাচার চক্রের এক বড় পান্ডাকে বসিরহাটের সীমান্তবর্তী গ্রাম থেকে গ্রেফতার করল এনআইএ। ধৃতের কাছ থেকে কয়েকশো জাল আধার কার্ড, ভোটার কার্ড, বাংলাদেশি টাকা, মোবাইলের সিম এবং বেশ কিছু নথি বাজেয়াপ্ত হয়েছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে প্রায় পঁচিশ বছর ধরে নারী ও শিশুপাচারের অভিযোগে খোঁজা হচ্ছিল রুহুল আমিন ঢালিকে। তার সঙ্গে কোনও জঙ্গি সংগঠনের যোগাযোগও থাকতে পারে বলে অনুমান তদন্তকারীদের। বসিরহাটের এসডিপিও অভিজিৎ সিংহ মহাপাত্র বলেন, ‘‘শুক্রবার ভোরে হায়দরাবাদ থেকে এনআইয়ের একটি দল বসিরহাট থানার পুলিশ যৌথ অভিযান চালিয়ে সোলাদানার হরিহরপুর গ্রাম থেকে রুহুলকে গ্রেফতার করে।’’ তিনি জানান, ধৃতের নামে একাধিক ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট পাওয়া গিয়েছে। একটি অ্যাকাউন্টে ৪০ লক্ষ টাকা মিলেছে। এনআইএ-র পক্ষে বসিরহাটের এসিজেএমের আদালতের বিচারকের কাছ থেকে ৫ দিনের ট্র্যানজিট রিমান্ডে রুহুলকে হায়দরাবাদে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বসিরহাটের সীমান্তবর্তী সোলাদানার পাশ দিয়ে বয়ে চলেছে ইছামতী নদী। অন্য পারে বাংলাদেশের সাতক্ষিরার হাড়োদ্দা গ্রাম। সোলাদানার হরিহরপুর গ্রামে বেশ কয়েক বছর ধরে থাকে রুহুল। তার বিরুদ্ধে দেশের একাধিক থানায় নারীপাচারের ভুরি ভুরি অভিযোগ থাকলেও এত দিন পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে কারবার চালিয়ে যাচ্ছিল। সম্প্রতি হায়দরাবাদে ৫টি মেয়ে এবং ৩টি ছেলেকে উদ্ধারের পরে এনআইএ-র অফিসারেরা রুহুলের ঠিকানা জানতে পারেন। মোবাইলের টাওয়ার লোকেশন দেখে খোঁজ মেলে। শুক্রবার ভোরে এনআইএ-র হায়দরাবাদ শাখার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এমডি সাজিত খানের নেতৃত্বে পাঁচ জনের একটি দল বসিরহাট থানায় আসে। আইসি প্রেমাশিস চট্টরাজ-সহ পুলিশের একটি দল যৌথ ভাবে হরিহরপুর গ্রামে পৌঁছয়। গ্রেফতার করা হয় বছর পঞ্চান্নর রুহুলকে।
সাজিত খান বলেন, ‘‘এনআইএ-র দু’টি মামলায় রুহুল এত দিন ফেরার ছিল। এ ছাড়াও এখনও পর্যন্ত হায়দরাবাদে ১০-১২টি, কেরল, তামিলনাড়ু, মহারাষ্ট্র, গুজরার-সহ একাধিক রাজ্যে বেশ কয়েকটি নারী ও শিশু পাচারের অভিযোগে রুহুলকে পুলিশ খুঁজছিল।’’
প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, বাংলাদেশ সীমান্ত পেরিয়ে দুষ্কৃতীরা মহিলা এবং শিশুদের নিয়ে আসত রুহুলের বাড়িতে। সেখান থেকে তাদের জাল আধার কার্ড এবং ভোটার কার্ড সঙ্গে দিয়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পাঠিয়ে দেওয়া হত।