—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
নাগাড়ে এক ঘণ্টার বৃষ্টি। তার মধ্যেই শালখুঁটি দিয়ে চেষ্টা চলছিল পাড়ে বাঁধ দেওয়ার। তবু ধস নেমে গঙ্গায় তলিয়ে গেল একটি বাড়ির অংশ। পাশাপাশি, আরও দু’টি বাড়িতে ফাটল ধরেছে। ঘটনাস্থল, ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলের গারুলিয়ার কাঙালি ঘাট।
কাঙালি ঘাটের এই চিত্র অবশ্য নতুন নয়। এখানে গঙ্গা খানিকটা বাঁক নেওয়ায় নদীর একদম ধারে থাকা শতাধিক বছরের পুরনো বাড়িগুলি বিপজ্জনক অবস্থায় আছে বলে বছর পাঁচেক আগেই চিহ্নিত করেছিল প্রশাসন। আয়লার সময়েই কাঙালি ঘাট, বিচালি ঘাট-সহ গঙ্গায় যেখানে যেখানে বাঁক আছে, তার কিছু অংশে ধস লক্ষ করা গিয়েছিল। ২০১৯ সালে বানের জেরে কাঙালি ঘাট সংলগ্ন বসতি এলাকায় দুর্বল নদী বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ভাঙতে থাকা বাঁধের ধারের পুরনো বাড়ির বাসিন্দারা গবাদি পশু নিয়ে কোথায় যাবেন, তা ভেবেই দিশাহারা অবস্থা হয় তাঁদের। ২০২১-এর অগস্টে বাঁধ-সহ সমগ্র এলাকা পরিদর্শন করে সেচমন্ত্রী পার্থ ভৌমিকের নেতৃত্বাধীন প্রতিনিধিদল। এর পরেই বাঁধ মেরামতিতে গতি আসে। যদিও বানের জেরে ক্ষতিগ্রস্ত হতে থাকে সংস্কার হওয়া বাঁধও।
সেচ দফতর একটি খসড়া তৈরি করে টাকাও অনুমোদন করে। প্রশাসন জানিয়েছে, আগামী নভেম্বরেই পাকাপোক্ত ভাবে বাঁধ নির্মাণ শুরু হবে। ইতিমধ্যে অস্থায়ী বাঁধেও ধস নামে। সেটির মেরামতি চলছিল। সোমবার বৃষ্টি চলাকালীন চন্দন চৌধুরী নামে এক বাসিন্দার বাড়ির অংশ সেখানেই তলিয়ে যায়। অবশ্য জিনিসপত্র সমেত পরিবারটিকে সরিয়ে অন্যত্র রাখার ব্যবস্থা হয়েছিল। স্থানীয়দের দাবি, শালখুঁটি মাটিতে বসানোর সময়ে যে কম্পন হচ্ছে, তাতে পুরনো মাটি, চুন, সুরকির দেওয়ালে ফাটল দেখা দিচ্ছে। চন্দন বলেন, ‘‘নভেম্বর আসতে আসতে বাকি বাড়িগুলিও না তলিয়ে যায়!’’
সেচমন্ত্রী পার্থ ভৌমিক বলেন, ‘‘নদীর ধর্মই তার গতিপথ পরিবর্তন করা। কাঙালি ঘাটের উপরে সেচ বিভাগ নজর রাখছে সব সময়ে। গঙ্গার ধার বরাবর যেখানে যেখানে ধস নামছে, সেই সব জায়গায় যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে বাঁধ দেওয়ার কাজ চলছে।’’